নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে বিহারে, পুরোদমে প্রচারে মাঠে নেমে পড়েছে জেডিইউ-বিজেপি-এলজেপি, দেখা নেই বিরোধী শিবিরের। প্রার্থী ঘোষণা তো দূরের কথা, এখনও আসন রফাই চূড়ান্ত করে উঠতে পারেনি আরজেডি-কংগ্রেস ও তাদের সহযোগী দলগুলো। এদিকে প্রচারে সময় কমে আসছে। যা চিন্তা বাড়িয়েছে বিরোধীদের।
বিহার ভোটে বিরোধী শিবিরের চিন্তা বাড়িয়ে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস সূত্রের খবর, বিরোধী ভোটে থাবা বসাতে পারে এই দল, আর তাতেই চওড়া হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের হাসি।
বিরোধী দলের নীচু তলার নেতাদের ধারণা, শাসক বিরোধী হাওয়া রয়েছে এবার বিহার ভোটে। সেটাকেই কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর তাঁরা। তবে এখনো প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় সেই সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যাবে সেই নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। পারস্পরিক আস্থার অভাবেই বিরোধী জোট দানা বাঁধতে পারছে না।
আরও পড়ুনঃ করোনা আবহেই বিহারে তিন দফার নির্বাচন শুরু ২৮ অক্টোবর থেকে
মুঙ্গের অঞ্চলের একটি কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে দাঁড়াতে আগ্রহী এক নেতার কথায়, “মুঙ্গেরে মুসলিম বা যাদব ভোট কম। তবুও আমি এখান থেকেই ভোটে প্রার্থী হতে চাই। এলাকায় এলাকায় গিয়ে দেখছি মুসলিমরা ছাড়াও হিন্দুদের ও বিজেপি-জেডিইউ এর প্রতি আস্থা কমেছে।
অর্থনৈতিক মন্দা, বন্যা ও পড়ুয়াদের মনে ব্যাপক ক্ষোভকে কাজে লাগাতে হবে। পাঞ্জাব, হরিয়ানার মতো না হলেও কৃষি বিল ঘিরে চাষীদের মনে সন্দেহ তৈরি হতে শুরু করেছে। কিন্তু নেতারা এখনও কোন আসন বন্টনের ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত দেননি। ফলে সময়কে কাজে লাগাতে পারছি না আমরা। যেটা চিন্তার বিষয়।“
আরও পড়ুনঃ ছত্রধরকে ১১ বছরের পুরনো প্রবীর হত্যা মামলায় হেফাজতে নেওয়ার আবেদন এনআইএ-র
বিরোধী দলগুলোর একে অপরের প্রতি অবিশ্বাসই মূলত আসন রফায় সমস্যা তৈরি করছে। মহাজোটের সদস্য দলগুলো মনে করছে জোট বেঁধেই এনডিএ শিবিরকে ধরাশায়ী করা যাবে। কিন্তু, বাম, উপেন্দ্র কুশওহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএসএলপি) ও বিকাশশীল ইনশান পার্টি (ভিআইপি) মনে করে বিহারে কংগ্রেসের কোনো দৃঢ় ভিত্তি নেই। অন্যরা আবার মনে করছে বামেরা বিলুপ্তপ্রায়- তাই ওদের সঙ্গে নিয়ে চলা অর্থহীন।
আরও পড়ুনঃ জিএসটি ক্ষতিপূরণের অর্থ অন্যত্র খরচ করেছে কেন্দ্র- ক্যাগের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
ওদিকে বড় দুই শরিক আরজেডি ও কংগ্রেসের অনেক নেতার মতে, আরএসএলপি ও ভিআইপি দলের ভোট জোটের ইভিএমে প্রতিফলিত হবে না। ওই দুই দলের প্রার্থী জিতলেও পরে তারা জোট ছাড়তে পারেন। ফলে সমস্যা গভীরতর হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি আসন রফা করে প্রার্থী ঘোষণার ঝুঁকি নিতে রাজি নয় মহাজোট নেতৃত্ব।
এই হলো বিরোধী জোটের চিত্র। কিন্তু, বিহারের সীমানা এলাকায় ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, যথেষ্ট জনভিত্তি তৈরি হয়েছে এই দলের। কোনও কোনও কেন্দ্রে এনডিএ-এর মূল লড়াই তাদের সঙ্গেই। যা ঘিরে কপালে চিন্তার ভাঁজ আরজেডি-কংগ্রেস-বাম নেতাদের।
এক আরজেডি নেতার কথায়, ‘কিষাণগঞ্জ উপনির্বাচন জেতার পর থেকেই এআইএমআইএম-এর ভিত্তি মজবুত হতে শুরু করেছে। ওরা বলেছে ৫০ আসনে প্রার্থী দেবে। প্রধানত বিরোধী ভোট কাটবে ওরা। তাই আমাদের অবিলম্বে প্রচারে ঝাঁপানো উচিত।’
তবে, সুযোগ ছাড়তে রাজি নয় কংগ্রেস-আরজেডি। নেতাদের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় প্রচার শুরু হতে চলেছে শীঘ্রই। প্রার্থী তালিকাও চূড়ান্ত হতে চলেছে খুব শীঘ্র। তবে, গেরুয়া বাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলার পাশাপাশি মহাজোটের শরিক দলগুলোর এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ এআইএমআইএম।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584