পুলিশের তরফে লাঠিচার্জ-টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ, রণক্ষেত্র জামিয়া মিলিয়া-সহ আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়

0
44

নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ

রবিবার দিল্লির রাস্তায় ক্যাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-সহ বিক্ষোভকারীরা বিকেল ৫ টার দিকে দক্ষিণ দিল্লির একটি পাড়ায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

পুলিশের তরফ থেকে বিক্ষোভকারীদের আয়ত্তে আনার জন্য টিয়ার গ্যাস ছোঁড়া হয়, ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি প্রাইভেট গাড়ি এবং তিনটি বাস।

এদিকে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমরা বারবার বজায় রেখেছি যে আমাদের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস। আমরা এই পদ্ধতির পাশে দাঁড়িয়ে সহিংসতায় জড়িত যে কোনও পক্ষের নিন্দা জানাই।”

সবকিছুর শেষে। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স।

পুলিশের তরফে বিক্ষোভকারীদের প্রতি অভিযোগ, তারা পুলিশের দিকে ভারি পরিমাণে পাথর, ইঁট নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি মাজিদ জামিল, দ্য ওয়্যারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানান, পুলিশের তরফে থেকে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আনা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চারিদিকেই লোকালয়। তাই বাইরে থেকে ইঁট, পাথর জোগাড় করে এনে, ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে তা পুলিশের দিকে নিক্ষেপ করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।

বিক্ষোভকারীদের ভিড়। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

সন্ধ্যা ৭ টার দিকে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভবনের অভ্যন্তরে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল দেখায় এমন ভিডিও প্রকাশ হতে শুরু করে। অন্যান্য ভিডিওতে পুলিশ ছাত্রদের মারধর করার বিষয়টি দেখায়।

একটি জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান এএনআইকে বলেছেন, পুলিশ কোনও অনুমতি ছাড়াই বলপূর্বক ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে।

জামিয়া মিলিয়ায় আহত শিক্ষার্থী। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

আমাদের কর্মীরা এবং শিক্ষার্থীদের মারধর করা হচ্ছে এবং তাদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। কিছু ছাত্রকে কালকাজি থানায় আটক করা হয়েছিল, যেখানে তাদের আইনজীবীদের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি মাজিদ জামিলের তরফে জানা যায়, প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

সারিবদ্ধ প্রশাসন। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

লাঠিচার্জ ও মারধর করায় প্রায় ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি। পাশাপাশি আরও জানা গেছে, অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ লাইব্রেরিতে ঢুকে সেখানে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।

এদিকে এ এন আই সূত্রে আরও জানা গেছে, বিবিসি-র এক সাংবাদিক বুসরা সেখ জামিয়া মিলিয়াতে স্টোরি কভার করতে এসে পুলিশের হাতে হেনস্থার শিকার হন। সেই মহিলা সাংবাদিকের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়। একজন পুরুষ পুলিশ তার চুল টানে, লাঠি দিয়ে আঘাত করে; এর পরে ওই মহিলা তার ফন ফেরত চাইলে তাকে চরম হেনস্থার মুখে পড়তে হয়।

প্রতিবাদে অটুট। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

অন্যদিকে টুইটারে পোস্ট করা একটি ভিডিও থেকে জানা যায়, জামিয়া মিলিয়ার বাইরে দিল্লি পুলিশ পেট্রোল ঢেলে নিজেরাই বাস জ্বালিয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীদের উপর বাস জ্বালিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর কুৎসা রটাচ্ছে।

অন্যদিকে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবিটাও এরকমই।

আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশ টিয়ার গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করে।

আন্দোলনকারীদের রুখতে। চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

জামিয়ার অভ্যন্তরে পুলিশের সহিংসতার প্রতিবাদে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন রাত ন’টায় দিল্লি পুলিশ সদরের বাইরে বিক্ষোভের ডাক দেয়।

নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনের বিরুদ্ধে শত শত জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস থেকে সংসদ ভবনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করার দু’দিন পরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

চিত্র সৌজন্যঃ রয়টার্স

শুক্রবার কমপক্ষে ৫০ জন প্রতিবাদকারীকে আটক করা হয়েছিল এবং বেশ কয়েকটিকে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here