পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর ও খড়গপুর এর পর ছোট শহর বলতে বোঝায় বেলদাকে।সূত্রের খবর
কিছু দিন পরেই বেলদা সাজবে পৌরসভার রঙে ।কিন্তু বেশকিছু প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো পিছনে ফেলছে বেলদাকে পৌরসভার দৌড়ে।
এমনই এক বড় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা।সাধারণ কৃষিজীবী থেকে চাকুরীজীবী সবমিলিয়ে বেলদা ও তার আসেপাশে প্রায় দশ লক্ষের বেশি মানুষের বাস ।দিন দিন ফাঁকা জায়গায় মানুষের বসতি গড়ে উঠছে।ক্রমেই বেলদা একটি মাল্টি শহরে রূপান্তরিত হচ্ছে।কিন্তু তার আগেই বেলদার প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দমকলের সমস্যা।সবারই দাবি বেলদাতে তৈরি হোক একটি ফায়ার স্টেশন।বেলদার এক বেসরকারি বিদ্যালয়ের সভাপতি অশোক কুমার চন্দ জানিয়েছেন-” বেলদায় একই ছাদের তলায় সমস্ত ধরনের দোকান পসরা থেকে অফিস-আদালত স্কুল-কলেজ সবই রয়েছে।সেখানে দমকল অত্যন্ত প্রয়োজন।কেন হচ্ছে না সে বিষয়ে আমরা অজ্ঞাত।সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবি বেলদাতে একটা ফায়ার অফিস হোক।” বছরখানেক আগে বেলদার নন্দ মার্কেটে একটি কাপড় দোকানে আগুন লাগে।আগুন নেভাতে গিয়ে বেগ পেতে হয় দোকানের মালিক থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় এক বাসিন্দা নিত্যানন্দ সাহু জানিয়েছেন-“বেলদা মেদিনীপুর ও খড়গপুরের পর বড় শহর।বেলদাতে এই মুহূর্তে সব থেকে প্রয়োজনীয় দমকল ব্যবস্থা।আমরা চাইছি বেলদা তে একটি ফায়ার স্টেশন তৈরি হোক।”
বেলদার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছে বেলদার ব্যবসায় সংগঠন বি.এফ.টি ও।ব্যবসায়ী সংগঠন বি.এফ.টিও এর সম্পাদক নূর হোসেন খান জানিয়েছেন-“স্বাভাবিকভাবে দমকল একটি অত্যাবশ্যকীয় বর্তমান সমাজে।বেলদাতে ধীরে ধীরে বহু ঘিঞ্জি ঘর বড়ি তৈরি হচ্ছে।সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বেলদা ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবি বেলদাতে একটি দমকল ব্যবস্থা তৈরি হোক।শুধু দোকানে আগুন লাগা নয় পাশাপাশি অন্যান্য ধরনের আগুন থেকে ঘটা দুর্ঘটনা সহজে মোকাবিলা করা যাবে।”
মাসকয়েক আগে বেলদা থানার অন্তর্গত বিনোদপুর গ্রামে রাত একটা নাগাদ শর্ট সার্কিট থেকে একটি কাজু গোডাউনে আগুন লাগে।তারপরই দমকল আসা পর্যন্ত স্থানীয়রা আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়।ঘন্টাখানেক পরে আসে দমকল। ক্ষতিগ্রস্ত কাজু গোডাউনের মালিক ব্রজগোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন-“গত এপ্রিল মাসে রাত একটা নাগাদ আমাদের কাজু গোডাউনে আগুন লাগে।তারপর খড়গপুর থেকে দমকল আসে প্রায় এক ঘণ্টা পরে। ততক্ষণে সব শেষ।”
শীঘ্রই বেলদাতে তৈরি হতে চলেছে সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল। তারসঙ্গে বেলদাতে যদি দমকলের স্টেশন তৈরি করা যায় তাহলে আগুনে পুড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকখানি কম হবে বলে এলাকাবাসীর দাবি।বেলদাতে রয়েছে তিনটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাথে তৈরি হতে চলেছে মাল্টি সুপার হসপিটাল,কিন্তু নেই অগ্নিনির্বাপণের কোনরূপ ব্যবস্থা। প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয় কিংবা হাসপাতলে ফোনের ব্যবস্থা করা হলেও কোন ফায়ার স্টেশন নেই বেলদা এলাকা।দেউলী সুধীর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মাজী জানিয়েছেন-“বেলদাতে একাধিক স্কুল রয়েছে।সেখানে অগ্নিনির্বাপণ বলতে সর্বশিক্ষা মিশনের দেওয়া কয়েকটি কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত একটি করে সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে।কিন্তু কোন সময় যদি বিধ্বংসী আগুন লাগে তাহলে কিন্তু সেই জায়গা ক্রমশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।তাই এই দাবিটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখে বেলদাতে যত শীঘ্রই সম্ভব একটি দমকল স্টেশন ।
কিছুদিন আগে এক কারখানার অগ্নিকাণ্ডে কারখানায় পাশেই থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয় বেশ কিছুদিন। সেই বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক তীর্থ ভঞ্জ জানিয়েছেন-” কিছুদিন আগে কাজু কারখানায় আগুন লাগে। পরেরদিনও সেখান থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে থাকে। আমাদের স্কুল চালাতে খুব অসুবিধা হয়ে ছিল। সেই সব ক্ষেত্রে যদি বেলদা তে দমকলের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে এই বিধ্বংসী আগুন থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুব কম হবে।”
শুধু বেলদা নয় , বেলদার পাশাপাশি নারায়ণগড় কেশিয়াড়ি, মোহনপুর, দাঁতন প্রভৃতি এলাকার মানুষ উপকৃত হবে দমকল স্টেশন যদি তৈরি হয় বেলদাতে।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছ-সুন্দর শৌচালয় প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের সম্মান জ্ঞাপন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584