নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
দেখতে দেখতে ৬০০ টি পর্ব পার করল স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘শ্রীময়ী’। এই আনন্দঘন দিনটি সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাগ করে নিল ধারাবাহিকের জনাকয়েক টিম মেম্বার। চ্যানেল আয়োজিত ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে হাজির ছিলেন ধারাবাহিকের নির্মাতা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং শৈবাল ব্যানার্জি, ইন্দ্রাণী হালদার (শ্রীময়ী), টোটা রায় চৌধুরী (রোহিত সেন), সুদীপ মুখার্জি (অনিন্দ্য সেনগুপ্ত), ঊষসী চক্রবর্তী (জুন আন্টি), ঐশী ভট্টাচার্য (দিঠি), অর্ণব ব্যানার্জি (ছোটু), সপ্তর্ষি মৌলিক (ডিঙ্কা)।
অভিনেতারা প্রত্যেকেই জানালেন শ্রীময়ী ঘিরে নিজেদের অনুভূতির কথা।সুদীপ মুখার্জি জানান- “বুঝতেই পারলাম না কবে এতগুলো পর্ব পার করে ফেললাম। এর মধ্যে একদিন ফ্লোরে দিঠি মানে ঐশী এসে বলল, তোমরা কি জানো আজ শ্রীময়ীর ৬০০ পর্ব। আর ব্যস, তখনই মনটা আরও চাঙ্গা হয়ে উঠল।”ইন্দ্রাণী হালদার এবং সুদীপ মুখার্জি দুজনেই লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখনীর ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন- “চরিত্রটা ভাল করার কাজ ৭৫ শতাংশ লীনা দিই তাঁর কাগজে কলমে করে রাখেন৷ আমরা অভিনেতারা বাকি ২৫ শতাংশ করি।”
ইন্দ্রাণী হালদার বলেন- “অনেকদিন থেকেই লীনা দি’র গল্পের চরিত্র হয়ে ওঠার ইচ্ছা ছিল। শ্রীময়ী সেই ইচ্ছা পূরণ করল। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, টি আর পি’র চোখ রাঙানিতে অনেক সময়ই গল্প অনভিপ্রেত দিকে বাঁক নেয়। যেটা হয়ত অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক। কাহিনিকার বাধ্য হন গল্প ঘুরিয়ে দিতে৷ কিন্তু লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এমন একজন লেখিকা যিনি কিনা নিজের ভাবনা, কল্পনা, ইচ্ছে, ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা থেকে এক চুলও নড়েন না। সেটা আমার আগেই জানা ছিল।
তবু কথা প্রসঙ্গে আমি ধারাবাহিকটি শুরু হওয়ার আগে এই গল্প ঘুরিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা এবং মতামত পোষণ করেছিলাম লীনা দি’র কাছে। দিদি বলেছিলেন, আমি লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, আমি কথা দিচ্ছি এরকম আমার গল্পে কখনও হয় না। হবে না। আমার লেখার উপর কেউ হাত চালায় না।লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এমন একজন লেখিকা যিনি কিনা নিজের ভাবনা, কল্পনা, ইচ্ছে, ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা থেকে এক চুলও নড়েন না। আমি মনে করি লীনা দি’র সব ভাল কাজের মধ্যে ‘শ্রীময়ী’ জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
আরও পড়ুনঃ প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার বলিউড অভিনেতা অনুজ সাক্সেনা
দিদির আগের সব ভাল কাজের রেকর্ড ভেঙে রান হাঁকাচ্ছে ‘শ্রীময়ী’। সন্ধে ৭ টা থেকে সাড়ে ৭ টার মধ্যে মাকে ফোন করলে আমার মা আমার সঙ্গে ঠিক করে কথা বলেন না। আর কী বলব এরপর?”এই একই কথা বললেন টোটা এবং সুদীপ মুখার্জিও। সন্ধে ৭ টা থেকে সাড়ে ৭ টার মধ্যে অনেককে ফোন করলে তারা নাকি ফোনে ঠিক করে কথা বলেন না। কেমন একটা গা ছাড়া ভাব থাকে কথায়।
