সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
অভাব অনটনের সহিত বাঘ, কুমির, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করতে হয় সুন্দরবনবাসীদের।আজও রয়েছে সুন্দরবনে অনাহারে নিদ্রাহীন থাকা মানুষ।যারা প্রত্যাশা প্রতিশ্রুতি নিয়ে বেঁচে থাকেন প্রতিনিয়ত।স্বাধীনতার পর দক্ষিন সুন্দরবনের উন্নয়নের ছিঁটে ফোটা শুরু হলেও।আজও অভাব অভিযোগ যায়নি সুন্দরবনবাসির কাছ থেকে। তার জেরেই বেছে নিচ্ছে শিশু শ্রম, নাড়ি পাচার, শিশু পাচারের মতন বেআইনি কাজ । লোভে,কেউবা অভাবে শেষ করে দিচ্ছে নিজেদের জীবন।পরিবর্তনের পর বদলেছে সুন্দরবনের হাল।একটা সময় দক্ষিন সুন্দরবনের মন্দির বাজার ব্লকের মানুষদের নারী পাচার শিশু শ্রমে মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছিল।শিক্ষার অভাবে বেছে নিতে হয় এই সকল চক্র।আজ তা অনেক পরিবর্তন হয়েছে।রাজ্য সরকারের মতো বেসরকারি স্কুলে বদলেছে এলাকার শিক্ষার হাল।
বদলায়নি অসহায় মানুষের সহযোগিতা । এবার ক্ষুদে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালো বন্ধন। ক্ষুদেদের নিয়ে শিক্ষার ভিত গড়তে এগিয়ে এলেন বন্ধন।বিনা পয়সায় অসহায় পরিবারের ক্ষুদে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন বন্ধন শিক্ষা কর্মসূচি।মন্দিরবাজার ব্লকের ১২ টি গ্রামে ১৮ টি স্কুল চলছে বিনা পয়সায়। যেখানে নার্সারি থেকে তৃতীয় শ্রেনী পর্যন্ত চলে পঠন পাঠন।বিনা পয়সায় পেন খাতা পেয়ে পঠন পাঠনে আগ্রহী হয়েছেন অভাবী অসহায় পরিবার। উচ্চশিক্ষায় জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকে।বন্ধনের শিক্ষা কর্মসূচি আজ উজ্জ্বল নক্ষত্র সুন্দরবন বাসির কাছে।২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বন্ধন শিক্ষা কর্মসূচি আজ লক্ষ্মীকান্তপুর জোনে কয়েক হাজার পড়ুয়া ঠাঁই পেয়েছে।শুধু শিক্ষার মান নয়।শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলায় মনোযোগ বাড়াতে বাৎসরিক ক্রিড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়।যেখানে ১৮ টি স্কুলের ১০৮ জন ক্ষুদে প্রতিযোগি অংশ নেন।মন্দিরবাজার ব্লকে ঘাটেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নট্টের মাঠে হয় বন্ধন শিক্ষা কর্মসূচির বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ১৪ টি ইভেন্টের প্রতিযোগিতা অংশ গ্রহন করেন । বিস্কুট দৌড় ,একশ মিটার দৌড়,গুলি চামচ,শ্রুতি লিখন ,আলু দৌড় প্রভৃতি খেলা হয়। ক্ষুদে খেলোয়ারদের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা সংগ্রামী শশধর পুরকাইত ,ছিলেন বিবেকানন্দ শিক্ষা কেন্দ্র এবং শিশু উদ্যানের কর্নধার কপিলা নন্দ মন্ডল।
উপস্থিত ছিলেন,ঘাটেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান পুলক ভট্টাচার্য ,ডিএসপি সুন্দরবন দেবাশিষ ব্যানার্জি ,বন্ধন লক্ষ্মীকান্তপুর জোনের এরিয়া কো-অর্ডিনেটর ইমানুর গাজি,সংস্কৃতি সংঘের সেক্রেটারি প্রীতম হালদার , সদস্য দীলিপ বৈদ্য । ছিলেন বন্ধন শিক্ষার সাংগঠনিক কর্তারা।
এদিন স্বাধীনতা সংগ্রামী শশধর পুরকাইত বলেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মানুষের মূল্যবান সম্পদ।তাই ছোট থেকে স্বাস্থ্যর প্রতি যেমন যত্ন নেওয়া দরকার ঠিক তেমনি শিক্ষার প্রতি ভিত গড়তে গড়তে হবে ছোট থেকে।যার প্রয়াস ঘটাচ্ছেন বন্ধন।
লক্ষ্মীকান্তপুর জোনের এরিয়া কোঅর্ডিনেটর ইমানুর গাজি বলেন একটা সময় মন্দিরবাজারে বিভিন্ন এলাকায় হতদরিদ্ররা শিক্ষার আঙিনায় পৌঁছছিলনা। ১৮ টি স্কুলে শতাধিক পড়ুয়া আজ বন্ধন অস্থায়ী স্কুলে আসছে ।বিনা পয়সাতে বই পাচ্ছে, কলম পাচ্ছে ।পরিবার খুশি হচ্ছে । আগামী দিন সুন্দরবনে এই এলাকায় শিক্ষার মান আর দৃঢ় করবে বলে তিনি জানান ।
আরও পড়ুনঃ প্রতিবন্ধীদের সরঞ্জাম বিতরণ
সুন্দরবন ডিএসপি দেবাশিষ ব্যানার্জি বলেন বন্ধনের এমন কাজে এগিয়ে আসবেন অনেকে । এলাকায় শিক্ষার মান বাড়লে অপরাধ মূলক কাজ কমবে । এমন চলতে থাকলে প্রতিটি মানুষের মনে বন্ধের বন্ধন হয়ে উঠবে।
সুন্দরবনে শিক্ষার অগ্রগতিতে বন্ধন শিক্ষা কর্মসূচির এমন কর্মযজ্ঞকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584