সমীষ্ণা পান্ডা,কলকাতাঃ
গত ২১ শে জুন মুক্তি পেলো বিরসা দাসগুপ্তের নতুন ছবি বিবাহ অভিযান। ছবিতে স্টারেদের ছড়াছড়ি। অঙ্কুশ থেকে শুরু করে রুদ্রনীল, অনির্বান, প্রিয়াঙ্কা, ওপারের নুসরাত ফারিয়া, এপারের সোহিনী কে নেই! কিন্তু ধর তক্তা মার পেরেক করে দু সপ্তাহে শুটিং শেষ করা ছবিতে যা হয় ঠিক তাই হয়েছে। রুদ্রবাবুর গল্পটি তেমন মন্দ না হলেও স্ক্রিপ্টে কোনও চরিত্রের ছবিই পরিষ্কার নয়। এমনকি বউ ছেড়ে বরেদের পাহাড়ে পালাবার মোটিভও শক্তপোক্ত নয়।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে অঙ্কুশ স্বেছায় তার স্ত্রী নুসরাতের সাথে আলাদা ফ্ল্যাটে থাকে। সেখানে সে স্বেছায় একটি ভালো আপিসে চাকরী এবং সাথে তার আপাত বিপ্লবী বউয়ের জন্য রান্নাসহ ঘরের আর পাঁচটা কাজ করে (যে কাজ ভারতের ৯০ শতাংশ কর্মরত মহিলার রোজনামচা)। তথাপী বিল্পবের কাজে ব্যস্ত বউ বরকে বিছানায় সময় দেন না। কেবল মাত্র এই কারনে বাড়ি আর অফিসে মিথ্যে বলে নায়ক হঠাৎ বউকে লুকিয়ে দার্জিলিং বেড়াতে চলে যাবে তা বোঝা গেলো না।
মোটের ওপর ছবিতে মূল পলাতক হলো ‘লজিক’, অবশ্য সে আর নতুন কথা কি! নুসরাত ফারিয়ার কন্ঠের জায়গায় বিশ্রী ডাবিং অ্যান্ড বেমানান অভিনয়টুকু বাদ গেলে কিছুটা উপকারই হত।
গোদের ওপর বিষফোঁড়া অনির্বানের আপাত হাস্যকর অথচ আলট্রা আর্বান ডায়ালেক্ট। একথা মানতে হবে যে প্রিয়াঙ্কার ১০ মিনিটের উপস্থিতি গোটা ছবির মধ্যে সবচেয়ে বেশি হাসির উদ্রেগ ঘটায়। ওই অল্প সময়ে সে তার কাজ যথাযথ ভাবে করেছে।
ছবিতে ছোট একটা চরিত্রে সন্দীপ ওরফে স্যান্ডি সাহা কে দেখা যায় কিন্তু তার চরিত্রের যে কি পরিচয় সেটা পরিচালক বলার প্রয়োজন বোধই করেননি। ছবির একমাত্র আইটেম গান ‘মিছরির দানা’ একটি বিখ্যাত লোকসঙ্গীতের অকালমৃত্যু ঘটিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
শ্রেয়া ঘোষাল সুন্দর গেয়েছেনও কিন্তু পর্দায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল যে পূজা এবং তার সহ নৃত্যশিল্পীদের খুব একটা প্রস্তুতির সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এছাড়া গোটা ছবি জুড়ে এমন বহু দৃশ্য আছে যা দায়িত্ব নিয়ে কেটে ফেললে ছবিটায় আরও একটু বেশি হাসির সুযোগ পাওয়া যেতো।
হোটেলের মধ্যে রুদ্রনীল আর অঙ্কুশের পেছনে পুলিশের দৌড়ানোর দৃশ্য অহেতুক লম্বা। সর্বোপরি ছবিতে বামপন্থী আন্দোলনের মুষ্ঠিবদ্ধ হাত, মেহনতি মানুষের বিদ্রোহ আর চে গুয়েভারার মকারি ছাড়া আর কোনও কাজই মনোযোগ দিয়ে করা হয়নি।
তবুও আপনি হাসবেন কারন বেশ কিছু কাতুকুতু দিয়ে হাসানোর জন্য আলগা কিছু ডায়লগ ছবিতে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ দেবীনগরে জাগরী কৃষ্টি সন্ধ্যা
ক্যামেরার কাজও মন্দ নয়। ছবিতে অহেতুক গানও খুব বেশি নেই। মোটের ওপর এ হাসির ছবিতে হাসি আছে, ভালো অভিনেতা থাকলেও অভিনয় নাই, গল্প মোটামুটি হলেও চিত্রনাট্যে জোর নাই, কাজে এ ছবি একবারের বেশী দেখে বিশেষ লাভ নাই। লেখকের মত নিতান্তই ব্যক্তিগত!
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584