জীবনের পড়ন্ত বেলায় ভিক্ষায় সম্বল ৯৫ এর মায়ের

0
272

পিয়া গুপ্তা, কালিয়াগঞ্জ

জীবন বড়ই কষ্টের।জীবনের হাজারো দিন পার হয়ে গেলেও কষ্টের দিন আর ফুরায় না।বছর ৯৫ এর কাঞ্চবালা বয়সের ভারে কোমর বেঁকে গেছে চলার শক্তি না থাকায় লাঠিতেই ভর দিয়ে চলেন।

নিজস্ব চিত্র

পায়ে ও জোর নেই তবুও লাঠির ভরে  চোখে মুখে ক্লান্তির ছোঁয়া নিয়েই এক পা দুই পা করেই মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই বয়সেও ভিক্ষা করতে হচ্ছে বৃদ্ধা কাঞ্চবালাকে।জীবনের শেষ বেলায় এসো আজও পাননি সরকারের দেওয়া বৃদ্ধ ভাতা।

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর ধনকোল গ্রামের এক চিলতে মাটির বাড়িতেই থাকেন বছর ৯৫ এর কাঞ্চবালা । বৃদ্ধার তিন ছেলে থাকতেও ছেলেরা নিজেদের বউ বাচ্চা নিয়ে আলাদা ই থাকে। মাকে একা ফেলে দিব্যি ই ভালই থাকেন তারা।

ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে পচাঁনব্বইয়ের কাঞ্চবালা দেবী।নিজস্ব চিত্র

দুমুঠো ভাত তো দূরের কথা অসুস্থ মাকে কখনো দেখতেও আসেন না ছেলেরা।তাই বাধ্য হয়ে অসুস্থ শরীরেও বাড়ি বাড়ি গিয়েই ভিক্ষে করেই দিনযাপন ৯৫ এর কাঞ্চবালার।

আরও পড়ুনঃ আদালত চত্ত্বরে অশ্রুজলে সন্তানহারা মায়ের দাবি দোষীদের ফাঁসি

ধনকোল এর দুর্গাপুর থেকে লাঠিতে ভর করে কালিয়াগঞ্জ শহরের মহেন্দ্রগঞ্জ বাজারে ভিক্ষা করতে দেখা যায় ৯৫ এর কাঞ্চবালাকে।জীবনের পরন্ত বেলায় এসেও লাঠিতে ভর করে এক পা দুই পা করে ই হেঁটে মহেন্দ্রগঞ্জ বাজারে আসেন দুটো খাবারের আশায়।তীব্র গরমে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে ভিক্ষা করে যা পান তাই খেয়ে বেঁচে আছেন এই বৃদ্ধা।

নিজস্ব চিত্র

যেদিন ভিক্ষা করেন না সেদিন খাবারও জোটে না তার।তার কষ্টের কথা প্রতিবেদক শুনতে চাইলে জল ভরা চোখে বলেন “জীবনের এই বয়সেও ভিক্ষা করতে হয় রে মা।তিন ছেলে থাকলেও কারো কাছেই মা কে দেখার সময় নেই।দুটো খাবার ও দেয়না কেউ।

তাই বুকে হাজার কষ্ট নিয়েই মানুষের বাড়ি বাড়ি যাই দুটো খাবারের আশায়।” কান্না চোখে কাঞ্চবালা বলেন ‘কোনো অভাগীর জীবন ও যাতে আমার মতো কষ্ট না হয়।

কিছুদিন আগে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম ছেলেদের কাছে ওষুধের জন্য বলতেই তারা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।আর মনে হয়না বেঁচে থাকি রে মা। সরকার থেকে আজও বয়স্ক ভাতা পেলাম না। তাই দারিদ্রতার বোঝা ঘাড়ে নিয়েই মানুষের বাড়িতে গিয়ে ভিক্ষা করতে হয় দুমুঠো খাবারের আশায়।’

একদিকে যখন পশ্চিমবঙ্গের মা মাটি মানুষের সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে গ্রাম বাংলার হতদরিদ্র মানুষেরা নাকি ভাসছে।অথচ উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ধনকোল গ্রাম পঞ্চয়েতের দুর্গাপুর গ্রামের ৯৫ বছরের বৃদ্ধা জীবনের শেষ বেলায় এসেও মা-মাটি-মানুষের সরকারের দেওয়া বৃদ্ধাভাতা থেকেই শুধু নয়, কাঞ্চবালা রাজ্য সরকারের সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা থেকে আজও বঞ্চিত।

আজও কাঞ্চবালারা জীবনের পরন্ত বেলায় এসেও অসহায় ,অভাবের তাড়নায় ভিক্ষা করেই দিন যায়।তবুও কোন সরকারই এদের দিকে ফিরে তাকায় না ভোট আসে ভোট যায় ক্ষমতা ভোগীরা প্রতিবার রাজত্ব করে।তবে কেউ ফিরে ও তাকায় না কাঞ্চবালাদের দিকে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here