শুভশ্রী মৈত্র, ওয়েব ডেস্কঃ
বিজেপি কর্মীদের ‘রক্তচক্ষু’র সামনে কার্যত পালিয়ে বাঁচলেন নাট্যকর্মীরা, প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও নাটকের বক্তব্য বিজেপি বিরোধী, দলের বিরুদ্ধে কুৎসা এইসব অভিযোগ তুলে একটি নাটক মাঝপথে বন্ধ করে দিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তাদের ‘রক্তচক্ষু’র সামনে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কার্যত পালিয়ে বাঁচলেন। শনিবার এমনই অভিযোগ উঠল বাসন্তীতে।
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ থিয়েটার সেন্টারের উদ্যোগে শনিবার বাসন্তীতে থিয়েটার সেন্টার লাগোয়া মাঠে নাটক করতে গিয়েছিল ‘জন গণ মন’ নামে একটি সংগঠন। নাটকের নাম— ‘ইঁদুরকল’। মঞ্চের আশপাশে সিএএ-এনআরসি, নয়া কৃষি আইন বিরোধী পোস্টার-ফ্লেক্স লাগানো হয়েছিল। বিকেলে নাটক শুরুর আগে বিজেপি নেতা এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ হালদার ও এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যরা সেখানে চড়াও হন। পোস্টার, ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেন বিজেপি কর্মীরা।তা সত্বেও ওই পরিস্থিতিতেই শুরু হয় নাটক।
আরও পড়ুনঃ দ্বিতীয় দফার ভোটে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর ফ্রি হ্যান্ড কেন্দ্রীয় বাহিনীকে
অভিযোগ, নাটক কিছুটা এগোতেই ফের ওই যুবকদের হুমকি শুরু হয়। তাদের বক্তব্য , নাটকের গানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অপমান করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা করা হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে তারা মারমুখী হয়ে ওঠে। নাট্যকর্মীদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ফলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়ে নাটক বন্ধ করে দেন নাট্যকর্মীরা। দর্শকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নাট্যকর্মীরা স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। নাটকের দলে কয়েকজন মহিলাও ছিলেন।তাঁরা জানিয়েছেন, ভোরবেলা কার্যত লুকিয়ে পালিয়ে কলকাতা ফিরতে বাধ্য হন তাঁরা। রবিবারেও একটি নাটক করার কথা ছিল তাঁদের, সেটি বাতিল করা হয়। রবিবার নাট্যকর্মী শুভঙ্কর দাশশর্মা বলেন, ‘‘এই ধরনের নাটক পশ্চিমবঙ্গের কোথাও করা যাবে না বলে হুমকি দেওয়া হয় আমাদের। আতঙ্কে সারারাত জেগে কাটিয়েছি সবাই।’’
আরও পড়ুনঃ ভোট চলাকালীন ফের দলবদল, তিন আইএসএফ নেতা যোগ দিলেন তৃণমূলে
তাঁর সঙ্গী অমিত সাহা বলেন, ‘‘সবাই এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে,থানায় যাওয়ারও সাহস হয়নি।’’নাটক বন্ধ করে দেওয়ায় অবশ্য কোনও অন্যায় দেখছেন না পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ হালদার। তিনি বলেন, ‘‘ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে অনুমতি ছাড়া কী ভাবে নাটকের নামে বিজেপি বিরোধী প্রচার করেন ওঁরা? নাটকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বিরুদ্ধে ভুল বোঝানো হচ্ছিল।
সেই কারণেই ‘গ্রামবাসী’ একজোট হয়ে বাধা দিয়েছেন।’’ প্রশ্ন উঠছে এই মারমুখী ‘গ্রামবাসী’ দের আক্রমনের মুখে নাট্যকর্মীদের বাঁচাতে স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা কি শুধুই নির্বাক দর্শকের? অভিযোগ না পেলে কি পুলিশের একেবারেই কোনো দায়িত্ব বর্তায়না নাগরিকদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার?
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584