‘রাজনীতি মানে কি এখন শুধু ব্যক্তি স্বার্থ অভিসন্ধির খেলা? বাবুল সুপ্রিয় তাঁর প্রকৃষ্ট উদাহরণ’

0
108

কলমে শরীয়তুল্লাহ সোহন

বর্তমানে সবথেকে বহুল চর্চিত বিষয় বাবুল সুপ্রিয়ের দলবদল। কিন্তু প্রশ্ন হল এই বাবুল সুপ্রিয় কে?? এর উত্তর কিন্তু আমাদের মানসপটে জীবন্ত। একটু নাড়া দিলেই বুকটা চিনচিন করে উঠবে কিছু গভীর ক্ষত। যে ক্ষতগুলোর হোতা আজকের দলবদলু বাবুল বাবু।

Babul Supriyo joins TMC

বাংলার রাজনীতিতে বাবুল সুপ্রিয় দ্বারা সৃষ্ট বিভিন্ন গভীর ক্ষত গুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান। প্রথম ক্ষত হল,
আসানসোলের ইমাম ইমদাদুল্লাহ রশিদীকে মনে আছে? ২০১৮ সাল, বাবুল তখন বিজেপি। আসানসোলের দাঙ্গা লাগানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। দাঙ্গার বলি হল ইমাম রশিদীর নাবালক পুত্র। লোকজন তখন রাগে ফুঁসছে। সবাই প্রতিশোধ নিতে চায়। শোকে স্তব্ধ ইমাম সাহেব দায়িত্ববান নাগরিকের কর্তব্য ভুলে যাননি। জনগণকে বুঝিয়ে শান্ত করেছিলেন। দাঙ্গা বাড়তে দেননি। সেইসময় তৃণমূল সরকার উনাকে সম্প্রীতির উদাহরন হিসেবে তুলে ধরে। পরে শুনেছিলাম সরকার তাঁকে কোন একটা শান্তি সম্মানে ভূষিত করেছে। কবীর সুমন ইমাম সাহেবের যন্ত্রনা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে গানও বাঁধেন। শুনছি বাবুল তৃণমূলে জায়গা পেল! দায়িত্ববান ইমাম সাহেবের অন্তরের যন্ত্রনা আরও খানিক বাড়ল নিশ্চিত!

Babul Supriyo

দ্বিতীয় ক্ষত হল, গত বিধানসভা সভা নির্বাচনে গোটা রাজ্য ব্যাপী অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং ভোট কেন্দ্রে গিয়ে মেয়েদের গায়ে হাত তোলা। সাথে কঠিন অমানবিক ব্যবহার। আজকের দল বদল এবং বাবুল বাবুকে তৃণমূলের সাদরে গ্রহণ ঐ সমস্ত মা-বোনদের হৃদয়ে আবারও যন্ত্রণা নাড়া দিয়ে উঠবে।

তৃতীয়ত, ইতিহাসটা বেশি পুরানো দিনের নয়, বাবুল বাবু প্রকাশ্য তৃনমূল এর ব্যানারে পেচ্ছাপ করলেন। এখানে শেষ নয়, ২০২০ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করলেন এই মর্মে, “আপনারা যারা ভাবছেন বাবুল কোন দিন তৃনমূলে যাবে, তারা একটু মানসিক চিকিৎসা করান। আর শুনে রাখুন এই দলটা কে আমি প্রচন্ডভাবে ঘৃনা করি।” বাবুল বাবুর এমন ঘৃন্য ঘটনা ও মন্তব্যের পড়ে যারা তৃনমূলকে ভালোবেসে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল তাদের হৃদয়ে কিছুটা হলেও যন্ত্রনা ফুটে উঠবে।

জানি এত কিছু হওয়ার পরও কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশ্লেষক বলে উঠবে “রাজনীতিতে চির শত্রু কেউ হয় না”। কিন্তু বাবুল বাবুর ঘৃন্য ইতিহাস বদলানোর জন্য এই যুক্তি ভিত্তিহীন। দৃপ্ত কন্ঠে একটাই কথা বলতে চাই, “রাজনীতি যে এখন সাধারণ মানুষকে নিয়ে খেলার এক ঘৃন্য পন্থা, সেটা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল দৃঢ়ভাবে। তবে সময় বড়ই নিষ্ঠুর, সময় বদলাবে, ইতিহাস বদলাবে। সেই বদলানো ইতিহাসের পাতায় সাধারণ জনগন ঘৃনিত কন্ঠে উচ্চারিত করবে বাবুল বাবুর নাম এবং সাথে একই ভাবে উচ্চারিত হবে বাবুল বাবুকে আশ্রয়দাতাদের নাম।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here