উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
শনিবার শুভেন্দু অধিকারী-সহ তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া তেতাল্লিশ জন নেতাদের বিজেপি হেস্টিংস অফিসে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা। কিন্তু তাঁরা পৌঁছানোর আগেই হেস্টিংসে বিজেপি-র প্রধান নির্বাচনী দফতরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করল তৃণমূল।
যার পাল্টা মাঠে নামল বিজেপি-ও। শনিবার দুপুরে দু’পক্ষের বিক্ষোভ এবং পাল্টা বিক্ষোভে এলাকায় বচসা বেঁধে যায়। প্রাথমিক ভাবে অবস্থা সামলাতে চেষ্টা করেও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পারেনি হেস্টিংস থানার পুলিশ। কারণ, এমন বিক্ষোভ যে হতে পারে, তার আগাম কোনও খবর ছিল না। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি বেধে যায়।
পরে পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। বাড়তি পুলিশও মোতায়েন করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া সাংসদ সুনীল মণ্ডল ওই দফতরে আসার পথে। সকাল থেকেই বিজেপি দফতরের অদূরে মঞ্চ বেঁধে, মাইক বাজিয়ে তৃণমূলের একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল। সুনীলের গাড়ি তার কাছাকাছি পৌঁছতেই কিছু তৃণমূলকর্মী তাঁর গাড়িটি আটকে দেন।
সুনীলের গাড়ি ঘিরে ধরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সরাতে চেষ্টা করলেও সংখ্যা কম থাকায় তারা সেটা করতে পাড়েনি। ততক্ষণে অকুস্থলে এসে পৌঁছে যান বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরাও। পরে বাড়তি পুলিশ এনে সুনীলের গাড়ি ঘেরাওমুক্ত করা হয়। তিনি দফতরে প্রবেশ করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ জঙ্গীপুরে বেহাল নিকাশী ব্যবস্থা, অভিযোগ স্থানীয়দের
অভিযোগ, বিজেপির অফিস চত্বরের সামনেই আজ সকালে হঠাৎ করে পথসভার জন্য মঞ্চ বাঁধে তৃণমূল। বিজেপি অফিসে ঢোকার রাস্তার মুখ প্রায় আটকে দিয়ে পথসভার জন্য তৃণমূল মঞ্চ বেঁধেছে বলে অভিযোগ। একইসঙ্গে গোটা হেস্টিংস মোড় ছয়লাপ তৃণমূলের পতাকায়। এমনকি বিজেপি অফিসের একেবারে সামনে মাইকও বেঁধেছে তৃণমূল। যাতে তারস্বরে মা-মাটি-মানুষের গান বাজছে।
আরও পড়ুনঃ ভোটের দিন ঘোষণার আগেই মীমের প্রার্থী’র নাম প্রকাশ জঙ্গিপুরে
ওদিকে বিজেপি কর্মীরাও পাল্টা জমায়েত করেছে অফিসের সামনে। বৈঠকের আগেই দু-পক্ষের বচসাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উত্তেজনা।এই ঘটনায় বিজেপি নেতৃত্ব পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। পুলিশি মদতেই এভাবে অফিসের সামনে মঞ্চ বাঁধা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের। তথাগত রায় বলেন, “তৃণমূল ভয় পেয়েছে। তাই এসব ভাঁড়ামো করছে। হাস্যকর। এভাবে ভোটে জেতা যায় না।” জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “পুলিশ ক্রীতদাস ছিল, দলদাসে পরিণত হয়েছে।”
অর্জুন সিং বলেন, “পুলিশই এসব করাচ্ছে। মমতা ব্যানার্জি গণতান্ত্রিকভাবে মানুষকে থাকতে দেবে না। রাজনীতি করতে দেবে না।” পাশাপাশি লকেট চ্যাটার্জি কটাক্ষ করেন,”অসভ্যয়তামো করছে। গুন্ডা, বদমাইশ, চোর, ডাকাত ছাড়া ওদের দলে আর কিছু নেই।”
আরও পড়ুনঃ চৌপথিতে চায়ে চুমুক দিয়ে জনসভা সারলেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী
অন্যদিকে পথসভা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তৃণমূলের এক কর্মীর বক্তব্য, “কৃষি আইন ও গ্যাসের দাম বাড়ার জন্য আজকের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।” যদিও বিজেপি সাংসদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। তাঁর কথায়, “বড় কোনও দাদা বলতে পারবেন।”
জানা গিয়েছে, আগে থেকে এই পথসভার কোনও ঘোষণা ছিল না। সকালেই হঠাৎ করে মঞ্চ বাঁধা হয়। স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এই পথসভা হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারী সহ অনুগামীদের সামনে চ্যালেঞ্জ তুলে ধরতেই তৃণমূলের এই সভা কর্মসূচি বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584