ওয়েব ডেস্ক, নিউজ ফ্রন্ট:
লকডাউনের মাঝেই চাকরি খোয়ানো ১০ হাজার কর্মহীন শিক্ষককে ফের কাজে ফেরাতে চাইছে ত্রিপুরার বিপ্লব দেব সরকার। তবে শিক্ষকতার পেশায় নয়, ত্রিপুরার বিজেপি সরকার তাঁদের সাফাই কর্মী, মালি, রাধুনী, নাইটগার্ড, পিয়ন প্রমূখ পদে নিয়োগ করতে চায়। জানিয়ে তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
উল্লেখ্য,করোনা সংকটের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ৮৮৮২ জন শিক্ষককে এককালীন ৩৫,০০০ টাকা দিয়ে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কথা ঘোষণা দেন।সংখ্যাটা কমে যাওয়ার কারন- অনেকেই মারা গেছেন, অনেকেই অন্য জায়গায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন।
২০০৯, ২০১২ ও ২০১৪ সালের নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে গাইডলাইন মেনে সেই নিয়োগ হয়নি। মামলা গড়ায় হাইকোর্টে, হাইকোর্ট থেকে আবার সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু যে নীতি মেনে এই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয় তা সুপ্রিম কোর্টে বাতিল হয়ে যায়। ফলে সুপ্রিম কোর্ট ১০,৩২৩ জনের চাকরিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে। শুরু হয় আন্দোলন। সেই আন্দোলনে পূর্ণ সহযোগিতা করে তৎকালীন বিরোধী দল বিজেপি। তারা সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস দেয়।পরে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে ওই শিক্ষকদের চাকরি অবৈধ, সুপ্রিম কোর্টে বৈধতার দাবি করে ওই শিক্ষকদের হয়ে আর কোন আবেদন করা যাবে না। আদালতের কাছে সময় চেয়ে নিয়ে ঐ শিক্ষকদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার কৌশল রূপে ১৩ হাজার নতুন শূন্য পদ তৈরি করা হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তেও সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ জারি হয়।আর তার মধ্যেই সরকারের পালা বদল ঘটে। ত্রিপুরায় আসে বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার।
আরও পড়ুন:এবার করোনা আক্রান্ত ‘বাহুবলী’ খ্যাত চিত্রনির্মাতা এস এস রাজামৌলি
কিন্তু করে সেই স্থগিতাদেশ উঠে গেলেও বিজেপি সরকার ঘোষণা করে যে ওই ১৩০০০ শূন্যপদের অনুমোদন তারা দেবেনা। বরঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে তারা সমস্যা সমাধানের জন্য সময় চেয়ে নেয়। সেই সময় শেষ হয় গত ৩১শে মার্চ।কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাস্তবে কোনো সমস্যার সমাধান না হওয়ায় লকডাউনের মধ্যেই চাকরি খোয়াতে হয় সেই শিক্ষকদের।
আরও পড়ুন:নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে বাতিল এম ফিল
এই চাকরি খোয়ানো ঘোষণায় বেশ চাপের মুখে পড়ে যায় ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। কারণ দু’বছর আগেও বিধানসভা ভোটের সময় তাদের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’এ ওই শিক্ষকদের চাকরির পাকাপাকি বন্দোবস্ত করার প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন যে ‘সিপিএমের আমলের ভুলের বোঝা বইতে হচ্ছে। কিই বা করার আছে? ওই শিক্ষকদের চাকরিতে বহাল রাখতে গিয়ে তো আর জেলে যেতে পারি না!’
আরও পড়ুন:৭ আগস্ট অনলাইনে হবে সিইটি, জেইম্যাট পরীক্ষা
এবার চাকরি হারানো শিক্ষকদের সাফাইকর্মী, মালি, রাঁধুনি, নাইট গার্ড, পিওন-এর পদে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে হাই কোর্টে আবেদন করেছে বিপ্লব দেব নেতৃত্বাধীন সরকার। এখন আদালতে নির্দেশের অপেক্ষা। সৃষ্টি করা হয়েছে ১০, ৬১৮টি শূন্যপদে । সেখানে চাকরিপ্রার্থী হিসাবে আবেদন করতে পারবেন চাকরি হারানো এই শিক্ষকরা। তবে সরকারের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষক হিসাবে তাঁদের পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা যোগ হবেনা নতুন চাকরির ক্ষেত্রে।তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584