নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
ভারত বাংলাদেশ বর্ডার জলঙ্গী থানার ঘোষপাড়া অঞ্চলের চর পরাশপুর, উদয় নগর চর কলোনি, হিন্দু কলোনি এই গ্রাম গুলোতে আনুমানিক,১৯৯৫ – ৯৬ ও ২০০৫-৬ এ পদ্মা নদীর ভাঙ্গনের ফলে চর পড়ে,তখন থেকেই প্রায় ৪০০ পরিবার বসবাস শুরু করেন।
এই গ্রামটি বাংলাদেশ লাগোয়া। গ্রামটি থেকে কয়েক কিলোমিটার ব্যবধানে বাংলাদেশের নাটোর,রাজশাহী জেলা। যদিও গ্রাম শুরুর সময় হাট বাজার বাংলাদেশ থেকেই করতেন এই গ্রামের মানুষজন। বর্তমানে সেটা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে বিএসএফ -এর উদ্যোগে।
গ্রামের এক ব্যক্তি জব্দুল মন্ডল, জানান যে, “করোনা মহামারীতে নাকি কোয়ারেন্টাইন করেছিল সরকার, আমাদের কাছে সেটা অনেক আগে থেকেই চালু ছিল। কারণ আমাদের না আছে কোনো বাজার না কোনো বড়ো দোকান,যে কোনো জিনিসের জন্য আমাদের কে পাড়ি দিতে হয় জলঙ্গী বাজারে। আর চর থেকে বাজারে যাওয়া যে কি কঠিন সেটা শুধু আমরাই জানি,বিএসএফদেরকে হাজারো প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। না দিতে পারলে আর যাওয়া হয় না।
তারপর আবার যদিও বা যেতে পারি আসার সময় সেই চেকিং আর প্রশ্ন। আমরা ভারতবাসী অথচ আমার নিজের গ্রামে যেতে বা আসতে হলে হাজারো প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়,কেনো এই সব প্রশ্ন থেকেই যায়! কিন্তু আমরা প্রায় ১৫ বছর,আবার কেও ২৫ বছর ধরে রয়েছে এই গ্রামে। এক বন্দিদশার মতো গোটা গ্রাম কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরিণত হয়েছে।”
না আছে বিদ্যুৎ,স্বাস্থ্যকেন্দ্র,না ভালো স্কুল,যদিও বা দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয় রয়েছে। কোনো ভালো টিউশন সেন্টার বা মাস্টার কিছুই নেই এই গ্রামে, কি ভাবে ভালো পড়াশুনা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় চরবাসীরা।
১৯৯৫-৯৬ তখন সিপিআইএম বিধায়ক ইউনুস সরকার তিনি দেখেন যে ঘোষপাড়া অঞ্চলের বন্যায় সব হারিয়ে দিসেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তখন তারই উদ্যোগে চরে বসবাসের সুব্যবস্থা করা হয়। গ্রামটিতে রয়েছে দুটি মসজিদ,একটি অচিন পাখি আশ্রম,ছোটো মন্দির।
তখন মোটের উপর দশটা পরিবার ঘর করেন খড়ের চাল ও বেড়া দিয়ে। তারপরে আস্তে আস্তে অনেক বছর কেটে গেলেও তেমন ভাবে কেও ফিরেও তাকায় না চরবন্দী মানুষের দিকে।
আরও পড়ুনঃ নজিরবিহীনভাবে রাজ্যের ৩ আধিকারিককে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন
এখন প্রায় দুই হাজার ভোটার বসবাস করেন এই চর কলোনিতে। একটু একটু করে কাজ শুরু হয়েছে চরে, কোথাও বিদ্যুৎয়ের খুঁটি পড়েছে, আবারও কোথাও খুঁটিতে তারও লাগানো হয়েছে। যদিও এখনও কিছুটা সময় লাগবে বিদ্যুৎয়ের কাজ শেষ হতে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুনঃ জ্বালানিতে কৃষি সেস, পেট্রোল ডিজেলের দাম বৃদ্ধির দাবি ওড়াল কেন্দ্র
অন্য দিকে রাস্তার কাজও একটু একটু করে শুরু হয়েছে।সব কিছুর পরেও তাদের মনে ভয়, কবে অভিশাপ নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়তে হবে! যদিও প্রায় বছর ১৫ নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়নি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584