নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ
কিছুদিন আগে বিএইচইউতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ খানের নিয়োগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছিল।
ছাত্রদের দাবি ছিল সংস্কৃত বিভাগে কোনও অহিন্দু শিক্ষার্থী বা শিক্ষককে নিয়োগ করলে তা মদনমোহন মালব্যর নৈতিকতাকে অবমানণা করা হয়। বিএইউইউ কর্তৃপক্ষ ফিরোজ খানকে সমর্থন করলেও ক্লাস করাতে পারেননি সংস্কৃত বিভাগের ওই অধ্যাপক।
উত্তর প্রদেশের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন অধ্যয়নের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অধ্যাপকের ধর্ম তখন বিপরীত দৃশ্যপট চিত্রিত করল পশ্চিমবঙ্গ। শিক্ষকের ধর্মীয় পরিচয়কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে সংস্কৃত পড়ানোর জন্য বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন সহকারী অধ্যাপক হিসাবে মুসলিম শিক্ষক রমজান আলিকে নিয়োগ করা হল।
আরও পড়ুনঃ পুরনো শিবিরেই ফিরে এলেন দলছুট ছাত্র নেতা
উত্তরবঙ্গের একটি কলেজে নয় বছর ধরে সংস্কৃত পড়াতেন রমজান আলি। এতখানি অভিজ্ঞতার পরে বেলুড়ে কলেজে যোগ দিতে এসে ছাত্র এবং অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মীরা তাঁকে যে উষ্ণ স্বাগত জানিয়েছেন তাতে অভিভূত তিনি, জানিয়েছেন রমজান আলি।
রমজান আলি বলেছেন, “অধ্যক্ষ স্বামী শাস্ত্রনন্দজী মহারাজ এবং সবাই আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন… মহারাজ আমাকে বলেছেন যে আমার ধর্মীয় পরিচয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল এই বিষয়ে আমার দখল, আমার জ্ঞান এবং জ্ঞান ভাগ করার ক্ষমতা।”
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি সংস্কৃত ভারতের রূপ, অন্তর্ভুক্তি, এর সমৃদ্ধতা সংস্কৃতিকে ধারণ করে। ভুলে যাবেন না সংস্কৃত হল সমস্ত ভাষার জনক। কীভাবে কেউ অন্য ধর্মের ব্যক্তিকে সংস্কৃত শেখা এবং শেখানো থেকে বাধা দিতে পারে?”
আরও পড়ুনঃ তালের বীজ থেকে কচ্ছপ তৈরি করে নজির গড়ল স্বনির্ভর গোষ্ঠী
বছর চল্লিশের রমজান আলি দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন যে, সংস্কৃত শিক্ষক হিসাবে কখনওই কোনও বৈষম্যের মুখোমুখি হননি তিনি। “সংস্কৃত পড়ার সময় বা শেখানোর সময় কখনওই আমি অনুভব করিনি যে আমি সবার থেকে আলাদা, বা অবাঞ্ছিত।
বেলুড়ে কলেজে ব্যবস্থাপক কমিটি আমার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যাতে আমি কোনও রকম অসুবিধার সম্মুখীন না হই,” জানান সহকারী অধ্যাপক।
রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের সংস্কৃত বিভাগের এক ছাত্র জানিয়েছেন যে, রমজান আলির ক্লাস করার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, শিক্ষকের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন করাটাই ‘অন্যায়’! তিনি আরও বলেন, “আলি স্যার সবেমাত্র যোগদান করেছেন, আমার এখনও তাঁর ক্লাস করার সুযোগ হয়নি। আমি তাঁর ক্লাস করার অপেক্ষায় আছি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584