শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউনে রুজি রোজগারহীন হয়ে সপরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার সোনালি পার্কের বাসিন্দা এক বৃদ্ধা একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধা। শুক্রবার ভোর সকালে উইপোকার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন বৃদ্ধা প্রণতি সিং সোহেল (৬৫), বড় ছেলে দেবেন্দর সিং সোহেল (৪৫) এবং প্রতিবন্ধী ছোট ছেলে অতীন্দ্র সিং সোহেল। ফোনে খবর পেয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন এক আত্মীয়। কিন্তু পেট থেকে বিষ পাম্প দিয়ে বার করার পরেও মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় মা ও বড় ছেলের।
রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার ১৭০, সোনালি পার্কের একটি তিনতলা আবাসনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধা, সঙ্গে দুই ছেলে। ছোট ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। বড় ছেলে হাইকোর্টে ক্লার্কের কাজ করতেন। সেই টাকা দিয়ে বাড়িভাড়া থেকে ভাইয়ের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ চলত।
আরও পড়ুনঃ পুরসভা-স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েও হেনস্থা, বাড়ির ফ্রিজে ২ দিন পড়ে রইল করোনা রোগীর লাশ
কিন্তু লকডাউনে আদালত বন্ধ থাকায় সেই রোজগার হারিয়েছিলেন তিনি। ছোট ছেলে অতীন্দ্র আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত। প্রণতিদেবীর নিজেরও বাঁ পায়ের হাড় ভাঙা। বহু বছর ধরে সেইভাবেই আছেন তিনি। তাই নিয়েই কাজ করে সংসার চালাতেন। বাঁশদ্রোণী বাজারে সিটি গোল্ডের চুড়ি, হার ইত্যাদি ফেরি করতেন। তা থেকে যা আয় হত, তাই দিয়েই কোনমতে সংসার চালাচ্ছিলেন প্রণতিদেবী। কিন্তু লকডাউনে তাও বন্ধ হয়ে যায়। তাই সংসার চালাতে ১২ বছর আগে মৃত স্বামীর সঞ্চয়েও হাত পড়েছিল।
আরও পড়ুনঃ নিউমার্কেটের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ঘুলঘুলি ভেঙে ঢুকে ভল্ট কেটে লুঠের চেষ্টা দুষ্কৃতীদের
ধীরে ধীরে লকডাউন গলায় ফাঁস হয়ে বসতে থাকে ওই পরিবারের। দিনেদিনে অভাব প্রকট হতে থাকে। তিনজনেই স্থির করেন, আত্মহত্যা করবেন। শুক্রবার সকালে সেই পরিকল্পনা মতো এক আত্মীয়কে খবর দিয়ে তারা উইপোকা মারার বিষ খেয়ে নেন। তারপর তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চারদিন যমে-মানুষে টানাটানি করার পর হার মানেন প্রণতিদেবী ও তাঁর বড় ছেলে দেবেন্দর।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584