নিজস্ব প্রতিবেদন, নিউজ ফ্রন্টঃ
প্রায় সবকটি বুথফেরত সমীক্ষার ফলই মিলে গেল পাঞ্জাবের নির্বাচনের ফলের ক্ষেত্রে। বিপুল জয় পেয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি। এমনভাবার কোন কারণ নেই যে পাঞ্জাবে আপের জয়ের পথ খুব সুগম ছিল। পাঞ্জাবের নির্বাচনে কংগ্রেস, শিরোমণি অকালি দল, বিজেপি এমন সব প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে কেজরিওয়ালের দলকে। এই এতগুলি সর্ব ভারতীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় ছিনিয়ে আনা মোটেই সহজ ছিল না আপের মত একটি আঞ্চলিক দলের পক্ষে।
তাহলে আপের এই ঝাড়ু ম্যাজিক ঘটলো কিভাবে! আপের এই বিপুল জয়ের পিছনে কাজ করেছে বেশ কিছু কারণ—
১) কৃষক আন্দোলনের প্রভাবঃ কৃষক আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও কৃষক আন্দোলনের ফসল তুলতে পেরেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিন বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে মূল আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন যারা তাদের সবথেকে বড় অংশ হল পাঞ্জাবের কৃষকরা। অন্যদিকে দিল্লির একটা বড় অংশের বাসিন্দা পাঞ্জাবীরা। দিল্লির আপ সরকারের কাজে তাঁরাও যথেষ্ট সন্তুষ্ট। সেদিক থেকে বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে পাঞ্জাবের মানুষ ভরসা রেখেছেন ঝাড়ুতে।
২) পরিবর্তনের মুখঃ পাঞ্জাবে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকেছে প্রকাশ সিং বাদলের শিরোমণি অকালি দল। আবার সেই অকালি দল বেশ কয়েকবছর জোটেও ছিল বিজেপির সঙ্গে। কাজেই পাঞ্জাবের মানুষের বিজেপি বিরোধী ভোট যে আর অকালি দলের ঝুলিতে যাবে না তা বলা-ই বাহুল্য। তাহলে পড়ে থাকলো কংগ্রেস , কিন্তু কংগ্রেসও ২০১৭ থেকেই পাঞ্জাবের ক্ষমতায় ছিল। তাতে সরকার পরিচালনায় দক্ষতার থেকে ঢের বেশি দেখা গিয়েছে তাদের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। এই পরিস্থিতিতে হয়ত সামগ্রিকভাবে একেবারে আনকোরা মুখ খুঁজেছেন পাঞ্জাবের মানুষ, তাই আপ-কে সুযোগ দেওয়া।
৩) দিল্লি মডেলঃ দিল্লিতে সরকারি স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটিয়ে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া,উন্নত সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ‘মহল্লা ক্লিনিক’ মডেলের সাফল্য। এছাড়াও বিদ্যুৎ ও জলের মত গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার একাধিকবার পাঞ্জাবের প্রচারে তুলে ধরেছেন কথা তুলে ধরেছিলেন কেজরিওয়াল। আর এর প্রতিটি-ই পাঞ্জাবে খরচ সাপেক্ষ। তাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা মূলত বেসরকারি ক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল। স্বাভাবিক ভাবেই কেজরিওয়ালের ‘দিল্লি মডেল’ অনেকটাই গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে পাঞ্জাবের আম জনতার কাছে।
৪) দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারে সাফল্যঃ ভোট প্রচারে বারে বারে দুর্নীতিকে আগাগোড়া উপড়ে ফেলার কথা সোচ্চারে বলেছেন কেজরিওয়াল। মহিলা ও তরুণ ভোটারদের একটা বড় অংশ এই বিষয়ে ভরসা রেখেছে কেজরিওয়ালের প্রতি। ভোটবাক্সে তারই প্রতিফলন হয়েছে। আর পাশাপাশি পাঞ্জাবের সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে আপ সাংসদ ভগবন্ত মান-কে তুলে ধরা। প্রাক্তন কমেডিয়ান ভগবন্ত মান একেবারেই পাঞ্জাবের ভূমিপুত্র এবং তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে আপ-কে।
আরও পড়ুনঃ “পুরুষের রাজ্য তাই ধর্ষণে এক নম্বরে”, রাজস্থানে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মন্তব্য মন্ত্রীর
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584