পাথর হয়ে যাচ্ছে শরীর! বিরল রোগে আক্রান্ত ৫ মাসের শিশু

0
95

মোহনা বিশ্বাস,ওয়েব ডেস্কঃ

ক্রমশ পাথরে পরিণত হচ্ছে সন্তানের দেহ। সব জেনেও কিছু জানতেই পারেননি বাবা-মা। বিরল রোগে আক্রান্ত ৫ মাসের লেক্সি রবিনস। ৩১ জানুয়ারি ব্রিটেনে জন্মেছিল সে। আর পাঁচটা শিশুর মতো সেও হাসে, লাথি মারে, রাত্রিবেলা ঘুমোয়। কিন্তু ফুটফুটে শিশুটা যে ক্রমশ ‘পাথর’ হয়ে যাচ্ছে, তা টেরই পাননি বাবা-মা। তাঁরা বুঝতেই পারেননি যে লেক্সির শরীরে এত বড় একটা রোগ বাসা বেঁধেছে। ৫ মাসের এই শিশু বিরল রোগ ফাইব্রোডায়াসপ্লাসিয়া অসিফিকানস প্রোগ্রেসিভায় আক্রান্ত। ২০ লক্ষের মধ্যে ১ জনের এই রোগ হয়।

Baby Lexi
ছবি: টুইটার

জন্মের পর থেকেই লেক্সির অস্বাভাবিকত্ব নজরে আসে বাবা-মায়ের। জন্ম থেকেই পায়ের আঙুলগুলো বড় বড় ছিল তাঁর, বুড়ো আঙ্গুলও নাড়াতে পারত না সে। লেক্সির এমন অস্বাভাবিকত্ব দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তাঁর বাবা-মা।

এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ মতো এপ্রিল মাসে লেক্সির এক্স রেও করা হয়। তারপরই শিশুটির এমন একটা সমস্যা ধরা পড়ে, যে ওই সমস্যার জন্য সে কোনও দিন হাঁটতে পারবে না। লেক্সির মা আলেক্স তখনও টের পাননি যে তাঁর ৫ মাসের সন্তান ধীরে ধীরে পাথর হয়ে যাচ্ছে। পরে বেশকিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, লেক্সির পায়ের আঙুলে প্রদাহ রয়েছে। যার কারণেই পায়ের আঙুলগুলো বড়। আর তার বুড়ো আঙুল জোড়ায় রয়েছে বলেই সে তাঁর বুড়ো আঙুল নাড়াতে পারে না।

চিকিৎসকরা জানান, ফাইব্রোডায়াসপ্লাসিয়া অসিফিকানস প্রোগ্রেসিভা রোগে আক্রান্ত হলে কঙ্কালের বাইরে আরও হাড় বাড়তে শুরু করে। যার ফলে আসতে আসতে আক্রান্তের চলন গমন ক্ষমতা হারিয়ে যায়। লিগামেন্ট, পেশি, সব জায়গায় হাড়ের বৃদ্ধির ফলে আক্রান্ত পাথরে পরিণত হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ রজ:স্বলা মহিলাদের কোভিড টিকা না নেওয়ার পরামর্শ, তিনটি জেলা থেকে অভিযোগ

চিকিৎসকদের কথায়, এই বিরল রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। ২০ বছর বয়সে আক্রান্ত শয্যাশায়ী হয়ে যায়। আর ৪০ বছর বয়সের মধ্যেই মৃত্যু। এই রোগের কারণে লেক্সি কোনওদিন ভ্যাকসিন নিতে পারবে না। কোনও দিন কোনও ইঞ্জেকশনও নিতে পারবে না। সে কোনওদিন মা হতে পারবে না, এমনকি তার দাঁতের চিকিৎসাও সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনঃ ৮৫ জন যাত্রী নিয়ে ফিলিপিন্সে ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার বিমান

লেক্সির মা আলেক্স বলেন, “আমাদের প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল, এক্স-রে করার পরে লেক্সির আর হাঁটাচলা করতে পারবে না। আমরা তখন বিশ্বাস করিনি কারণ লেক্সি সেই সময়ে শারীরিকভাবে সুস্থ ছিল এবং পা দিয়ে লাথিও মারত।” আলেক্স আরও বলেন, “লেক্সি এমন একটা রোগে আক্রান্ত হলেও সে শারীরিকভাবে সুস্থই রয়েছে। সারা রাত ঘুমিয়ে থাকে আমার ফুটফুটে শিশুটা। সবসমর লেক্সি হাসিখুশি থাকে। আমরা ওকে এভাবেই আনন্দে রাখতে চাই।”

যদি কোনো মিরাকেল ঘটে আর লেক্সি একেবারে সুস্থ হয়ে যায়, এমন চিন্তাভাবনা নিয়েই আপাতত গবেষণার মাধ্যমে লেক্সিকে বাঁচানোর পথ খুঁজছেন চিকিৎসকরা। এই চিকিৎসার খরচের জন্য ফান্ড তুলে চলছে লেক্সির বাবা-মা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here