উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
বীজপুর-হালিশহর বিজেপি কর্মীকে খুনের ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় হালিশহরে বিজেপি বুথ সভাপতি সৈকত ভাওয়াল খুনের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করল বীজপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম সোমনাথ গাঙ্গুলি, অভিজিৎ দাস ও বাবাই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা প্রত্যেকেই হালিশহরের বাসিন্দা। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের সমর্থক বলে জানাযায়। প্রসঙ্গত, খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে মোট ৪ জনকে আটক করে বীজপুর থানার পুলিশ। জেরায় অসঙ্গতি মেলায় পরে তাদের মধ্যে থেকেই ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।ওদিকে খুনের ঘটনায় এদিন সকাল থেকেই ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু বাবার
বীজপুর থানায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিজেপি কর্মীরা। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও বেধে যায়। থানার পাঁচিলে উঠে উত্তেজিত কর্মী, সমর্থকদের শান্ত করার, সামলানোর চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে শুভ্রাংশু রায়কে। খুনের ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে, খুনের ঘটনায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এদিন বলেন, “আমরা যতদূর শুনেছি, এটা নন পলিটিক্যাল কোনও একটা গন্ডগোলের কারণে হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত করে দেখুক কী হয়।”
হালিশহর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বুথ সভাপতি ছিলেন সৈকত ভাওয়াল। গতকাল রাতে দলের গৃহসম্পর্ক অভিযান চলাকালীন দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন তিনি। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা বাঁশের মাথায় পেরেক লাগিয়ে এনেছিল। সঙ্গে ছিল হকি স্টিক ও লোহার রড। প্রায় ৬ টি বাইকে করে এসেছিল ১০ থেকে ১২ জন দুষ্কৃতী। কাজ হাসিল করেই বাইকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীদল।
আরও পড়ুনঃ পিনকন মামলায় মৌসুমি রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সহ আর্থিক জরিমানার নির্দেশ তমলুক আদালতের
খুনের পরই একের পর এক বিজেপি নেতা শাসকদলকে কড়া আক্রমণ করেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভুল পথে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে। বাংলার মানুষ বেশিদিন এসব বরদাস্ত করবে না।” বিজেপি নেতা শুভ্রাংশু রায় হুঁশিয়ারি দেন, “‘ঘটনার বদলা হবে।” সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় টুইট করেন, “পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র মৃত।”অন্যদিকে নিহত বিজেপি নেতা সৈকত ভাওয়ালের দেহ হালিশহরের বাড়ি পৌঁছতেই উঠল কান্নার রোল। কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিহত বিজেপি বুথ সভাপতির পরিবারের লোকেরা।
নিহত সৈকত ভাওয়ালের দেহ আঁকড়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিজেপি নেতার স্ত্রী, মা। এদিন সকাল থেকেই গোটা এলাকা ছিল থমথমে। বিকেল ৪টের কিছু পর দেহ বাড়ি পৌঁছতেই শোকের বাঁধ ভাঙল। দেহ পৌঁছানোর কিছু আগেই নিহত বিজেপি নেতার বাড়ি এসে উপস্থিত হন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। তার উপস্থিতিতেই দেহ পৌঁছয় বাড়িতে। দেহ পৌঁছতেই নিহত নেতার নামে ওঠে স্লোগান।
আরও পড়ুনঃ হালিশহরে বিজেপি কর্মী খুন, জখম ছয়
ইতিমধ্যেই খুনের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের এদিন ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এপ্রসঙ্গে অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, পুলিশ ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে চায়নি। পুলিশ শাসকদলের হয়ে কাজ করছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584