সিএএ,এনআরসি নিয়ে অভয় জোগাতে দার্জিলিঙে মমতা

0
38

নিজস্ব সংবাদদাতা, দার্জিলিংঃ

দার্জিলিংয়ে সিএএ- র বিরুদ্ধে মেগা র‌্যালি করার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন এক সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন যেখানে তিনি সিএএ-র বিরুদ্ধে পাহাড়ের সমস্ত বাসিন্দার সম্মিলিত সমর্থন পেয়েছিলেন।

তিনি ভারতের নাগরিক হিসাবে সকল ধর্ম, ভাষাতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য ও গোষ্ঠীর মানুষদের অভয় দিয়ে বলেন ধর্ম বা জাতের বিচারে কোনও রাজনৈতিক দলের দেশবাসীর মধ্যে বিভাজন ও সহিংসতা তৈরি করতে তিনি দেবেন না।

Mamata Banerjee | newsfront.co
পাহাড়ি রাস্তায় একতারা হাতে নিয়ে মমতা। নিজস্ব চিত্র

এই সমাবেশে জিজেজেএম নেতা বিনয় তামাং ও অনিত থাপা, এআইটিসি নেতা শান্ত ছেত্রি ও অরূপ বিশ্বাস এবং দার্জিলিংয়ের পাহাড়ের ১৫ টি উপজাতি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মিরিক, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও দার্জিলিংয়ের কয়েকটি এনজিও এবং ধর্মীয় দলগুলিও সিএএ বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে পা মিলিয়েছিলেন।

Mamata Banerjee | newsfront.co
বক্তব্য রাখছেন ইন্দ্রনীল সেন। নিজস্ব চিত্র

র‌্যালিটি গোর্খা রঙ্গমঞ্চ ভবন থেকে শুরু হয়ে দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়। এই সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাষণে যে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি তুলে ধরে নিজের বক্তব্য পোষণ করেছেন, সেগুলি হলঃ

-আমি আশাবাদী যে পাহাড়ে প্রতিরোধের শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে এখানকার বাসিন্দাদের এক করবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য।

আরও পড়ুনঃ দিলীপের নেতৃত্বের পরিমাপ উল্লেখ করে কটাক্ষ গৌতমের

-আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। স্বাধীনতা লাভের জন্য সব সম্প্রদায় নির্বিশেষে দেশের জন্য লড়াই করেছেন।

anti nrc caa protest rally | newsfront.co
বাসিন্দাদের তরফে এনআরসি-র বিরোধিতা। নিজস্ব চিত্র

-যদি এনআরসি, এনপিআর, সিএএ লাগু হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব, প্রত্যেকেই এই বিষয়ে ভাবছে।

-গোর্খা সম্প্রদায়ের নাগরিকত্বের অধিকার কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।

আরও পড়ুনঃ মাথাভাঙ্গায় সিএএ বিরোধী আন্দোলন তৃণমূলের

-আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে সিএএ এবং এনপিআর-এর বিরুদ্ধে লড়াই করব। লোকেদের আলাদা পদবী থাকতে পারে এবং তারা ভিন্ন সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হতে পারে, তবে আমরা সকলেই ভারতীয়।

-ত্রিপুরা, অসম ও অন্যান্য রাজ্যে বাঙালি এবং অন্যান্য উপজাতি বাস করে। কেন অসমে এনআরসি প্রক্রিয়ায় ১২ লক্ষ হিন্দু বাদ পড়েছিল, কেন ১ লাখ গোর্খাকে এনআরসি-তে বাদ দেওয়া হয়েছিল? উত্তর জানতে এবং নিজ স্বাধীনতার জন্য আমাদের দ্বিতীয়বার লড়াই করতে হবে।

– স্বাধীনতার ৭০ বছরেরও বেশি সময় পরে বিজেপি এখন এক নতুন ধরণের নাগরিকত্বের কথা বলছে।

-আমরা নাগরিকরা ভোট দিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছি এবং এখন বিজেপি আমাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলছে।

আরও পড়ুনঃ বালুরঘাটে বইমেলার উদ্বোধনে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা

-এনপিআর সম্পর্কে বিজেপি মিথ্যা কথা বলছে। তারা বলছে যে পিতা-মাতার পরিচয়, প্রমাণ বাধ্যতামূলক নয়। তবে কেন এটি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে?

-নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য বিদেশি হতে হবে।

-বিজেপি কেন অর্থনীতির দিকে মন দিচ্ছে না? এয়ার ইন্ডিয়া, বিএসএনএল লোকসানে চলছে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজেপি কেবল বিভাজনমূলক রাজনীতি করছে।

-বিজেপি শিক্ষার্থীদের, শিক্ষকদের মারধর করছে, সমাজকর্মী ও প্রতিবাদীদের হুমকি দিচ্ছে।

-মহারাষ্ট্রের পিএসইউ ব্যাঙ্ক নগদ টাকা তোলার সীমা কমিয়ে বছরে মাত্র ১ লাখ টাকা করেছে। এটিকে গোপন করার জন্য তারা বিভিন্ন বিভাজনমূলক নীতি নিয়ে আসছে।

আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ আসার ইচ্ছা হবে না, ফালাকাটায় দিলীপ

-এনআরসি-র আশঙ্কায় বাংলায় ৩০ জন আত্মহত্যা করেছে।

পরিশেষে তৃণমূল সুপ্রিমো সবাইকে সাহস জুগিয়ে বলেন, এই লড়াই সবার স্বাধীনতা, অধিকার, জমি আগলে রাখার লড়াই। বিজেপিকে কিছুতেই এই সমস্ত কিছু কেড়ে নিতে দেওয়া যাবে না। এই দেশ আম্বেদকর, বীরষা-মুণ্ডাদের দেশ। আমাদের একত্রিত হয়ে লড়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে আম্বেদকর, বীরষা-মুণ্ডাদের মতো নেতারা ঐক্যবদ্ধ ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

পাশাপাশি তিনি এও বলেন, তিনি যতদিন আছেন ততদিন বাংলায় কোনও ডিটেনশন সেন্টার হবে না।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here