মেধা তালিকার বীরভূমের দুই কৃতির স্বপ্ন বিজ্ঞানী ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হওয়ার

0
150

পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ বীরভূমের রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে এবার দুই ছাত্র যুগ্মভাবে রাজ্যে দশম হয়েছে। তারা হল সায়ন কর্মকার ও মহম্মদ চন্দন আলি। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮১। একজন বিজ্ঞানী হতে চাই তো অন্যজন মারণ রোগ ক্যান্সার নিয়ে রিসার্চ করতে চাই। সায়ন কর্মকারের বিষয় ভিত্তিক নম্বর বাংলায় ৯৪, ইংরেজি ৯৮, কেমিস্ট্রি ৯৫, গণিতে ৯৯, ফিজিক্সে ৮২ ও বায়োলজিতে ৯৫। আর চন্দনের বিষয় ভিত্তিক নম্বর বাংলায় ৯৮, ইংরেজিতে ৯৬, কেমিষ্ট্রিতে ৯৬, গণিতে ৯৯, ফিজিক্সে ৮১ ও বায়োলজিতে ৯৬।

নিজস্ব চিত্র

সায়ন কর্মকারের বাড়ি রামপুরহাট পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিসাড়া মাঠপাড়া। বাবা তারকনাথ কর্মকার রামপুরহাটের হাটতলায় ছোট্ট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সোনা রুপোর দোকান চালান। টিনের ছাউনির বাড়িতে কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করে মাধ্যমিকে সে ৬৬১ নম্বর পেয়েছিল। কিন্তু সেই ফল তার কাছে আশানরুপ ছিল না। তার ফলাফলে মর্মাহত হয়েছিলেন তার মা বৈশাখী কর্মকার। তাই একাদশ শ্রেণীতে ছেলেকে ভর্তি করার পর টিভির কেবল কানেকশন কেটে দেন তিনি। সেই সঙ্গে ছেলেকে সঙ্গ দিতে সব সময় তার ছায়াসঙ্গী হয়ে থেকেছেন। তাঁর পরিশ্রমের ফলও পেয়েছেন, দাবি বৈশাখীদেবীর। তিন বলেন, “ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আমার বিশ্বাস সেই স্বপ্ন ছেলে পুরন করবেই। বাড়িতে কেবল কানেকশন না থাকায় অবসর সময়ে কখনও গান গেয়ে, কখনও গল্পের বই বা মোবাইলে গেম খেলে অবসর সময় কাটিয়েছে সে। সায়ন জানায়, নিয়ম করে কোনদিন পড়াশোনা করিনি সে। তবে যতক্ষণ পড়েছি মন দিয়ে। সমস্ত বিষয়েই তার গৃহশিক্ষক ছিল। স্কুলের শিক্ষকদের ক্লাসে মন দিয়ে শুনত। নিজের সাফল্যের জন্য মা বাবা ও সমস্ত শিক্ষককের অবদান স্বীকার করেছে সে। সময় পেলেই মোবাইল নিয়ে গুগুলে সার্চ করত সে। নিজেও নতুন কিছু আবিস্কার করার স্বপ্ন দেখে। তাই আগামী দিনে সে বিজ্ঞানী হতে চাই। সৃষ্টি নেশায় বিভোর সায়ন।

নিজস্ব চিত্র

অনদিকে রামপুরহাট পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদমারি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ চন্দন আলি। বাবা মহম্মদ মমরেজ আলি রামপুরহাট কোর্টের গ্রুপ ডি কর্মী। মা সারেবানু বেগম নিপাট গৃহবধূ। তাঁদের দুই সন্তানের মধ্যে বড় মহম্মদ চন্দন আলি। তাদের আদি বাড়ি মাড়গ্রাম থানার কবিরাজপুর হলেও চাকরির সুবাদে রামপুরহাটেই থাকতে শুরু করেন তারা। মমরেজ সাহেব বলেন, “কোর্ট থেকে আসতে রাত হয়ে যেত। ফলে ছেলের পিছনে যেটুকু সময় দিয়েছে ওর মা”। মা সারেবানু বেগম বলেন, “ছেলের নিজের চেষ্টাতেই এই সাফল্য এসেছে। কারণ মাঝে মধ্যেই ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে দেখতে যেতে হত আমাকে”। প্রতিটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছাড়াও সে পড়াশোনার পিছনে যথেষ্ট সময় দিয়েছে চন্দন। সে পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা ও কার্টূন চ্যানেল দেখতে ভালোবাসত। চন্দন জানায়, দাদু দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই আমার ইচ্ছে মারণ রোগ ক্যান্সার নিয়ে রিসার্চ করা। যদি রিসার্চ করে সাফল্য পাই তাহলে আমি ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারব”।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here