শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
স্বামীর কোনও কাজ না থাকায় যৌনকর্মী বান্ধবীর সূত্রেই শোভাবাজারে এসে যৌনপেশায় যোগ দিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার তরুণী।কিন্তু নিজের কাজের সুবিধার জন্য তিন বছরের মেয়েকে বান্ধবীর কাছে রেখেছিলেন তিনি। মেয়ের দেখভালের জন্য প্রতি মাসে টাকাও দিতেন বলে দাবী তরুণীর।
অভিযোগ, সম্প্রতি মেয়েকে নিজের কাছে আনতে চাইলে সেই বান্ধবী বেঁকে বসেন। তার কাছে ৪ লক্ষ টাকা দাবী-সহ বাচ্চা বিক্রির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। শেষমেশ শনিবার লালবাজার উইমেন্স গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানান ওই তরুণী।
কিন্তু অভিযোগ করার পরেও বিপদ কাটেনি ওই তরুণীর। অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় তরুণীর ভাড়া বাড়িতে ওই ক্লাবের ছেলেরা ফের চড়াও হয়। তরুণী ফের ফোনে উইমেন্স গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানালে পুলিশ দুই যুবককে আটক করে। তাদের জেরা করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
আরও পড়ুনঃ আনন্দপুরে সদ্যোজাত সন্তানকে খুন, ৬ মাস পর স্বীকার করে গ্রেফতার মা!
জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণী তরুণী উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বিয়ের পরে তিনি জানতে পারেন, স্বামীর সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ততদিনে তিনি সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েছিলেন। এদিকে স্বামী কোনও কাজ করতেন না। এর মধ্যে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন এই তরুণী। এদিকে পারিবারিক তিক্ততা চরমে পৌঁছলে ওই তরুণী স্বামীকে ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরে আসেন।
২০১৯ সালে কলকাতায় কাজ করতে চলে এলেও কোন কাজ পাচ্ছিলেন না তিনি। এর পরে তাঁর পরিচিত ওই অভিযুক্ত তরুণীর সঙ্গে তিনি শোভাবাজার এলাকায় যান। সেখানে তিনি প্রথমে একটি হোটেলে পরিচারিকার কাজ করতেন। পরে ওই তরুণী বুঝতে পারেন, এলাকাটি যৌনপল্লি। তাঁর বান্ধবীও যৌনকর্মীর কাজ করেন। পেটের তাগিদে নিজেও একটি ঘর ভাড়া নিয়ে এক সময়ে অভিযোগকারিণী যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।
আরও পড়ুনঃ পোলক স্ট্রিটে বিধ্বংসী আগুন, নিয়ন্ত্রণে ২২টি ইঞ্জিন, উদ্ধার ব্যক্তি
ওই তরুণী জানিয়েছেন, প্রথম দিকে আয়ার কাছে মেয়েকে রাখতেন তিনি। কিন্তু তাঁর বান্ধবী জানান, যৌনপল্লিতে শিশুকে রাখা ঠিক হবে না। শিশুটিকে নবদ্বীপে নিজের গ্রামের বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন অভিযুক্ত। ওই তরুণী রাজি হয়ে যান। ৮ মাস আগে তিনি নবদ্বীপে মেয়েকে রেখে আসেন। মেয়ের দেখভালের জন্য প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকাও বান্ধবীর হাতে তুলে দিতেন বলে দাবি তরুণীর।
গত মার্চ মাসে তরুণী মেয়েকে ফের নিজের কাছে রাখতে চান। কিন্তু অভিযোগ, তারপরেই ওই তরুণীকে চার লক্ষ টাকা দাবি সহ বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে থাকে তার বান্ধবী। তিনি পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা বললে স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরাও তাঁকে হুমকি দেয়।
স্থানীয় বিধায়ক এবং রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। চাইল্ড লাইন এবং শিশু সুরক্ষা কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে দ্রুত মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।‘ কেন ওই তরুনীর বান্ধবী শিশুটিকে ফেরত দিতে চাইছেন না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584