শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রেকর্ড ভাঙা যেন প্রত্যেক দিন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে রাজ্যে কনটেনমেন্ট জোন ভিত্তিক লকডাউন চালু হওয়ার দিনই রেকর্ড ১০৮৮ সংক্রমণের হদিশ! একই সঙ্গে রাজ্যে রেকর্ড মৃত্যু ২৭ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৫৩৫ জন। রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি যে ক্রমশ উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে যাচ্ছে, তা মেনে নিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারাও।
প্রসঙ্গত, ৮ দিন হাসপাতালে থাকার পর বৃহস্পতিবার নাইসেড অধিকর্তা শান্তা দত্ত এবং ৬ দিন পর বুধবার রাতে বিজেপি মহিলা মোর্চা নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, ফের ২৪ ঘন্টায় ১০৮৮ জন করোনা পজিটিভে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫৯১১ জনে। আরও ২৭ জনের মৃত্যু হওয়ায় রাজ্যে সরকারি হিসেবে মোট করোনায় মৃত্যু ৮৫৪ জনের।
এদিকে আরও ৫৩৫ জন সুস্থের হিসেব ধরলে মোট সুস্থ হলেন ১৬৮২৬ জন। এর মধ্যে কলকাতাতেই সংক্রমণ ৩২২ জনের, মৃত্যু হয়েছে রেকর্ড ১৩ জনের। মৃত ৮৫৪ জনের মধ্যে ৪৫৭ জন কলকাতারই। এদিন অন্যান্য জেলার সঙ্গে কলকাতাতে এদিনও ২১৩ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১২১ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫৬ জন এবং হাওড়ায় ৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু বিপুল সংক্রমণের জেরে সুস্থতার হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬৪.৯৩ শতাংশে। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ৮২৩১ জন। তার মধ্যে এদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৫২৬ জন।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে সমস্ত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় কর্মবিরতি উঠে গেল মেডিক্যাল কলেজে
বুলেটিনে আরও জানানো হয়েছে, এদিন পর্যন্ত রাজ্যের ৫২ টি ল্যাবে মোট করোনা টেস্টের সংখ্যা ৫৮৩৩২৮ জনের। তার মধ্যে ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ১০৮০৫ জনের। রাজ্যের ৮০ টি করোনা হাসপাতাল, ২৬ টি সরকারি এবং ৫৪ টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০৬৫৭ টি বেড আছে, আইসিইউ পরিষেবা রয়েছে ৯৪৮ জনের। ভেন্টিলেটর রয়েছে ৩৯৫ টি। তার ২৭.৪১ শতাংশ রোগী ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুনঃ রাজনৈতিক সুবিধা পেতেই লকডাউন, কন্টেইনমেন্ট জোনের বদল দাবী দিলীপের
সরকারি ৫৮২ টি কোয়ারেন্টাইনে এখন রয়েছেন ৫০৯০ জন। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১০০০৯৫ জনকে। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩৪৫৯৫ জন। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৩০৯১৩০ জনকে। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যে জানানো হয়েছে, ২১৭২ টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ৯১৭৩ জন শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে। করোনা পরীক্ষা করে সুস্থ দেখে ২৬৪৪১৮ জন শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সেফ হোম ও তার বেড সংখ্যা এবং সেখানে রোগীদের সংখ্যা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজ্যের ১০৬ টি সেফ হোমে ৬৯০৮ টি বেড রয়েছে এবং তাতে ২৭৯ জন রোগী রয়েছেন।
এছাড়া এদিনের বুলেটিনে জেলাওয়াড়ি তথ্যে জানানো হয়েছে, কলকাতায় এদিন ৩২২ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় মোট সংক্রমণ ৮৩৬৮ জনের। এদিন কলকাতায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় কলকাতাতে মোট মৃত্যু ৪৫৭ জনের। এছাড়া এদিন উত্তর ২৪ পরগনায় ৬ জন এবং হাওড়ায় ৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ও দার্জিলিংয়ে ২ জন করে এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিন অন্যান্য জেলার সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনায় ২৬৪ জন, হাওড়ায় ১৬৭ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮৮ জন, হুগলিতে ৫৩ জনের উল্লেখযোগ্য হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিনও উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণবঙ্গের ঝাড়গ্রাম ছাড়া এদিন সংক্রমণ বেড়েছে রাজ্যের বাকি সমস্ত জেলাতেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584