উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে ‘চাড্ডা’ বলা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও সিপিআই(এম) নেতা বিমান বসু। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শাসক দলের সমালোচনা করলেন বিমান বসু।
মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে আক্রমণ করেছেন, তা নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া, ”চাড্ডা, মাড্ডা, ফাড্ডা করে ছন্দ মিলিয়ে কথা বলতে গিয়ে যে গাল দেওয়া হল, তার পরিণাম খুব খারাপ হবে। জাতীয় সংহতির পক্ষে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক।“
বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় তৃণমূলের কৃষক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”কোনওদিন চিফ মিনিস্টার চলে আসছে, হোম মিনিস্টার চলে আসছে, কোনও দিন ওই আর একটা মিনিস্টার আসছে। লোকের কাজ তো করে না! কোনও দিন চাড্ডা, নাড্ডা, গাড্ডা, ফাড্ডা, ভাড্ডা- সব চলে আসছে এক এক করে। ওরা একা অনুষ্ঠান করবে আর কেউ করবে না। আর যেদিন তারা অনুষ্ঠান করবে লোক যদি না আসে নিজে সাজিয়ে রাখবে, যাতে নৌটঙ্কি করে ন্যাশনাল নিউজে দেখায়, দেখো আমায় মেরেছে। আহারে!”
আরও পড়ুনঃ ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট’-এ দিল্লি সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযোগের তীর অমিত শাহের দিকে
ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এদিন বিমান বসু বলেন,”যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কাউকে আক্রমণ করতে গিয়ে উত্তেজিতভাবে চাড্ডা, নাড্ডা, ফাড্ডা, ছাড্ডা এসব বলে, সেখানে বোধহয় আমার কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। চাড্ডা মানে পঞ্জাবি। পঞ্জাবি ছাড়া চাড্ডা হয় না। চাড্ডা, মাড্ডা, ফাড্ডা করে ছন্দ মিলিয়ে কথা বলতে গিয়ে যে গাল দেওয়া হল, তার পরিণাম খুব খারাপ হবে। জাতীয় সংহতির পক্ষে বিপজ্জনক।“
আরও পড়ুনঃ সুদীপ্ত সেনের চিঠি সত্যতা যাচাই করতে সিবিআইকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
বিমান বসু আরও বলেন,”আমাদের রাজ্যে যেমন মুখ্যমন্ত্রী তেমন বক্তব্য তো হবেই। শুনেছি তিনি ভাষাবিদ। আজ পর্যন্ত শুনলাম না গভর্মেন্ট। সবসময় শুনলাম গরমেন্ট। গরমেন্টই শুনে আসছি। গভর্নেস কোথা থেকে আসবে! তিনি ইংরেজি ভাষায় কীভাবে বলতে হয়, তা জানেন না। হরিনাথ দে আমাদের বিখ্যাত ভাষাবিদ। এরপর আর একজন ভাষাবিদের নাম শুনলাম, তিনি মুখ্যমন্ত্রী।“
মুখ্যমন্ত্রী আগুন নিয়ে খেলছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বাম নেতা। তাঁর কথায়,”সংবিধানের দায়বদ্ধতা অনুযায়ী শপথগ্রহণ করতে হয়, তা মান্য করলে রাজ্যপালকে এই কথাগুলি বলতে হয় না। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য নিয়েছিলেন, সেটা মেনে চলা উচিত।“
আরও পড়ুনঃ গুন্ডামি বন্ধ করে দেবো দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনে এসে বার্তা দিলীপ ঘোষের
আপনারাও তো রাজ্যপালের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, তখন কি তিনি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন? বিমান বসুর জবাব,”এই কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর মতো কথা বললে সুযোগ তৈরি হবে না।“ এদিন ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় অসংগতির অভিযোগ করেছে বামেরা।
পরে সাংবাদিকদের বিমান বসু বলেন, “জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির সাধারণ নিয়মের চেয়ে দ্বিগুণ, তিনগুণ, এমনকি ৫ গুণ ভোটার বাড়ছে। এত ভোটার আসছে কোথা থেকে? ৯টি বিধানসভার অসংগতি তুলে ধরেছি। মৃত ভোটার কাটা হয় না। ভোটার তালিকায় মৃত ভোটার থেকে যাচ্ছে। এটা বারবার বলা হচ্ছে। আমরা যেটা বলতে চেয়েছি, তালিকা স্বচ্ছ না হলে ভোটের ফলে অসামঞ্জস্য থাকতে পারে। ছেড়ে কথা বলব না। কিছু না হলে, রাস্তায় বসব আমরা।“
তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিমান বসুর প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে বলা হয়েছে, “আগে বলা হতো তৃণমূল বিজেপি বোঝাপড়া আছে। তাহলে এখন বিজেপির সমালোচনা করলে ওদের গাত্রদাহ হচ্ছে কেন? সাধারণ মানুষ সব বুঝে নিয়েছে।“
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584