শ্যামল রায়, কাটোয়া:দীর্ঘদিন চাকরি করা সত্ত্বেও হাতে নেই কোন জমানো অর্থ। মনে প্রানে ভেবেছিলেন অবসর নেওয়ার পরে পেনশন মিলে গেলে আর কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ অধরাই রয়ে গেছে তার কাছে। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর কেটে গেল চারটি বছর। পেনশন কবে পাবেন আজও কোন দিশা দেখছেন না তিনি।
সোমবার জরাজীর্ণ ঘরে বসে এমনটাই চোখের জল ফেলে জানালেন একজন প্রাক্তন সরকারি কর্মী অসীম কারফা। সব থেকে দুঃখের কথা যে ৮০ বছরের বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তার সমস্যা চরমে উঠেছে।
চার বছরে পেনশন না পাওয়ার কারণে অভাবের হাত থেকে বাঁচতে তার স্ত্রী কেয়া এবং একমাত্র ছেলে অর্ঘ্য কে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছেন। এমনও দুঃখের মধ্যে জীবন যাপন করে যাচ্ছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী।
অসীম বাবু কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরে একজন অফিসার হিসাবে কাজ করেছেন। দাইহাট অফিস থেকে ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই অবসর নিয়েছেন। অসীম বাবু থাকেন কাটোয়া শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘুটকিয়াপাড়ায়।
৮০ বছরের মা সত্য বালা কারফা ছেলের আর্থিক অনটনের কারণে স্বেচ্ছায় মরতে চাইলেও ছেলের যত্নে না খেয়েই দিনযাপন করছেন।
অসীম বাবু জানালেন তার আত্মীয়-স্বজন পরিজনরা কিছুটা সাহায্য করায় প্রতিদিন ফ্যান ভাত খেয়ে বেঁচে থাকছেন। একটা জরাজীর্ণ ঘরের মধ্যে দিনের পর দিন বেঁচে থাকতেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী অসীম বাবু। টাকা পয়সার অভাবে বেহাল ঘর সংস্কার করতেও তিনি পারছেন না। একটাও পরিবেশের মধ্যে দিনের পর দিন ফ্যান ভাত খেয়ে বেঁচে রয়েছেন পরিবারটি।কি কারণে পেনশন পাচ্ছেন না এ বিষয়ে অসীম বাবু জানালেন যে তিনি চাকরি করাকালীন বাম বিরোধী কংগ্রেস রাজনীতির দলের সরকারি কর্মীদের সংগঠন ফেডারেশনের নেতৃত্বে ছিলেন। বর্তমানে সরকার পরিবর্তন হলেও বাম বিরোধী শক্তি তৃণমূল সরকারের আমলেও ভেবেছিলেন তাড়াতাড়ি পেনশন মিলবে সেটাও এখন অন্ধকারের মধ্যে। তাই কবে মিলবে পেনশন তার কাছে অজানা।
আরও পড়ুন : নবরূপে নতুনভাবে সমাদৃত উত্তর দিনাজপুরের লোকগান খনপালা
তবে স্থানীয় মানুষজন দাও তার পেনশন না পাওয়ার কারণে অবাক হচ্ছেন। প্রতিবেশী শ্যামল প্রামাণিক তিনি জানেন একটা মানবিক বিষয়। আমাদের এখানকার পাড়া লোকেরাই যত সামান্য যা জোটে তাই দীর্ঘদিন ধরে সাহায্য করে আসছি কিন্তু এইভাবে কতদিন তিনি সাহায্য পাবেন। আমরা আশা করছি অসীম বাবুর পেনশন তাড়াতাড়ি চালু হয়ে যায় তার জন্য সরকারের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
জানা গিয়েছে যে কাটোয়ার পেনশন সংক্রান্ত আধিকারিক ধীরেন্দ্র কুমার দাস জানিয়েছেন যে আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেনশনের সমস্ত কাগজপত্র পাঠিয়েছি আশা করছি দ্রুত পেনশন চালু হয়ে যাবে। এখন এই ভাবেই অপেক্ষা করে থাকা।
অসীম বাবু জানালেন খুব দ্রুত পেনশন চালু না হলে তার পক্ষে আর বেঁচে থাকা আদৌ সম্ভব হবে কিনা ভাবতে অবাক লাগছে। একদিকে বৃদ্ধা মায়ের ওষুধ অন্যদিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পাশাপাশি তার স্ত্রী এবং ছেলে কেউ সাহায্য করতে পারছেন না একাধিক চাপের মুখে তিনি মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করলেন এ দিন। তাই আগামী দিন কতদিন আর বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখবেন এটাই মনের ভিতর’ তোলপাড় হয় প্রতিদিন জানালেন অসীম বাবু।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584