মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
দীর্ঘ আটমাস পরে দুই বান্ধবী পেল গৌরী ও কালী। কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার রসিকবিলের এনক্লোজারে ছাড়া হয় রিমঝিম ও গরিমা নাম দুই চিতাবাঘকে।বনদপ্তর সুত্রে জানা যায়,রসিকবিলে চারটি চিতাবাঘ ছিল তাঁরা যথাক্রমে গৌরী,কালী,কাজল এবং শীতল।তাদের মধ্যে গত জুন মাসে ওই চারজনের মধ্যে কাজল এবং শীতলকে শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারিতে নিয়ে যাওয়া হয়।তখন থেকে বান্ধবীদের চলে যাওয়ার ব্যাথায় মনভার করে রয়েছিল গৌরী ও কালী।
আর ওই দুজনের কথা ভেবে বনদপ্তর দক্ষিণ খয়েরবাড়ি থেকে রিমঝিম এবং গরিমা নামে দুই চিতাবাঘকে কোচবিহারে রসিকবিলে এনক্লোজারে নিয়ে যাওয়া হয়। ফের নতুন করে দুই সঙ্গিনী আসার ফলে কার্যত খুশি গৌরী ও কালী। আবার রসিকবিলে চার চিতাবাঘ আসায় পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন।
আরও পড়ুনঃ খাঁচাবন্দী হয়েছে চিতা,এবার দাড়ি কাটবেন বিশ্বজিৎ
সম্প্রীতি বেঙ্গল সাফারির এনক্লোজার টপকে চিতাবাঘ পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। আর তারপর থেকে রাজ্যের এনক্লোজার গুলির নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে বনদপ্তরের কর্মকর্তারা। বেঙ্গল সাফারির ঘটনার পর কোচবিহারের তুফানগঞ্জ মহকুমারের রসিকবিলে চিতাবাঘের এনক্লোজারও সংস্কার করা হয়। বনদপ্তরের নির্দেশে অনুয়ায়ী চিতাবাঘের এনক্লোজারের উত্তর-পূর্বের দুর্বল নেট চিহ্নিত করে মেরামত করা হয়। চিতাবাঘের এনক্লোজার পরিকাঠামো সম্পূর্ণ সংস্কার করার পরে নতুন ওই দুই সঙ্গিনীকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয় রসিকবিলে।
তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি স্বপন সাহা বলেন, ‘ চিতাবাঘ গুলি রসিকবিলের পর্যটন কেন্দ্রের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। ফলে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।’ চিতাবাঘ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বনকর্মীরা জানিয়েছেন, ওদের শরীর গরম রাখতে প্রতিদিন ৫ কেজি মাংস দেওয়া হবে।
কোচবিহারের তুফানগঞ্জের রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষ তো বটেই অসমের মানুষদের কাছেও আকর্ষণীয়। চিতাবাঘের টানেই সারা বছর প্রচুর পর্যটক আসেন এখানে। এনক্লোজারের ভেতরে আছে বেশ কয়েকটি শিমুল গাছ। কালী ও গৌরীকে কখনও গাছের ডালে, কখনও আবার অস্থায়ী গুহাতে দেখে খুশি হতেন পর্যটকরা। কাজল ও শীতলতে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারিতে নিয়ে যাওয়ার পর কিছুদিন মনমরা হয়ে ছিল তারা। আপাতত নতুন দুই বান্ধবীকে পেয়ে ফের তারা নিজেদের ছন্দে ফিরবে বলে মনে করছেন বনদপ্তরের কর্তারা।
প্রসঙ্গত,১৭০০ হেক্টরের বেশি জমিতে রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে বাম আমলে। আটিয়ামোচর, রসিকবিল ও নাগুরহাট এই তিনটি বিট ঘিরে তৈরি হয় এই প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। জলাশয় সংস্কারের পর তুলনায় বেশি দেখা মিলেছে লেসার হুইসলিং, পোচার্ড ও সরাল-সহ নানা পাখির৷ এছাড়া বিভিন্ন এনক্লোজারে চারটি চিতাবাঘ, পঞ্চাশের বেশি হরিণ, জলাশয়ে প্রায় দশটি কুমির ও ঘড়িয়াল রসিক বিলের বাড়তি আকর্ষণ৷
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584