মহিবুল হক , মালদা: আমাদের দেশের সংবিধান দেশের প্রত্যেক নাগরিককে মৌলিক অধিকার প্রদান করেছে। এই অধিকার রক্ষার্থে বা সঠিক ভাবে প্রয়োগের জন্য এর সঙ্গে কিছু মৌলিক কর্তব্য জুড়ে দিয়েছে। যাতে স্বাধীনতার অপপ্রয়োগ না হয়। এর পুরোটাই দেশ ও জাতির কল্যাণ , ঐক্য ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য করা হয়। শিক্ষা ও দায়িত্ববোধ একটি সমাজ ও রাষ্ট্রকে উন্নত মানব সম্পদ দানকরে। এই উন্নত মানব সম্পদ সমাজ ও রাষ্ট্রকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যায়।আমাদের মতো প্রান্তিক দেশে ‘শিক্ষা ও দায়িত্ববোধ’ আভিধানিক অর্থ মাত্র- যা বাস্তবে অদৃশ্য।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক চরিত্র জাত-পাত কেন্দ্রিক। ‘পদ্ধতিগত গণতন্ত্র’-কে ‘চরিত্রগত’ দিক দিয়ে প্রয়োগ করা হয়।
কারন একাধিক- ১) শিক্ষা সমাজের সর্বস্তরে পৌছায়নি বা শিক্ষাকে সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছাতে দেওয়া হয় নি।
২) কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও আর্থিক দৈন্যদশা।
৩) ধর্মীয় তোষণ ও সামাজিক শোষণ।
৪) সরকারী উদাসীনতা।
৫) পিছিয়ে পড়াদের পিছিয়ে রাখার মানসিকতা।
৬) লালসা ও দুর্নীতির আস্ফালন ইত্যাদি।
তাই বলি মানুষ কে মানুষের মতো বাঁচতে দেওয়ার জন্য মানুষ হতে দেওয়া প্রয়োজন।আধুনিক উন্নত মানের শিক্ষা দানের ব্যবস্থা ও আর্থিক বৈষম্য দূরিকরণের মধ্য দিয়ে উন্নত মানবসম্পদ গড়ে ওঠে, যা দেশ ও জাতির কাম্য।
Image : WBMSC ওয়েবসাইট থেকে
ভারতীয় সংবিধানের ৩০নং ধারা ও মুসলিম সমাজের শিক্ষানীতি :
আমাদের দেশের অধিকাংশ মুসলিম নিম্নবিত্ত -সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এরা দেশের আইন ও সংবিধান বোঝেও না, বোঝার চেষ্টাও করেনা। তাই সাংবিধানিক অধিকার এদের কাছে কিভাবে পৌঁছায় বা আদৌ পৌঁছায় কি না তার খবর অজানা। তবে খবর কারা রাখেন? – উত্তর অবশ্যই দেশের শিক্ষিত(?) সুবিধাবাদী মানুষরা। যারা এর মধ্য দিয়ে নিরক্ষর মানুষদের বোকা বানিয়ে সাংবিধানিক আধিকারের সুবিধে নেয়।
এখন আমাদের রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ৬১৪টি মাদ্রাসা-৩০ নং ধারার গেরোয় পড়ে প্রায় শিক্ষক শূণ্য। এই মাদ্রাসা গুলোতে আগে “মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন” স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করতো।মাদ্রাসা গুলো মেধাসম্পন্ন শিক্ষক পেত। আখেরে মাদ্রাসা শিক্ষারই লাভ হত ।আর এর সুফল সাধারণ ঘরের মুসলিম ছেলে-মেয়েরাই বেশি করে পেত।কিন্তু সে রাস্ততাও বন্ধ অনেকদিন।
আমাদের রাজ্যের কিছু মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি সংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে বর্তমানে খুব সচেতন কিন্তু সাংবিধানিক কর্তব্য সম্পর্কে নয়।এরা মাদ্রাসা নিয়োগ ব্যবস্থা কে দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে টাকা লুঠ করার ধান্ধা করতে উঠেপড়ে লেগেছে । ফলস্বরুপ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যারা পাশ করে বসে আছেন তারা নিয়োগ পাচ্ছেন না। ভাবতে অবাক লাগে, এরা টাকার বিনিময়ে নির্বোধ, অজ্ঞদের মাদ্রাসায় নিয়োগ
করবে। সরকারও বেতন দিতে বাধ্য থাকবে। আশ্চর্য!!! ধ্বংস হবে আমাদের মাদ্রাসা নামক মূল্যবান শিক্ষা ব্যবস্থা। আমাদের সমাজ এটাকে মেনে নেবে? অসম্ভব। তাই সরকারকে বিষয় টি নিয়ে ভাবা উচিৎ। প্রয়োজনে আগের সরকারের অবৈধভাবে দেওয়া সংখ্যালঘু তকমা এই ৬১৪ টি মাদ্রাসা থেকে তুলে নিতে হবে। এগুলো বাদে যেসব মাদ্রাসা আছে এবং যাদের সত্যিকারেরই এই সংখ্যালঘু সুুযোগ প্রাপ্য,তাদের দিতে হবে সংখ্যালঘু তকমা। নাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম ক্ষমা করবে না এই ফড়েদের এমনকি সরকারকেও।
ওড়গ্ৰাম চতুস্পল্লি হাই মাদ্রাসা, বর্ধমান।এখানে মুসলিম অপেক্ষা হিন্দু ছাত্র- ছাত্রী বেশি।
এই সামাজ শত্রু দালালরুপী ফড়েরা আর্থিক প্রতিপত্তি ও মুষ্টিমেয় রাজনৈতিক সাপোর্ট থাকার কারনে মেধাকে উপেক্ষা করে নিজেদের অযোগ্য আত্মিয়-পরিজন দের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার সাংবিধানিক পথ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এরা মুসলিম সমাজের কোনদিনও উন্নতি করে নি, করতে চায়ও না। এদের বিরুদ্ধে সমাজ ও জাতি জেগে উঠুক।
ধর্ম ও মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে আর ব্যবসা নয়-
চাই সমাজের কল্যাণ ও জাতির উন্নয়ন। তাই মাদ্রাসা কমিশন থাকুক জাতির উন্নয়ন বাঁচুক।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584