তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত নিউ আলিপুর

0
73

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

লকডাউনের মধ্যেই অব্যহত শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল। এবার খোদ কলকাতায়, বলতে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রাক্তন সংসদীয় কেন্দ্র দক্ষিণ কলকাতায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুর এলাকা। তৃণমূল নেতার অনুগামীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি বাইক ও গাড়িতে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দুপক্ষের বেশ কয়েকজন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দীর্ঘক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

New Alipor Police station | newsfront.co
উত্তপ্ত। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারীরা সকলেই মাঝেরহাট কলোনির বাসিন্দা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ তৃণমূলের শোভনদেব গোষ্ঠীর এক সদস্য মাঝেরহাট কলোনিতে তৃণমূল নেত্রী জুঁই বিশ্বাসের গোষ্ঠীর এক মহিলাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তার পালটা শোভনদেব গোষ্ঠীর ওই সদস্যের মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেন জুঁই ও স্বরূপ বিশ্বাসের গোষ্ঠীর লোকেরা। এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দুপক্ষের ঝামেলা চলে।

broken car | newsfront.co
সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত। নিজস্ব চিত্র

এরপর শোভনদেব গোষ্ঠীর লোকেরা নিউ আলিপুর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে থানার কাছেই জুঁই বিশ্বাসের গোষ্ঠীর লোকেরা গাড়ি করে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। ব্যাপক মারধর করা হয় শোভনদেবের লোকজনদের। ঘটনায় দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে রাতে থানায় অভিযোগ জানাতে যায়। কিন্তু পুলিশের তরফে কারও অভিযোগ গ্রহণ করেনি। শোভনদেব গোষ্ঠীর দাবি, আহত অবস্থায় তাদের গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের নামে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ চালাতে চাইছে রেলঃ মুখ্যমন্ত্রী

তাদের পালটা অভিযোগ, ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জুই বিশ্বাস ছিলেন হামলার নেতৃত্বে। তাদের সাহায্য করেন স্বরূপ বিশ্বাসের লোকজনও। জানা গিয়েছে, সে সময় কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তার অনুগামীরা। মারধরে গুরুতর জখম হয়েছেন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ নীল মালাকার ও তানিয়া পাল। তাঁরা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রাতেই নিউ আলিপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় স্বরূপ বিশ্বাস ও ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জুই বিশ্বাসের অনুগামীরা। শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দল ও সংঘর্ষে চরম উত্তেজনা মাঝেরহাট কলোনি ও নিউ আলিপুর থানার সামনে। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দুই গোষ্ঠীর তরফ থেকেই অভিযোগ করা হয়েছে, প্রথম থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ। এলাকা শনিবারও থমথমে। তবে পুরো বিষয় নিয়ে মন্ত্রী ও বিধায়কের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি কলকাতায় তৃণমূলের কোন্দল একাধিকবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কলকাতার মুখ্য প্রশাসক তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানিকতলার বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা রাজ্যের আরেক মন্ত্রী সাধন পান্ডে। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আবার বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক বৈঠক করেছেন বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দলের মন্ত্রী বিধায়কদেরই শৃঙ্খলার এই হাল, তাদের নিচুতলার কর্মীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here