মোহনা বিশ্বাস, ওয়েব ডেস্কঃ
টানা বৃষ্টির জেরে ভাসছে শহর কলকাতা। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও জলযন্ত্রণার চিত্র উঠে আসছে। সোমবার দিনভর বৃষ্টিতে জল জমে স্তব্ধ শহরের একাধিক রাস্তাঘাট। বিশেষ করে উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি এলাকায় জলযন্ত্রণার চিত্রটা আরও স্পষ্ট।
এদিকে, গঙ্গার জলস্তরও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে হাওড়ার একাধিক জায়গা জলমগ্ন। সোমবার কলকাতা, প্রিন্সেপ ঘাটের মতো স্টেশনে রেললাইন জলে ডুবে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। হাওড়ার কারশেডও জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়েছে। অনেক ট্রেন দেরিতে চলেছে। যার কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। এরইমধ্যে অশণী সংকেত আলিপুর আবহাওয়া দফতরের।
পুজোর মুখেই নতুন দুশ্চিন্তা বাংলার মাথায়। একটি নয় একসঙ্গে ধেয়ে আসতে পারে দু-দু’টি ঘূর্ণাবর্ত। আর এই ঘূর্ণাবর্তের অভিমুখ হতে পারে বাংলা ও ওড়িশা উপকূল। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বৃষ্টি বাড়ার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছে মৌসম ভবন। আবহবিদদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে নয়, দু’টি ঘূর্ণাবর্তেরই জন্ম সুদূর দক্ষিণ চিন সাগরের গর্ভেই। সেই সাগর থেকে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মায়ানমার হয়ে ঘূর্ণাবর্ত দুটি বঙ্গোপসাগরে এসেছে। এর পরবর্তী গন্তব্য পূর্ব উপকূল।
আরও পড়ুনঃ ২৬ হাজারে নামল দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যুর গ্রাফও নিম্নমুখী
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর নাগাদ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নতুন একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। দক্ষিণ চিন সাগরে যে টাইফুন সৃষ্টি হয়, তার প্রভাবেই মাঝেমধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তেমন সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমরা সেদিকে সর্বদা নজর রাখছি। সময় হলে নির্দিষ্ট পূর্বাভাসও দেওয়া হবে।’
এদিকে, টানা বৃষ্টির কারণে রেকর্ড হারে নেমেছে তাপমাত্রার পারদ। মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ২৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে সাত ডিগ্রি কম। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ থাকবে সর্বাধিক ৯৮ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বন্দুক হানা, মৃত অন্তত ৮, আহত বহু পড়ুয়া
সোমবার সকালেই বৃষ্টি হয়েছে ২৯৪ মিলিমিটার। মাত্র দু’দিনে বৃষ্টির পরিমাণ ২৪৪ মিলিমিটার। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঘূর্ণাবর্ত ওড়িশায় প্রবেশ করায় অতি গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আলিপুরে বৃষ্টি হয়েছিল ১০২ মিলিমিটার। আর ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে ১৪২ মিলিমিটার। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে মঙ্গলবারও কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমানেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও মাঝারি আবার কোথাও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় এখনও পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584