শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
সংক্রমণ রুখতে চালু হয়েছে সাপ্তাহিক দু’দিনের লকডাউন। বৃহস্পতিবারের পর শনিবার ছিল লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। এর মধ্যে শুনশান রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বান্ধবী-সহ জয়রাইডে বেরিয়ে পড়েছিল দুই যুবক। অভিযোগ, শনিবার সকালে রুবির দিকে আসা ওই গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করতেই কনস্টেবলের পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করে। আহত হন এক সিভিক ভলেন্টিয়ারও। শেষ পর্যন্ত ইএম বাইপাসের ওপর উত্তর পঞ্চান্ন গ্রামে তাঁদের পাকড়াও করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকাল ১০ টা নাগাদ পরমা আইল্যান্ড থেকে রুবির দিকে মারাত্মক গতিতে আসছিল ওই গাড়িটি। গাড়িটি আম্বেদকর সেতু পার করে রুবির আসার সময় সেটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন তিলজলা থানার ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল তন্ময় দাস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক সিভিক পুলিশও।
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় সোয়াব টেস্ট বৃদ্ধির উদ্যোগ
কিন্তু গাড়িটিকে আটকাতেই সেটি লেনের মধ্যে মুখ ঘুরিয়ে উল্টো দিকে আম্বেদকর সেতুর দিকে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী নাকায় খবর দেওয়া হয়। উত্তর পঞ্চান্ন গ্রামের কাছে রোড ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা ছোট করে দেন পুলিশ কর্মীরা, যাতে গাড়িটি পালাতে না পারে। বাধা পেয়ে ফের ট্রাফিক গার্ডের ব্যারিকেডের কাছে ফিরে আসে।
খনই গাড়িটির সামনে পিছনে গার্ডরেল দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। তার পরেই বেপরোয়া ওই গাড়ির চালক ব্যাক গিয়ার করতে গিয়ে কনস্টেবল তন্ময়বাবুকে ধাক্কা মারে। তার ডান পায়ের পাতার ওপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে যায়। তন্ময়কে সাহায্য করতে এলে সিভিক ভলেন্টিয়ারকেও ধাক্কা মারে গাড়িটি। গাড়ি ও গার্ডরেলের মধ্যে পড়ে আহত হন সিভিক ভলেন্টিয়ার বাবাই মল্লিক। কিন্তু ওই গাড়িটির পিছনেও আরও একটি পুলিশের গাড়ি থাকায় আর পিছোতে পারেনি গাড়িটি।
আরও পড়ুনঃ সাপ্তাহিক ২ দিনের লকডাউনে কলকাতা বিমানবন্দরে বন্ধ উড়ান
ওই ঘটনা দেখে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে গাড়িটিকে ধরে ফেলে। গাড়ির চালককে মারধর করা হয়। গাড়ির মধ্যে থাকা তরুণী ও দুই যুবককে টেনে বার করা হয়। তারপর গাড়িটি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। আহত পুলিশ কনস্টেবল এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্থানীয় লোকজন দৌড়ে না এলে গাড়িটি তাঁদের ধাক্কা মেরে পালিয়ে যেত বলে দাবি তন্ময়বাবুর।
এদিকে গাড়িতে থাকা দুই যুবক এবং তরুণী প্রথমে আটক করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, গাড়ি চালাচ্ছিলেন শরৎ বসু রোডের বাসিন্দা রৌনক আগরওয়াল নামে এক যুবক। তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময়েও একপ্রস্থ ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের সঙ্গে। পুলিশ পরে রৌনককে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে। যদিও বাকি দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়নি। ধৃত এবং তাঁর সঙ্গীরা মদ্যপ ছিলেন কি না, তা জানতে তাদের সকলের মেডিক্যাল টেস্ট করানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584