মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
করোনা আবহের মাঝেই দল বদল অব্যাহত কোচবিহারে। সামনেই একুশের নির্বাচন সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। একুশের নির্বাচনের আগে নেতা কর্মীদের দল বদলে যে নির্বাচনে একটা বড়ো প্রভাব ফেলবে তা বলাই বাহুল্য।
উনিশের লোকসভা ভোটের সময় থেকে কোচবিহারে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিল রাজ্যের শাসক শিবির। সেই ফাঁক গলেই বিজেপির উত্থান। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কার্যত ছিনিয়ে নেয় গেরুয়া শিবির। বিপুল জনসমর্থনে গত লোকসভা ভোটে সবুজ একেবারে ফিকে হয়ে কার্যত গেরুয়াময় হয়ে ওঠে কোচবিহার। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই তৃণমূল প্রার্থীদের হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন বিজেপি প্রার্থী। এই অভাবনীয় ফলাফলের জেরে আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণ বেড়ে যায় বিজেপির।
হাওয়া বুঝে দলবদল করে বহু রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ভিড়ে যান গেরুয়া শিবিরে। নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ে শুরু করেন কাজ। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই মোহভঙ্গ। দলে দলে বিজেপি ত্যাগের হিড়িক, সেই সঙ্গে বিজেপির পুরোনো কর্মীরা বিজেপি ছেড়ে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে।সোমবার কোচবিহার ভবানী চৌপথী এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিজেপির জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য উৎপল কান্তি দেব ও আরেক অন্যতম নেতা অনুপম দে (নীল) তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ডিএসও ছাত্রসংগঠনের প্রতিবাদ দিবস পালন
প্রাক্তন যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ সাউ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর এদিন ফের উৎপল কান্তি দেব ও অনুপম দে -র দল ছাড়ার ঘটনা বিজেপির ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ওই দুই নেতাই বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতি রাভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। শুধু তাই নয়, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে জয় আসার পর বিজেপি ইঁটভাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোলাবাজি করছে বলেও অভিযোগ করেন ওই দুই নেতা।
অনুপম দে বলেন, “আমরা কোচবিহারে একাধিক জেলা সভাপতির সাথে কাজ করে এসেছি। কিন্তু এমন সভাপতি কখনও দেখিনি। ভেবেছিলাম দল বুঝতে পেরে সরিয়ে দেবে, কিন্তু সেটা যখন হল না, তখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম। এখন চাই উনি সারা জীবন জেলা সভাপতি পদে থেকে যান, আর বিজেপি কোচবিহার থেকে মুছে যাক।”
আরও পড়ুনঃ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেটের সামনে বিক্ষোভ পর্যটন ব্যবসায়ীদের
বিজেপির জেলা সভাপতি মালতি রাভা বলেন, “বিজেপিতে সারা জীবন ধরে কাউকে পদে বসিয়ে রাখা হয় না। আজ পদ আছে কাল নাও থাকতে পারে। কিন্তু কেউ পদে থাকলে যদি দল ছেড়ে অন্য দলে কেউ যোগদান করে তাহলে স্পষ্ট যে তাদের মধ্যে আদর্শ বলতে কিছু নেই। যারা গিয়েছেন তাদের জন্য বিজেপির কোন ক্ষতি হবে না। আর ভোট আসতে দিন, দেখবেন সাধারণ মানুষ আমাদের সাথেই আছেন।”
এদিন কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পার্থ প্রতিম রায় চ্যালেঞ্জ করে বলেন, “বিজেপি নেতা সায়ন্তন বোস কথায় কথায় জ্বালিয়ে দেব পুড়িয়ে দেব বলে বেড়ান, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি সায়ন্তন বোস যখন যখন কোচবিহারে আসবেন তখন তখন বিজেপির একজন করে নেতৃত্বকে আমি তৃণমূলে জয়েন্ট করাবো।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584