নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
বিপুল জনসমর্থন নিয়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর, ৫ মে তৃণমূল ভবনের সাংগঠনিক বৈঠকে দলে এক ব্যক্তি, এক পদ চালুর কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এরপর সোমবার প্রকাশিত হল তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের তালিকা। দেখা গেল সেই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিতেই সিলমোহর পড়েছে।
যেসব জেলা সভাপতি মন্ত্রীত্বের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের সরিয়ে আনা হয়েছে নতুন মুখ। শুধু তাই নয়, সংসদে বাড়তি দায়িত্ব থাকায় বেশকিছু সাংসদকেও সরানো হয়েছে জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলাকে চারটি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে চারজন নতুন মুখকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে হাওড়া জেলা (গ্রামীণ)-এর সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়কে। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে প্রাণীসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে। সেচমন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে ছিলেন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সংগঠনকে কাঁথি ও তমলুকের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এবং দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অন্য দুজনকে।
আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদ জেলায় দুটি জেলা সভাপতি ঘোষণা তৃণমূলের
মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান। তাঁকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলে চেয়ারম্যান পদে ছিলেন মন্ত্রী গোলাম রাব্বানি ও বিপ্লব মিত্র। দু’জনকেই এবারের মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে। তাই দলের সাংগঠনিক পদে রাখা হয়নি তাঁদের।পশ্চিম বর্ধমান জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক। তাঁকেও আর জেলার সংগঠনে রাখা হয়নি। সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়কে হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন, তাঁকেও রাখা হয়নি সাংগঠনিক পদে।
আরও পড়ুনঃ তালিবানদের দখলের পর আতঙ্কে দেশ ছাড়ার হিড়িক বিমানবন্দরে, মৃত একাধিক
তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি । তাঁকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে সভাপতি করা হয়েছে বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়কে। নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব ভোটে হেরে যাওয়ার পরে তাঁকে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে জেলা সংগঠনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে করা হয়েছে রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তীর ক্ষেত্রেও একই অবস্থান নিয়েছে দল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে সাংগঠনিকভাবে দু‘ভাগ করা হয়েছে।
ডায়মন্ডহারবার ও যাদবপুর লোকসভা মিলিয়ে গঠিত জেলার দায়িত্ব দেওয়া হলো শুভাশিস চক্রবর্তীকে আর সুন্দরবন নামে আলাদা সাংগঠনিক জেলা গঠন করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদারকে। পুরুলিয়া জেলার সভাপতি পদে গুরুপদ টুডুর বদলে আনা হলো সৌমেন বেলথোরিয়া-কে। পুরুলিয়া জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদে ছিলেন সুশান্ত মাহাতো, তাঁর পরিবর্তে এলেন মেঘদূত মাহাতো।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584