নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষকে মারধর করার অভিযোগে দাঁতনে গ্রেপ্তার বিজেপি নেতা। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন ১নং ব্লকের আনিকলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, আনিকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের মঙ্গলবার বিকালে আনিকলা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় প্রাঙ্গণে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হচ্ছিল।
বিজেপির দাঁতন দক্ষিণ মন্ডল কমিটি কমিটির সহ-সভাপতি তথা দাঁতনের কাকরাজিৎ জুনিয়ার হাই স্কুলের শিক্ষক সুমন্ত পইড়া চেক নেওয়ার জন্য আনিকলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রাঙ্গণে যায়। তিনি ক্ষতিপূরণ বাবদ চেক নিজের হাতে নেন। চেকটি একটি খামের ভিতর ছিলো।
খামটির উপর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল। তিনি খামটি খুলে চেকটি হাতে নেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকা খামটিকে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়ায়। ফলে বিষয়টি নজরে আসার পর প্রতিবাদ জানায় দাঁতন এক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মধক্ষ প্রবীর গিরি।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়িতে গাঁজা-সহ গ্রেফতার কলেজ ছাত্র
সেই সময় বিজেপি নেতা সুমন্ত পইড়া তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত দাঁতন এক পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধক্ষ প্রবীর গিরির জামার কলার ধরে মারধর করে বলে অভিযোগ। যার ফলে আনিকলা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় প্রাঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দাঁতন থানার পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিজেপি নেতা সুমন্ত পইড়াকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পা দিয়ে মাড়ানোর ও কর্মাধক্ষ প্রবীর গিরিকে মারধর করার অভিযোগ এনে দাঁতন থানায় বিজেপি নেতা সুমন্ত পইড়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল কংগ্রেস।
যার ভিত্তিতে পুলিশ বিজেপি নেতা সুমন্ত পইড়াকে গ্রেফতার করে। বুধবার ধৃত বিজেপি নেতা সুমন্ত পইড়াকে পুলিশ দাঁতন আদালতে তোলে। দাঁতন আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আদালতে দুই পক্ষের আইন জীবীর বক্তব্য শোনার পর ধৃত সুমন্ত পইড়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে তাকে সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুনঃ জয়গাঁতে উদ্ধার ফেনসিডিল, ধৃত ৩
দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান বলেন, বিজেপি নেতা সুমন্ত পইড়া এক জন শিক্ষক। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে মানুষ এমন ব্যাবহার আশা করেন না।তিনি ওই ঘটনার নিন্দা করেন ।
তৃণমূল কংগ্রেস এর দাঁতন ১ ব্লক কমিটির সহ সভাপতি প্রতুল দাস বলেন আইলায় ক্ষতি গ্রস্ত চাষীদের রাজ্য সরকার ক্ষতি পূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে তাতে সকল ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের ক্ষতি পূরণ দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সেখানে কে কোন দলের তা দেখা হয় নি।
তাই বিজেপি নেতা হওয়া সত্ত্বেও সুমন্ত পইড়াকেও ক্ষতি পূরণ বাবদ চেক দেওয়া হয় ।কিন্তু উনি যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছেন তা অত্যন্ত নিন্দাজনক ঘটনা। আমরা ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাই।
তবে বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত কুমার দাস বলেন তাদের দলের নেতা সুমন্ত পইড়াকে পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে।যা আগামীদিনে আদালতে প্রমান হবে।তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দাঁতনে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584