শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে আগেই দুর্নাম ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের । এবার সরাসরি অপরাধীদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুললেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, গরু পাচার এবং কয়লা পাচার দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের পক্ষে কথা বলছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
অপরাধীদের গ্রেফতার করায় তার বিরোধিতা করে ট্যুইট করছেন তিনি৷ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করারও দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷এ দিন রাজ্যপালকে নিশানা করে তৃণমূল ভবনে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গোবিন্দ আগরওয়াল এবং সুদীপ্ত রায় চৌধুরী নামে দুর্নীতি ও মানুষ এবং গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত দুই অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করছেন রাজ্যপাল৷ বার বার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন তিনি৷
পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। একজন রাজ্যপালের কাছে এটা আশা করা যায় না।কল্যাণের আরও দাবি, গোবিন্দ আগরওয়াল এবং নীরজ সিং নামে এক আইআরএস অফিসারের বিরুদ্ধে ইডি প্রথম মামলা দায়ের করে৷ পিএমএলএ অ্যাক্টে অভিযুক্তদের ৩.৮৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে৷ এর পর ইডি-র থেকে তদন্তের কাগজপত্র সংগ্রহ করে আরও তদন্ত করে কলকাতা পুলিশ৷ ২১ নভেম্বর গোবিন্দ আগরওয়ালকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ৷
আরও পড়ুনঃ ভাইপোর সম্পত্তি কত বেড়েছে, তার হিসেব কোথায়! উত্তর চাইলেন সুজন
অন্যান্য আরও চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের নামও তদন্তে উঠে আসে৷ এই তদন্তেই সুদীপ্ত রায় চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সিবিআই-এর কাছ থেকে তথ্য পায় কলকাতা পুলিশ৷ তাকেও গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ৷ এই সুদীপ্ত রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইডি বিধাননগর পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছিল বলে দাবি করেছেন তৃণমূল সাংসদ৷
তিনি বলেন, ইডি তদন্তে জানা গিয়েছিল, এই সুদীপ্ত রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে রোজভ্যালির এক কর্মীর থেকে ২ কোটি টাকা নিয়েছিলেন৷ এই ব্যক্তি মানুষ ও গরু পাচার এবং তোলাবাজির বড়সড় চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ করেন কল্যাণ৷
তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র অভিযোগের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করেছে কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর পুলিশ৷ এমন কি, এই সুদীপ্ত রায় চৌধুরী ইডি-র ভুয়ো তথ্য দেখিয়েও টাকা তুলত বলে অভিযোগ কল্যাণের৷ তাঁর অভিযোগ, গোবিন্দ আগরওয়াল এবং সুদীপ্ত রায় চৌধুরীদেগ্রেফতারের বিরোধিতা করে ২২ এবং ২৫ নভেম্বর দু’টি ট্যুইট করেছেন৷
আরও পড়ুনঃ ২৬ শের ধর্মঘটে শামিল এবার গৃহ পরিচারিকারাও
কল্যাণ বলেন, ‘ইডি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য কেন বাধা দিচ্ছেন রাজ্যপাল? নাকি সব কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করে নিজেদের ত্রুটিগুলো রাজ্যে ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা? রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপি-র এবং পশ্চিমবঙ্গের অনেক ক্রিমিনালের সরাসরি যোগাযোগ আছে৷ বার বার তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করছেন৷’
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘কোনও ব্যক্তি যদি ফৌজদারি তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন বা অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ এবং ১৮৯ ধারায় মামলা শুরু করা যায়৷’ এই দুই ধারার উল্লেখ করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধেই তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা শুরু করার জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছেন কল্যাণ৷ তাঁর দাবি, পুলিশ আধিকারিকদের যেভাবে হুমকি দিচ্ছেন রাজ্যপাল, তাও অপরাধের সামিল৷
আরও পড়ুনঃ প্রাথমিকে নিয়োগে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়া মাত্রই চ্যালেঞ্জ করে মামলা হাইকোর্টে
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধারাতেও মামলা করার দাবি জানিয়েছেন কল্যাণ৷ তাঁর অভিযোগ, ট্যুইট করে কলকাতা এবং বিধাননগর পুলিশকে অকেজো করার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল৷ পুলিশকে হুমকিও দিচ্ছেন তিনি৷ বাইরে জনসাধারণের জন্য শপথ প্রাপ্ত বলে ভিতরে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করছেন।
এসব কাজ কিন্তু তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না৷ প্রয়োজন হলে আমি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পর্দাফাঁস করব।” যদিও কল্যাণের এই বিস্ফোরক সাংবাদিক সম্মেলনের কোন প্রত্যুত্তর” উত্তর উত্তর দেননি রাজ্যপাল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584