নিজস্ব প্রতিবেদক,কলকাতাঃ
ড. হুমায়ুন কবীর পরিচালিত ‘আলেয়া’ চলচ্চিত্রের প্রডিউসারের উদ্যোগে আজ দাওয়াতে-ই-ইফতার ও স্কলারশিপ প্রদান অনুষ্ঠান হয়ে গেল পার্কসার্কাস হজ হাউসে। ডাক্তারি পড়ছে এমন গরিব ১০ জন ছাত্রীকে সাত হাজার সাতশত ছিঁয়াছি টাকা করে স্কলারশিপ প্রদান করল “আলেয়া” প্রডাকশন হাউস। এই অনুষ্ঠানে সমাজসেবী সাজাহান বিশ্বাস, আল-আমীন মিশনের সম্পাদক সেখ নরুল ইসলাম, আইএএস অফিসার সেখ নরুল হক, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, রাজ্যসভার সাংসদ নাদদিমুল হক ও আহমেদ হাসান ইমরান, সমাজসেবী জাহাঙ্গীর আলম সাহেব সহ “আলেয়া” চলচ্চিত্রের প্রডিউসার প্রদীপ চুঁড়িয়াল, নায়িকা তনুশ্রী চক্রবর্তী ও পরিচারক তথা পুলিশ আধিকারিক ড. হুমায়ুন কবীর সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
গ্রাম বাংলার প্রান্তিক পরিবারের কন্যারা চিকিৎসক হওয়ার পথে মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগর থানার নাজির পুরের নিলুফা ইয়াসমিন ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখত ডাক্তার হওয়ার। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সে আজ নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ওই জেলার লালগোলা থানার ভগবানপুর গ্রামের প্রয়াত সাইদুল ইসলামের কন্যা পায়রা খাতুন কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বেলডাঙা ব্লকের দেবকুন্ডু গ্রামের নাহিদা খাতুন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। ফরাক্কার মহাদেবনগরের প্রয়াত নুরুল আলমের কন্যা মিমি খাতুন কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালের প্রথম বর্ষে পাঠরত। হরিহরপাড়ার খিদিরপুরের নাসরিন সুলতানা কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। বর্ধমান জেলার বানেশ্বরপুর গ্রামের প্রয়াত শেখ নজর আলির কন্যা মেহেরুন্নেসা খাতুন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। এই জেলারই সোনাডাঙার রুবিনা খাতুন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ব্লকের ডিহি কলস গ্রামের মহম্মদ আব্বাস আলি গাজির কন্যা রাকিবা সুলতানা কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষে পাঠরত। বীরভুম জেলার মুরারই থানার হামিদপুর গ্রামের হেলিনা খাতুন এন আর এস মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছত্রী। হুগলী জেলার গোঘাট থানার তানরুই গ্রামের রিজিয়া পারভিন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। এরা সকলেই অতি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এমবিবিএস-এর ছাত্রী। এদের পরিবারে এরাই প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার হতে চলেছে। পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক সংখ্যালঘু পরিবারের এই সব মেয়েরা নিজেদের অদম্য জেদ ও অধ্যাবসায়কে সম্বল করে সাফল্য অর্জন করেছে। এদের কারও বাবা সামান্য কৃষক, ছোট ব্যবসায়ী এবং পিতৃহীন পরিবারে বিধবা মায়ের আপ্রাণ চেষ্টায় তারা এতদূর এগিয়ে এসেছে। এ-প্রসঙ্গে অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় আল-আমীন মিশনের কথা ও জিডির কর্ণধার মোস্তাক হোসেন আর “ভয়েস” এর প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজসেবী সাজাহান বিশ্বাস-এর অবদানের কথা বাংলার মানুষ ভুলবে না। এই প্রতিষ্ঠানের তরফে পিছিয়ে পড়াদের আধুনিক শিক্ষা স্রোতে আনার উদ্যোগ অবশ্যই প্রসংশনীয়। এই সব ছাত্রীদের সামান্য ফিজ বা একেবারে নামমাত্র ফীজে আবাসিক হিসেবে ভর্তি করিয়ে তাদেরকে ডাক্তারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করানোর প্রক্রিয়া বিদ্যমান। এই ১০ জন মুসলিম দরিদ্র ডাক্তারি পড়ুয়াকে ড. হুমায়ুন কবীর উদ্যোগ নিয়ে আলেয়া প্রডাকশন হাউস থেকে স্কলারশিপ দিলেন আজ বুধবার পার্কসার্কাস হজ হাউসে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584