সীমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ
কয়েকশো বস্তা মাছের খাবার বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামীর বিরুদ্ধে। ওই পঞ্চায়েত সদস্যা তৃণমূল নেত্রী। এই ঘটনায় আটক তিন জন।লক ডাউনের সময় বিভিন্ন পুকুরে মাছ চাষের জন্য দেওয়া হয়েছিল মাছের খাবার।সরকারিভাবে পাঠানো হয়েছিল কয়েক শ’বস্তা মাছের খাবার। কিন্তু সেই খাবার চুরি করে বেআইনিভাবে বিক্রির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক সংখ্যালঘু নেতার বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার দিঘীরপাড় এলাকায়। অভিযোগ, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আতিয়ার রহমান বেআইনিভাবে চুরি করে বিক্রি করছিল। সঙ্গে ছিলেন ওই অভিযুক্ত ব্যক্তির পঞ্চায়েত সদস্য স্ত্রী আনজুরা বিবিও । অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য স্ত্রী ও এই সংখ্যালঘু নেতা ব্লকের সমস্ত মাছের খাবার নিজেদের ক্ষমতা দেখিয়ে চুরি করে বিক্রি করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ এবার কালিয়াগঞ্জ, করনদিঘিতেও করোনা আক্রান্তের হদিশ
ক্যানিংয়ের এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার অনুগামী বলে তিনি পরিচিত । এর আগেও বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এই নেতার বিরুদ্ধে। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া গেছে । কিন্তু এবার তিনি পড়েন গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন বাজারে দোকানে চুরি করে বিক্রি করছিল এই মাছের খাওয়ার। প্রতি বস্তা ২২০০ টাকা দরে বিক্রি করার সময় গ্রামবাসীরা তাকে বাধা দেয় এবং হাতেনাতে ধরে ফেলে। ৫০ কেজি ওজনের এই বস্তাগুলি মৎস্য চাষীদের দেওয়ার জন্য সরকার নির্দেশ দিলেও সেগুলো মূলত নেতারাই বিক্রি করে দিচ্ছেন অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
আরও পড়ুনঃ তেলেনিপাড়া ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানি ছড়ানো ফেক পোস্ট প্রকাশ করল পুলিশ
তবে ক্যানিংয়ের মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকের নজর ছাড়া কীকরে কয়েক শো বস্তা খাবার বিক্রি হচ্ছে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। ক্যানিং ব্লকের মৎস্য আধিকারিক অরুণ দেব বলেন, ‘খাবারগুলো চুরি করে বিক্রি করা হচ্ছিল। ওগুলো সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে পাওয়া মাছের খাবার। স্থানীয় মানুষজন এদিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে বেধড়ক মারধর করে তুলে দেয় পুলিশের হাতে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নেতাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত।’
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী বাবলু শেখ রাজ্জাক তরফদার বলেন,গরিব মৎস্যজীবীদের দেওয়ার জন্য যে খাবার সরকারিভাবে দেওয়া হয়েছিল তা ২২০০ টাকা করে প্রতিবস্তা বিক্রি করছিলেন ওই নেতা। আমরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলি। এবং পুলিশের হাতে তুলে দিই।’
অন্যদিকে চুরি করে মাছের খাবার বিক্রি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা আতিয়ার রহমান সরদার। তিনি বলেন, ‘চুরি করে তিনি মাছের খাবার বিক্রি করেননি। এলাকার মানুষ মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’
স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ওই তৃণমূল নেতা সহ আরো দুই অভিযুক্তকে আটক করে ক্যানিং থানার পুলিশ। সামাজিক দূরত্ব না মেনে কয়েক হাজার মানুষ এদিন ওই তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে বিক্ষোভের পর তারপর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584