নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
অস্ট্রেলিয়ায় পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে, একজন মন্ত্রীর দপ্তরে, উর্ধ্বতন সহকর্মী কাছে ধর্ষিতা হন বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন এক মহিলা কর্মী। নির্যাতিতার অভিযোগ, তাঁর দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা সেই অভিযোগে কোন গুরুত্ব দেননি এবং কোনোরকম সাহায্যও করেননি।
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়, প্রাক্তন সেই কর্মীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
২৬ বছর বয়সী অভিযোগকারীনীর সোমবার এক টেলিভিশনে সাক্ষাতকারে দাবি করেন, ২০১৯ সালের ওই ঘটনার পর তিনি চাকরি হারানোর আশঙ্কা করেছিলেন। যেভাবে ওই নির্যাতিতার অভিযোগ চেপে দেওয়া হয়েছে সেজন্য ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মরিসন।
তিনি বলেছেন, “আমি আশা করি নির্যাতিতার অভিযোগ আমাদের সবার জন্য একটি সতর্কবার্তা। আজকের দিনেও একজন অল্পবয়সী নারীকে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় তা আমাকে মর্মাহত করে।”
স্কট মরিসন বলেছেন,”পার্লামেন্টে পেশাদারিত্বের মান এবং চলমান সংস্কৃতি পর্যালোচনা করা হবে। এই অভিযোগের পর আবার নতুন করে তদন্ত শুরু করছে পুলিশ। নির্যাতিতার অভিযোগ, রাতে বাইরে খাওয়া-দাওয়া শেষে একজন পুরুষ সহকর্মী তাকে গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেবার প্রস্তাব দেন।
আরও পড়ুনঃ উহানের করোনা রোগীদের তথ্য দেয়নি চিন, অভিযোগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
কিন্তু বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বদলে তাকে পার্লামেন্ট ভবনে প্রতিরক্ষা শিল্প মন্ত্রী লিন্ডা রেনল্ডস-এর দপ্তরে নিয়ে যান। তিনি বলেছেন, মদ্যপান করার কারণে তিনি তখন সবটা বুঝে উঠতে পারেননি। কিন্তু জেগে উঠে দেখেন ওই পুরুষ সহকর্মী তাকে ধর্ষণ করছেন। সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, আমি কাঁদতে শুরু করি এবং তাঁকে থামতে বলি। লোকটি তারপর চলে যায়। পার্লামেন্ট ভবন থেকে বের হওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীরা অভিযোগকারীকে কোন ধরনের সহায়তা করেনি বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেছেন, যে কয়েকদিন পর তার মনে হয়েছে যে লিন্ডা রেনল্ডস-এর দপ্তর থেকে বিষয়টি ‘চাপা’ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তিনি যে মানসিক আঘাত পেয়েছেন তা খাটো করে দেখা হচ্ছে। এরকম মনে হয়েছে যে আমি যেন সাথে সাথে একটা রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছি। লিন্ডা রেনল্ডস তাকে বলেছিলেন বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে তাকে সহায়তা করা হবে। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে এমন আশঙ্কায় তিনি তা করেননি।
আরও পড়ুনঃ জাতিসংঘের মহাসচিবের পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভারতীয় বংশোদ্ভূত অরোরা আকাঙ্ক্ষা
ঘটনার পর লিন্ডা রেনল্ডস তাকে সেই কক্ষেই আলোচনার জন্য ডেকে নিয়ে যান যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে। “আমার মাথায় ভাবনা ঘুরছিল যে অভিযোগ করলে ওরা আমাকে আবার একই পরিস্থিতিতে নিয়ে যাবে,” জানিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্তকে ঘটনার পর মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
নির্যাতিতাকে দপ্তর পরিবর্তন করে অন্য আর এক মন্ত্রীর অধীনে কাজ করেন। এরপর তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584