সপ্তর্ষি মৌলিক জানান- “যাঁদের সঙ্গে কাজ করি তাঁরা প্রত্যেকে খুব সযোগিতাপ্রবণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ। সবসময়ই মনে হয় এঁরা সকলেই আমার এক্সটেনডেড ফ্যামিলি মেম্বার।”ঐশীও নিজের ভাল লাগার কথা জানিয়েছেন। ঐশী বলেন -“আমার আজ অবধি করা সবকটা চরিত্র থেকে দিঠি একদম আলাদা। অনেক বেশি ম্যাচিয়র্ড সে। আমি খুব ভালোবাসি দিঠিকে।”
সুদীপ মুখার্জির কাছে জানতে চাই, অনিন্দ্য সেনগুপ্তকে তাঁর কেমন মানুষ বলে মনে হয়? সুদীপ জানান- “আমি সেভাবে কারোকে জাজ করতে পারি না আসলে। তবে বলব, অনিন্দ্য অচেনা কেউ না। এরকম মানুষেরা আছে চারদিকে। যে কিনা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত থেকেও নিজের সংসার এবং সন্তানদের প্রতি যত্নবান। যে কিনা ভুল বুঝে আবার আগের স্ত্রীর কাছে ফিরে আসে। অনিন্দ্য আকাশ থেকে ঝুপ করে পড়া কোনও চরিত্র নয়। এমন অনিন্দ্য অনেক আছে।”
আরও পড়ুনঃ এবার করোনার কবলে দীপিকা পাডুকোন
লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই রোহিতের সঙ্গে শ্রীময়ীর বিয়ে দেখতে চায়, অনেকেই আবার ভাবে এই বুঝি শ্রীময়ী শেষ হয়ে যাবে। এই ব্যাপারে তাঁর কী মত। উত্তরে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান- “শ্রীময়ী নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। সব মানুষই চায়। পারে কি? বিশেষ করে মহিলারা পারে কি নিজের মতো করে বাঁচতে? তবে হ্যাঁ, শ্রীময়ীর একজন রোহিত দা আছে যে কিনা তাকে ভালোবেসে আগলায়। নিজের মতো করে শ্রীময়ীকে বাঁচতে অনুপ্রেরণা দেয়।
শ্রীময়ীকে সে কাছে পেতে চেয়েছিল, আজও চায়। শ্রীময়ীও ভালোবাসে রোহিত দা’কে। ভালোবাসা আছে বলেই একজন মা’কে তার সন্তানদের ছেড়ে অন্য একজনের হাত ধরতে হবে? এমন একজন মাকে আমি নিজেই সমর্থন করি না। তাকে গল্পে দেখাই কী করে? তবে, দেখাবই না কখনও, তেমন আশ্বাস দিতে পারছি না। সোশ্যাল মিডিয়ার বক্তাদের কথাকে আমি সবসময় খুব বেশি গুরুত্ব দিই না। আমি তো কারো পছন্দ অনুযায়ী গল্প লিখতে বসিনি। আমি আমার ভাবনাকে তুলে ধরতে চাইছি মাত্র।”
ইন্দ্রাণী হালদারের কাছে জানতে চাই, শ্রীময়ী কি একটু বেশিই ভাল নয়? এত ভাল মানুষ কি আছে পৃথিবীতে? উত্তরে অভিনেত্রী জানান- “আছে। আর শ্রীময়ীকে দর্শক এরকমই ভাল দেখতে চায়। অনেকসময় আমার বেশি ভালোমানুষি অনেকে মেনে নিতে পারে না আমি জানি সেটা। পরে কিন্তু তারাই আমাকে বাহবা দেয়। শ্রীময়ী এরকমই থাক। তবে, কদিন হল জুনের সঙ্গে চুলোচুলিটা হচ্ছে না। লীনা দি’কে বলেছি জুনকে এবার শ্রী ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসা হোক আনন্দ নিকেতনে।”
আরও পড়ুনঃ বন্ধ হচ্ছে না শুটিং, মানতে হবে আরও কিছু নিয়ম
টোটাকে একটি মজার প্রশ্ন করি, বহু মহিলার আপনার প্রতি ক্রাশ৷ অনেককেই বলতে শুনি- “আমার একটা রোহিত সেন চাই।” এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন? টোটা চিরাচরিত স্বভাবসিদ্ধ হাসিতে উত্তর দেন- “এই বয়সে এসে এমন কমপ্লিমেন্ট বেশ আনন্দদায়ক।” টোটার কথার মাঝেই সহাস্যে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন- “আমি একটা কথা না বলে পারছি না। টোটা দুটো বিয়ের অফার পেয়েছে রোহিত সেন হওয়ার পর।” ইন্দ্রাণী হালদারও জানান- “আমিও লীনা দি’কে বলেছি আমার একটা রোহিত সেন চাই।”এভাবেই মজাদার গল্প আড্ডায় জমে ওঠে ‘শ্রীময়ী’র ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্স।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584