সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়া, অসুস্থ ছাত্রীর পাশে শিক্ষক

0
34

শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

দিন আনা দিন খাওয়া এক দুঃস্থ অসহায় পরিবারের একটি আট বছরের অসুস্থ মেয়েকে সুস্থ করে তোলবার ব্যাপারে সারা বছরের ওষুধের খরচের যাবতীয় আর্থিক সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিল এক সহৃদয় শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের শান্তিময় ঘোষ কলোনী পাড়াতে।

Help | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

শান্তিময় কলোনীর বাসিন্দা গোপাল সরকার। আখের রস পেসাই করে রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি করাই যার একমাত্র পেশা। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের জেরে সেই আখের রস বিক্রি বন্ধ হওয়ায় পরিবার নিয়ে দিন গুজরান করাই তার দায় হয়ে পরে। অথচ ঘরে তার অসুস্থ আট বছরের মেয়েকে সুস্থ রাখার জন্য মাসে ১২০০ টাকার ওষুধ প্রয়োজন। একদিকে লকডাউনের জেরে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার নিয়ে জীবন চালানো দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্য দিকে তখন ওষুধ কিনতে না পেরে মেয়েকে অসুস্থ রাখাই তাকে ধীরে ধীরে অসহায় করে তুলেছে। তার এই অসহায়তার কথা জানতে পেরে এক যুবক সোশ্যাল মিডিয়াতে মেয়েটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানোর আবেদন জানায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই পোস্ট দেখতে পেয়েই ওই অসুস্থ মেয়েটিকে সুস্থ করে তোলবার জন্য তার ওষুধের যাবতীয় ব্যায়ভার নিজের কাঁধে তুলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বালুরঘাট শহরের এক শিক্ষক, সৌগত চক্রবর্তী।

আরও পড়ুনঃ সবুজ বাঁচাতে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি যুব তৃণমূলের

“যাঁরা প্রতিদিন রোজগারের আশায় বাড়ির বাইরে যান, এই লকডাউনে তাদের সমস‌্যা হতে পারে। তবে তাদের সমস‌্যা মেটানোর জন‌্য যারা মাস শেষে বেতন পাই, তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের বেতন থেকে কিছুটা সাহায‌্য এই সময় সেই ব‌্যক্তিদের করতে হবে যারা লকডাউনের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। চরম বিপাকে পড়েছেন দুঃস্থ দরিদ্র মানুষেরা। মানুষ এখন ঘোর বিপদের মধ্যে পড়েছেন। তাদের পাশে থাকাটাই আমাদের কর্তব্য।” এই মনোভাব থেকেই সৌগত চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়ানো।

আরও পড়ুনঃ খুলে গেল আন্তর্জাতিক ভারত – বাংলাদেশের হিলি স্থল সীমান্ত

তিন বছর আগে গোপাল সরকারের মেয়ে গোলাপী সরকারের মাথায় নারকেল পড়ে মাথার হাড় ভেঙে যায়। তাকে অপারেশন করে সুস্থ করা হলেও তারপর থেকে ১২০০ টাকা দামের ওষুধ প্রতি মাসে খেতে হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে খবর জেনে গতকাল রাত্রে তাদের সাহায্য করবার জন্য স্কুল শিক্ষক সৌগত চক্রবর্তী তাদের কাছে মেয়েটির ৬ মাসের ওষুধ কিনে তাদের হাতে তুলে দিলেন। পাশাপাশি আগামী এক বছরের ওষুধ কিনে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন ওই শিক্ষক। এছাড়াও মেয়েটির হাতে তিনি কিছু উপহারও তুলে দেন যা পেয়ে খুশি ছোট্ট গোলাপী।

শিক্ষকের উক্তি “অত‌্যন্ত কঠিন সময়ের মধ‌্য দিয়ে চলছি আমরা। সবাই মিলে টিম হিসেবে না লড়লে এই ম‌্যাচ জিততে পারব না।আপনার কাছাকাছি অন্তত একজন মানুষকেও এই বিপদের সময় সাহায‌্যের হাত বাড়িয়ে দিন। এভাবে সবাই সাহায‌্যের হাত বাড়ালে দেখবেন, পুরো সমাজেই তার প্রভাব পড়ছে। আর এভাবেই এই কঠিন সময়ে সবাই একসঙ্গে লড়াই করতে পারবে।” উই শ্যাল ওভার কাম…

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here