করোনা আবহে ৬০-৮০% রাস্তায় যাতায়াত বাড়ল বাইক স্কুটির, বেড়েছে বিক্রি

0
106

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

বাংলায় প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে, কারোর পৌষমাস তো কারোর সর্বনাশ। একদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মানুষ মারা যাচ্ছেন সুস্থও হচ্ছেন একাধিক আক্রান্ত হওয়া রোগী। কিন্তু তার মধ্যেই দু’মাস বিপুল ক্ষতির পর আচমকা মানুষের পাগলামিতে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে বাইক, স্কুটি নির্মাণকারী সংস্থাগুলি।

Bike | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

প্রসঙ্গত, ‘‌আনলক ওয়ান’‌ পর্ব শুরু হতেই অফিসগুলিতে যাতায়াত বেড়েছে। রাস্তায় নেমেছে ট্যাক্সি,অটো, সরকারি ও বেসরকারি বাস। কিন্তু গণপরিবহনের এই মাধ্যমগুলির সচল থাকলেও সাধারণ যাত্রীরা একদিকে নিয়ম না মানা ভিড়ের ধাক্কাধাক্কিতে সংক্রমণের আশঙ্কায় ভুগছেন। অন্যদিকে, পরিস্থিতির সুযোগে মুখে পুরনো ভাড়ার কথা বললেও অতিরিক্ত ভাড়াও নিচ্ছেন বাস, ট্যাক্সি বা অটোচালকরা।

আপাতত এই আশঙ্কাতেই গণপরিবহন ছেড়ে নিজের মোটর বাইক, স্কুটির উপরেই বেশি ভরসা রাখতে চাইছেন অফিসযাত্রী থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা। আর তাই ভিড় বাড়ছে মোটর বাইক, স্কুটি কেনার শোরুমগুলোতে। ‘‌আনলক ওয়ান’‌–এর পর এমনই ছবি শহরতলীর বিভিন্ন শোরুমে। শুধু তাই নয় দু-একটি শোরুমে আবার বাইক স্কুটি কেনার জন্য দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের লাইনও। ট্রাফিক পুলিশ জানাচ্ছে, আনলক ওয়ানের পর এলাকাভিত্তিক রাস্তায় দেখা মিলছে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ বাইক এবং স্কুটির। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিসংখ্যান এমনই হিসেব দিচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ দুর্বল অর্থনীতি! বাধ্য হয়ে আজ থেকে পার্কিং ফি নিচ্ছে কলকাতা পুরনিগম

বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, হিরো, হন্ডা, ইয়ামাহা, বাজাজ থেকে শুরু করে একাধিক বাইক প্রস্তুতকারক সংস্থার বাইকের চাহিদা থাকলেও স্কুটির চাহিদাই সর্বাধিক। অন্তত বিভিন্ন শোরুমের সেলস ম্যানেজারের বক্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট। ধর্মতলার এক সেলস ম্যানেজার জানাচ্ছেন, ‘‌প্রত্যেকদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫টি করে বাইক, স্কুটি বিক্রি হচ্ছে ও বুকিং চলছে। তবে বাইকের থেকে স্কুটি বিক্রিটাই বেশি হচ্ছে। কারণ স্কুটি পরিবারের সবাই ব্যবহার করতে পারবেন। একই সঙ্গে মালও বহন করা যায়।’‌‌ গড়িয়াহাটের আরেক সেলস ম্যানেজার রাহুল বৈদ্য বলেন, ‘লোকে হাতে টাকা দেওয়ার বদলে ইএমআই পদ্ধতিতেই বেশি কিনছেন, যাতে আমাদেরই লাভ হচ্ছে। অন্তত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাইক আর স্কুটি দুটোরই বিক্রি বেড়েছে।’

আরও পড়ুনঃ রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ সৎকার পদ্ধতি নিয়ে এবার জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে

তিনি জানান, স্কুটি বা বাইক চালানো এখনো পর্যন্ত শিখে উঠতে পারেননি এইরকম ক্রেতারাও চলে আসছেন। ওই দোকানেই ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরিতে কর্মরত এক ব্যক্তি বাইক কেনার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‌আমি কোনদিন বাইক চালাই নি। কিন্তু নিজেকে সুস্থ এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে গেলে বাইকই এখন অন্যতম উপায়। তাই বাইক কিনে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করব।’‌

বেশি দামের বাইক নয়, কম দামি বাইক ও স্কুটিই এখন প্রাধান্য পাচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। বিভিন্ন অফিস শুরু হবার পর থেকেই শহর কলকাতায় বাইক ও স্কুটির সংখ্যার নজিরবিহীনভাবে বাড়তে শুরু করেছে।ইতিমধ্যেই যত সংখ্যক আসন কত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বেসরকারি বাস ও সরকারি বাস পরিষেবা শুরু হয়েছে শহর কলকাতায়। তাতেও অনেকেরই নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন বাসগুলি আগে থেকেই আসন ভর্তি হয়ে আসার জন্য আর নতুন করে বাসে ওঠার জায়গা থাকছে না। আর মানুষের এই বিপদের সময়ে স্কুটি বা বাইক কেনার পাগলামিকে হাতিয়ার করে দু’মাস বিক্রি না হওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইছে বাইক-স্কুটি কোম্পানিগুলির মালিক থেকে শোরুম সেলস ম্যানেজার সকলেই।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here