প্রীতম সরকার, উত্তর দিনাজপুরঃ
একদিকে লক ডাউন সফল করতে যখন লাঠি তুলতে হচ্ছে ঠিক তেমনই আবার অসহায় মানুষের পাশেও দাড়াচ্ছেন তারা। এরা আর কেউ নন, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। লক ডাউনের তৃতীয় রাতে পুলিশের এক অন্য মানবিক রূপের সাক্ষী থাকল রায়গঞ্জ। সন্ধ্যারাতে ত্রিপল ঢাকা লড়িতে একপ্রকার লুকিয়ে বাংলা থেকে বিহার যাচ্ছিলেন একদল ভিনরাজ্যবাসী।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনের ফায়দা লুটতে বেআইনীভাবে মদ বিক্রি শিক্ষিকার স্বামীর, গ্রেফতার তিন
রায়গঞ্জের পৌর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন লেবেল ক্রসিং এর লরি থামিয়ে তল্লাশি করতেই বিষয়টি নজরে আসে সেখানে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ কর্মীদের। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় যে তারা কোলকাতা থেকে বিহারের দ্বারভাঙ্গা যাচ্ছেন। ত্রিপল সরিয়ে একে একে লড়িতে মুখ লুকিয়ে থাকা প্রায় ২৫জন ব্যাক্তি জানালেন, তাদের কেউ বা কোলকাতায় ভ্যানরিক্সা চালান আবার কেউ বা ফেরিওয়ালার কাজ করেন।
কিন্তু লক ডাউন শুরু হওয়ায় তাদের কাজ লাটে উঠেছে। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে অসহায় অভুক্ত অবস্থায় থেকে শেষমেষ ফাঁকা লড়িতে চেপেই নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন তারা। এদিকে পুলিশ দেখে বারবার হাত জোর করে বাড়ি ফেরার কাতর আকুতি জানাতে থাকেন তারা। দুর্বল চেহারায় অস্ফুট স্বরে তাদের কয়েকজনের মুখে শুধু একটাই কথা, “ছোর দিজিয়ে বাবু, তিন দিনোসে ভুখা হ্যায় হম, কুছ খায়া নেহি। হমলোগ ঘর জানা চাহতে হ্যায়।” অসহায় অভুক্ত মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে যেন প্রান কেঁদে ওঠে কর্ত্যবরত পুলিশ কর্মীদের।
নিজেদের ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য আনা কিছু খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন লড়িতে থাকা অসহায় অভুক্ত মানুষগুলোকে। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। তবে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের নির্দেশে এবং সন্দেহজনক কিছু না মেলায় তাদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের নিজনিজ এলাকায় পৌঁছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন পুলিশ কর্মীরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584