পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলো শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলায়। স্বয়ং উপাচার্য মস্তানি করে তুলে দিলেন মেলায় বসে থাকা গরীব প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের। রবিবার সকাল বেলায় মেলার মাঠে পৌঁছান বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, সঙ্গে ছিল বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মী ও মেলা পরিচালনার জন্য প্রাক্তন সেনা কর্মীরা। চলল ভাঙচুর, গরীব ব্যবসায়ীরা উপাচার্যকে বারবার অনুরোধ করেন এভাবে তাদের জিনিসপত্র যাতে মাটিতে আছড়ে ফেলে না দেওয়া হয় কিন্তু উপাচার্য তখন মস্তানি ভূমিকা নিয়েছে নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে দোকান।
উপাচার্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিশ্বভারতীর বেশকিছু প্রাক্তন ছাত্র গুন্ডাগিরি করে বলে দোকানদারদের অভিযোগ। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন তাদের তরফে বিশ্বভারতীকে অনুরোধ করা হয়েছিল মেলা শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর তারা নিজেরাই নিজেদের দোকান তুলে নিয়ে চলে যাবে কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা সময় পূরণ হওয়ার আগেই রবিবার সকালে ঐতিহ্যপূর্ণ পৌষ মেলায় চলল বিশ্বভারতীর গুন্ডাগিরি। নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বয়ং উপাচার্য এমনটাই অভিযোগ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহের।
তিনি বলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য গরীব মানুষদের সঙ্গে এই আচরণ কার্যত হতবাক করেছে সমস্ত মানুষকে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য এইরকম ধরনের কাজ কী করতে পারেন?
আরেক ব্যবসায়ী তাইজুত খান জানিয়েছেন আচমকাই দোকানে এসে লাঠি দিয়ে ভাঙচুর শুরু করে, বেশ কিছু লোকজন বুঝে ওঠার আগেই সম্পূর্ণ দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় রীতিমতো হুমকি দেয় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
প্রবীণ আশ্রমিক সুবোধ মিত্র বলেন শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য হওয়া যায় না আজকের ঘটনা তা প্রমাণ করে দিল। অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং লজ্জাজনক ঘটনা ঘটালেন উপাচার্য, তিনি বিশ্বভারতীর অভিভাবক বিশ্বের দরবারে পৌষ মেলার ঐতিহ্য ধুলোয় মিশিয়ে দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যদিও বিশ্বভারতী তরফে এই ঘটনা নিয়ে কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি সংবাদমাধ্যমে।সকাল থেকেই বিশ্বভারতীর মেলার মাঠে যাওয়ার প্রত্যেকটি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। দূর থেকে আসা বহু সাধারণ পর্যটককে কার্যত হুমকির সুরে বিশ্বভারতী নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়ে দেয় কোনভাবেই যেন তারা মেলার মাঠে প্রবেশ করার চেষ্টা না করে। তাই রবিবার হতাশ হয়ে কয়েক হাজার পর্যটককে কার্যত খালি হাতে ফিরে যেতে হয় পৌষ মেলা না দেখে। বিশ্বভারতীর অন্দরমহলে এখন প্রশ্ন উঠেছে যদি ব্যবসায়ীরা বিশ্বভারতীর নির্দেশ অমান্য করে সময় পেরিয়ে যাবার পরেও মেলার মাঠের ব্যবসা করছিলেন। তবে বিশ্বভারতী তরফে কেন পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে আইনের সাহায্য নেওয়া হলো না, কেন উপাচার্য খোদ মাঠে নেমে এই ধরনের গুন্ডাগিরির নেতৃত্ব দিলেন। রবিবার উপাচার্য যে ঘটনা ঘটালেন তাতে বিশ্বভারতী এবং গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুনাম কলুষিত হল। আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর জানিয়েছেন অভাবনীয় ঘটনা ঘটিয়েছেন বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতীর উপাচার্য এরকম মস্তানদের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে ভেবে অত্যন্ত লজ্জা বোধ হচ্ছে। তিনি বিশ্বভারতীর অভিভাবক তার আচরণ অভিভাবক সুলভ হওয়া উচিৎ আজকের ঘটনা বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী হিসাবে মাথা হেঁট করে দিল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584