পিয়া গুপ্তা ,উত্তর দিনাজপুরঃ
সারা দেশ ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশে স্বাধীনতার সুখ পেলেও সেই স্বাধীনতার সুখ থেকে বঞ্চিত ছিল বেশ কিছু জায়গা।সেই সময় তখনো স্বাধীনতা সূর্য ওঠেনি দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ,কালিয়াগঞ্জ ,হেমতাবাদসহ বহু জায়গায়।ফলে একরাশ দুঃখ,বেদনা নিয়েই রায়গঞ্জবাসী সহ অন্যান্যদের মধ্যে হতাশার সুর গ্রাস করে ছিল।ঘুমহারা চোখে হঠাৎই খবর আসে মুসলিম লিগ পাকিস্তানের পতাকা বসাতে চলেছে রায়গঞ্জ,কালিয়াগঞ্জ সহ অন্যান্য জেলা গুলিতে।রায়গঞ্জ,কালিয়াগঞ্জ সহ অন্যান্য জায়গা গুলি সেই সময় স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত ছিল।বৃটিশ পতাকার দখলে ছিল রায়গঞ্জ সহ অন্যান্য জায়গা গুলো।”তবে কি বৃটিশদের শাসন থেকে মুক্ত হবে না রায়গঞ্জ”? এই চিন্তা তখন সকলের মুখে মুখে।অবশেষে ১৯৪৭ সালের ১৭ই আগস্ট বাংলা বিভাজনের দায়িত্ব পেল সিরিল র্যাডক্লিফ।বিভিন্ন জনের সাথে মতামত নিয়ে তিনি অবশেষে ঘোষণা করেন দিনাজপুরের ভবিষ্যৎ তিনি জানান দিনাজপুরের ৩০ টি থানার মধ্যে ২০টি থানা পাবে পাকিস্তানে (পূর্ব পাকিস্থান )আর রায়গঞ্জ সহ ১০টি থানা থাকবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।এপারের সেই ১০টি থানার নাম অবশেষে ঘোষণা করা হলো-
বালুরঘাট ,কুমারগঞ্জ ,গঙ্গারাম পুর,কালিয়াগঞ্জ ,তপন,রায়গঞ্জ ,হেমতাবাদ,বংশীহারি ,কুশমণ্ডি ,ইটাহার নিয়ে তৈরি হয় একটি জেলা।১৭ই আগস্ট এই খবর রেডিও মারফত শোনা মাত্রই ,কালিয়াগঞ্জ,রায়গঞ্জ সহ বাকী এলাকার মানুষদের মধ্যে ছড়িযে পড়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস।সকলেই ১৮ আগস্ট সকালে দলে দলে একত্রিত হয়ে ১৮ই আগস্ট দেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করেন।ভারতের পতাকা তুলে ওই দিন ১৯৪৭ সালের ১৮ই আগস্ট কালিয়াগঞ্জ ,রায়গঞ্জ ,হেমতাবাদ সহ সকল থানা গুলো তে পালিত হয স্বাধীনতা দিবস।সেদিন সুকুমার চন্দ্র গুহ,রবীন্দ্রনাথ গুহ র মতো প্রমুখ স্বাধীনতা সংগ্রামীরা বিশাল মিছিল বের করেন।এবং রায়গঞ্জ থানা ও মুন্সেফ কোর্ট থেকে নামিয়ে দেন পাকিস্তানি পতাকা।স্টেশন,কোর্ট সহ সকল চত্বরে সাদা মার্কিন ধুতি,গেরুয়া ও সবুজ রং দিয়ে আঁকা হয়েছিল ভারতীয় পতাকা ও দোয়াতের নীল কালি দিয়ে আঁকা হয়েছিল অশোক চক্র।সেই দিন ১৮ আগস্ট দিনাজপুরের কোণায় কোণায় উড়েছিল ভারতের তেরঙা।এই ভাবেই ১৮ই আগস্টে স্বাধীন লাভ করেছিল দিনাজপুর।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584