শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা আবহে এমনিতেই সমস্ত কিছু কাটছাঁট করে পুজো করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন তা সত্বেও একশ্রেণীর মানুষের চলে জুলুমবাজি করেই। চলতি বছরে করোনা আবহের মধ্যেও হরিদেবপুরে অজয় কুমার মিশ্রের কাছে ১০ হাজার টাকা কালীপুজোর জন্য দাবি করেছিল ক্লাব সদস্যরা।

কিন্তু তিনি এত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রকাশ্য রাস্তায় তার পকেট থেকে গোটা মাসের বেতন ১৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিল ক্লাব সদস্যরা, এমনটাই অভিযোগ। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তিন ক্লাব সদস্যকে।
বুধবার ঘটনা ঘটার পরে বৃহস্পতিবারই ক্ষতিগ্রস্ত যুবক হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তবে রবিবার সকালে এই ঘটনা সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে নেয় পুলিশ।
অজয়কুমার মিশ্র নামে ওই যুবক জানিয়েছেন, তিনি পেশায় গাড়িচালক এবং হরিদেবপুর থানার নেপালগঞ্জের জুলপিয়ার বাসিন্দা। ঘটনার সময়ে তিনি সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পকেটে অক্টোবর মাসের বেতন বাবদ ১৮ হাজার ১৮০ টাকা ছিল।
আরও পড়ুনঃ জল্পনার মাঝেই মুর্শিদাবাদে স্মরণসভায় এসে অনুগামীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুভেন্দুর
হরিদেবপুরের হসপিটাল রোডে ৪ নভেম্বর কালীপুজোর চাঁদার নাম করে স্থানীয় একটি ক্লাবের কয়েক জন সদস্য তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি জানান অত টাকা তিনি দিতে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘‘দেড়শো- দু’শো টাকা দিতে চেয়েছিলাম। সেই টাকা বার করতে গেলে ওই যুবকেরা আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। আমি ২০০ টাকা বার করার সময়ে ওরা বেতনের টাকা দেখতে পায়।”
আরও পড়ুনঃ ভুবনেশ্বরের জেলে মৃত্যু বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা আইকোর কর্তা অনুকূল মাইতির
অভিযোগ, এর পরেই তাঁর মাথার পিছনে কোনও কিছু দিয়ে মারা হয়। তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে সবাই মিলে তাঁকে মারতে শুরু করে। অজয়ের পকেট থেকে তাঁর বেতনের পুরো টাকাটাই নিয়ে নেওয়া হয়। যদিও ওই ঘটনার পিছনে ক্লাবের পুরনো রাগ রয়েছে বলে অজয়ের অভিযোগ।
২০১৭ সালে তিনি যখন বাড়ি করছিলেন, তখন ওই ক্লাবের ছেলেদের থেকেই নির্মাণসামগ্রী, শ্রমিক নিতে হয়েছিল তাঁকে। শুধু তা-ই নয়, সেই সময়েও তাঁর থেকে ১০ হাজার টাকা ক্লাবের তরফে চাওয়া হয়। অজয়ের কথায়, ‘‘৪ হাজার দিয়ে বাকি টাকা ধীরে ধীরে দেব বলে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও প্রায়ই আমাকে রাস্তায় আটকে সেই টাকা আদায়ের চেষ্টা করত।“
বুধবার তারা সেই ঘটনারই প্রতিশোধ নিয়েছে বলে দাবি অজয়ের। তাঁর কথায়, ‘‘মার্চের শেষ থেকে তিন মাস পুরো বসেছিলাম। কোনও বেতন মেলেনি। লকডাউন ওঠার পরে কাজ শুরু হয়েছে সবে। এখন কী করব জানি না।“
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584