রাজনীতি থেকে নীতি ক্রমশ অপসৃয়মাণ।অপসৃত হলেও ভদ্রতার মোড়ক ছিল তা সরতে সরতে আজ অপসংস্কৃতির আঁতুড় ঘর হয়ে উঠেছে রাজনীতি।জনসভা থেকে সাংবাদিক সম্মেলন সর্বত্র বাক্য ব্যবহারের শব্দ চয়নে অশ্লীলতা যেন মাত্রাছাড়া হয়ে উঠছে।
তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিষ্ণুপুরের জনসভায় বিরোধী দলের দিলীপ ঘোষকে ‘বাপ তুলে’ চ্যালেঞ্জ দিলেন।পরের দিনই দিলীপ ঘোষ তৃণমূল দলকে সাপ কুকুরের সাথে তুলনা করলেন।রাজনীতিতে এই বাক্য দূষণ একদিনের চর্চার ফসল নয়।পূর্বতন বামফ্রন্টের অনিল বসু থেকে বিনয় কোঙার হয়ে আনিসুর রহমানরাও তার নির্দশন দিয়েছেন।আর এখন তো কটূ বাক্য বিনা জনসভা(!) কর্মীদের গা গরমের সহজ পন্থা।জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তো এ বিষয়ে রীতিমতো দৃষ্টান্ত তৈরি করে ফেলেছেন।তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ রাহুল গান্ধী সম্পর্কে ব্যঙ্গ করে বলেন,’সংকর প্রজাতির গোবৎস’।এ রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সভায় বলেছিলেন,’বাম্বু দিলে বাম্বু খেতে হয়’ আর নন্দীগ্রাম সিঙ্গুর আন্দোলন পর্বে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন,’ঢিল মারলে পাটকেল খেতে হয়’,অবশ্য তিনি ইংরেজিতে বলেছিলেন they had paid back in the same coin.
স্বাধীনতা আন্দোলন কালপর্বে এবং ষাটের দশক সত্তরের দশকের সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য শোনার জন্য মানুষের অধীর আগ্রহ থাকত। মানুষের জীবনের সমস্যা,ব্যথা বেদনাকে নিজ নিজ রাজনৈতিক আদর্শের আলোকে সমাধানের দিশা দেখাতেন।নীতির বিরোধিতা থাকত কিন্তু পারস্পরিক সম্মানবোধের জায়গায় কোন দ্বিধা ছিল না।বর্তমানে মূল্যবোধহীন রাজনীতিতে ক্ষমতার মোহে নীতি ভদ্রতা পারস্পারিক সম্মানের কোন স্থান নেই।নীতিহীন রাজনীতি কোনদিন উন্নতি বিধান করতে পারেনি।তাই কটূ বাক্যের এই বিষাক্ত বিষ প্রমান করে দেয় বর্তমানের প্রচলি রাজনীতির চর্চা আজ জনস্বার্থের বিরোধী হয়ে উঠছে।দিন অবসানের অপেক্ষায় না থেকে বিরোধিতা না করলে সেই বিষের আক্রমন থেকে সমাজ মননের নিস্তার নেই।
©Newsfront
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584