সিমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ
ধবলাট গ্রাম পঞ্চায়েতের মনসাবাজার ডি এম রাস্তার কূলে বাস অশোক পন্ডিতের। স্ত্রী সরস্বতী পন্ডিত ও দুই ছেলেকে নিয়ে তার সংসার। পেশায় অশোক বাবু মৎসজীবী। দীর্ঘ এগারো বছর ধরে তার এক আত্মীয়ের জায়গার উপর বসবাস করে আসছেন তিনি। প্রতিবছর বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক গ্রাস করেছে অশোক পন্ডিতকে। আইলার পর থেকে তার সমস্যা বেড়েছে আরও।
সমুদ্রের নোনা জল আজ প্রবেশ করেছে টালির ছাউনি দেওয়া কুঁড়ে ঘরে। ঘটে যাওয়া বুলবুল থেকে আমপান – ঝড়ে কোন রকম সুযোগ সুবিধা পাননি পন্ডিত পরিবার। পশ্চিমি ঝঞ্জার জেরে নোনা জলে প্যাচপ্যাচে কাদায় বাস আজ তার। দেখা নেই স্থানীয় প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধিদের। দেখা নেই বিধায়ক থেকে ব্লক প্রশাসনের। দুতিনদিন কোন ক্রমে একবেলা খেয়ে চলেছে জীবন। জীবন যুদ্ধকে বাজি রেখে সরকারি সুযোগ সুবিধার আর্জি রেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ হলদিয়াতে বাইকে আগুন ঘিরে চাঞ্চল্য
ধবলাট আইলা বাঁধ তিনকিলোমিটার হওয়ার কথা, ইতিমধ্যে নতুন করে ভেঙেছে কোটালের জলে তিনশো মিটার।ধবলাট,মনসামন্দির,বোটখালি,রাধিকাপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জল প্রবেশ করেছে প্রায় শতাধিক ঘরে। ভাঙনের আশঙ্কায় শতাধিক পরিবার। মেঠে দেওয়াল সহ টালি আর খড়ের ছাউনি দেওয়া বাড়ি এই এলাকায়। পেশায় মৎসজীবী সহ চাষ আবাদ করেই নিজেদের জীবন কাটান এখানকার মানুষ। এই চরম দুরাবস্থাতেও দেখা নেই সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরার। স্থানীয় নেতাদেরও কোন হদিশ মেলেনি এই পরিস্থিতিতে। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার মানুষ।
আরও পড়ুনঃ কংসাবতী ক্যানেলের পাড় ভেঙে বানভাসি ঝাড়গ্রাম
বিজেপি নেতা শিতল কালসারের দাবি, “আইলা বাঁধ অসম্পূর্ণ হওয়ার কারণ কাটমানি। বিধায়ক থেকে প্রধান, উপপ্রধান সবাই জড়িত এই কর্মে। ফলে আজও তিনকিলোমিটার আইলা বাঁধ অসম্পূর্ণ। আর তাই অনায়াসে ঘরে ঢুকছে নোনা জল।” পথে নেমেছে কংগ্রেসও।
কাটমানির অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেতা তারকনাথ মাইতি। আন্দোলনের কথাও বলেছেন তিনি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা আনয়ারা বিবি। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সমস্যার ফলে বাঁধ নির্মাণে ব্যাঘাত হচ্ছে বলে তিনি জানান। যদিও খুব শীঘ্রই সমাধান মিলবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তবে আশা প্রত্তাশা সব মিলিয়ে এখন ক্ষোভে ফুঁসছে সাগরবাসী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584