ঝাড়গ্রামের সেনগুপ্ত পরিবারে কাঁচা শাকসব্জিই মায়ের ভোগ

0
250

নিজস্ব সংবাদদাতা,ঝাড়গ্রামঃ

আড়ম্বর হারিয়েছে সময়ের স্রোতে।তবে ঐতিহ্য আর আন্তরিকতায় আজও অম্লান ঝাড়গ্রামের সেনগুপ্ত বাড়ির পুজো।ঝাড়গ্রামে পুজোয় আড়ম্বর তেমন নেই। তবে নিষ্ঠা,আন্তরিকতা আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন এখনও যাঁদের টানে,তাঁদের সংখ্যাটাও নেহাত অল্প নয়।

vegetable is the prasad | newsfront.co
কাঁচা শাকসবজি নিবেদিত মায়ের ভোগ হিসেবে।নিজস্ব চিত্র

রেকাবিতে সাজানো নুন হলুদ মাখানো কাঁচা মাছ।অন্য থালায় ডুমো ডুমো করে কাটা কুমড়ো, পটল,ঝিঙে,বেগুন,বরবটি,কাঁচকলা সমেত হরেক আনাজ।

নৈবেদ‍্যর রকমারি থালায় সুগন্ধি গোবিন্দভোগ চাল,সোনা মুগের কাঁচা ডাল, শুকনো লঙ্কা,তেজপাতা ও আরও নানা ধরনের মশলাপাতি।প্রথা মেনে এ ভাবেই পুজোর ক’দিন কাঁচা ভোগ সাজিয়ে দেওয়া হয় দেবী দুর্গার সামনে।কারণ কয়েকশো বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে ঝাড়গ্রামের সেনগুপ্ত বাড়িতে।

vegetable is the prasad | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রামের সেনগুপ্ত বাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল ১৭৪৫ সালে।ফরিদপুরের বান্ধব-দৌলতপুর গ্রামে পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত রামগতি সেনগুপ্তর পরিবারের সদস্যরা।জনশ্রুতি,সে বছর পুজোর জোগাড় চলাকালীন হামলা চালায় বর্গীরা।

আরও পড়ুনঃ নবদ্বীপ রেল স্টেশনে হকার ইউনিয়নের বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন

তাই কোনওমতে পুজো সারতে হয়। পুজোর সময় আর ভোগ রাঁধা হয়নি।সেই সময় থেকেই দেবীকে অন্নভোগের পরিবর্তে কাঁচা শাকসব্জি, চাল, ডাল, মশলাপাতি দিয়ে নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। সেই প্রথা আজও চলে আসছে ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবায় সেনগুপ্ত বাড়ির পুজোয়।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঝাড়গ্রামের সেনগুপ্ত বাড়ির পুজো আড়ম্বর হারালেও আন্তরিকতা আজও অম্লান রয়েছে।একদা ফরিদপুরের মাদারিপুর এলাকার বান্ধব-দৌলতপুর গ্রামে ছিল সেনগুপ্তদের আদি বাড়ি। ১৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে বাড়ির কর্তা রামগতি সেনগুপ্তর আমলেই ফরিদপুরের পুজোয় জৌলুস বাড়ে।

দেশভাগের পর ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে রামগতি সেনগুপ্তর উত্তরসূরিরা পূর্ববঙ্গ থেকে ঝাড়গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন।ঝাড়গ্রামের বাছুরডোবার বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়।

পরিবারের প্রবীণ সদস্য সুব্রত সেনগুপ্ত বলেন, “এক সময় লাগাতার বর্গি হামলার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষরা আত্মগোপন করে পুজোর আয়োজন করত বলে শুনেছি।ওই অবস্থায় আর ভোগ রাঁধার সুযোগ হয়নি। তাই ভোগ হিসেবে কাঁচা আনাজ নিবেদন করা হত। সেই প্রথা আজও চলে আসছে। তবে কাঁচা আনাজের পাশাপাশি দেবীকে ফলমূল, খই, মুড়কি নৈবেদ্য দেওয়া হয়।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here