নিজস্ব সংবাদদাতা,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
স্কুল হোস্টেলের আবাসিক আদিবাসী ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগে বিক্ষোভের জেরে উত্তাল হয়ে উঠল বালুরঘাটের খাদিমপুর স্কুল পাড়া এলাকা।জানা গেছে গত শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের বালুরঘাট খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় নামক একটি খ্যাতনামা স্কুল চত্বরে ফুটবল খেলছিল খাদিমপুর এলাকার কিছু কিশোর এবং যুবকরা।সেই সময় তাদের মোবাইল হারিয়ে যায়।অভিযোগ এরপরেই ঐ কিশোর এবং যুবকরা মোবাইল চুরির সন্দেহে বালুরঘাটের খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর আবাসিক ছাত্র দুর্জয় হাসদাকে(নাম পরিবর্তিত) মারধোর করে।আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই ক্ষুদে পড়ুয়াকে মারধোর করার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে বিগত কয়েকদিন ধরে ক্ষোভের পারদ চড়ছিল।
বর্তমানে ঐ ছাত্র বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।মঙ্গলবার সকাল হতেই সেই ক্ষোভ স্ফুলিঙ্গের রুপ নেয়। খাদিমপুর সংলগ্ন এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষরা আম পাতা ঘুরিয়ে ধামসা বাজিয়ে একত্রিত হতে শুরু করে।উত্তেজনা আচ করতে পেরে এদিন সকাল থেকেই খাদিমপুর স্কুল পাড়া এলাকায় প্রচুর পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার্স মোতায়েন করে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ।এরপর আদিবাসী পুরুষ মহিলারা তীর ধনুক, বল্লম, দা, কুঠার, পশুকুড়াল,লাঠি নিয়ে একত্রিত হয়ে বালুরঘাট খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়।এরপর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশের সামনে আদিবাসীরা নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেয়।বিক্ষোভকারী শিবানী মার্ডি অভিযোগ করে বলেন ছাত্রটিকে মারধোর করা হয়েছে এবং তিন তলা থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।এর পাশাপাশি ঘটনায় স্কুলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আমরা কাদের ভরসায় স্কুলে রেখে আসছি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন।এরই মধ্যে অপরদিক থেকে আদিবাসী মহিলাদের একটি দল হাতে দা, লাঠি,আমের ডাল নিয়ে খাদিমপুর এলাকা ঘিরে ফেলে।এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে যান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিষ নন্দী,ডি.এস.পি ধীমান মিত্র, এস.ডি.পি.ও বিপুল ব্যানার্জী এবং বালুরঘাট থানার নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক জয়ন্ত কুমার দত্ত।পুলিশ আধিকারিকদের তৎপরতায় পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলে আদিবাসীদের ৫ জন প্রতিনিধি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনায় বসে।বালুরঘাট খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম ঘোষ বলেন স্কুল ছুটির পরে স্কুল চত্বরে প্রতিদিন ফুটবল খেলে স্কুলের ছাত্ররা এবং এলাকার যুবকরা। কিন্তু এরপূর্বে কোনদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি।শনিবার দুর্জয় হাসদা-র পরিবারের সদস্যরা আমাকে বিষয়টি জানায়।এর পাশাপাশি তিনি এও জানান তিনি মৌখিকভাবে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন।স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনার পর আদিবাসীরা ফিরে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ছাত্রকে মারধোরের ঘটনায় পুলিশ এখনো পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করেছে।এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে এবং যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশের টহল অব্যাহত।
আরও পড়ুনঃ পথ দুর্ঘটনার কবলে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584