মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
সিতাইয়ে বিজেপি নেতা প্রশান্ত বর্মণ গ্রেপ্তার করল পুলিশ।গতকাল তাকে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা গেছে,প্রশান্ত বর্মণ সিতাই এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় গণ্ডগোলের ঘটনায় সাথে যুক্ত থাকায় তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে সেই মামলার জেরে গতকাল রাত ২ টা নাগাত তাকে পুলিশ বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে থানায় যায়।পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে অভিযোগ।
ওই ঘটনার জেরে আজ সকাল থেকে সিতাই থানার প্রশান্ত বর্মণের অনুগামীরা থানায় বিক্ষোভ দেখান।সেই সময় পুলিশ প্রশান্ত বর্মণকে যখন থানা থেকে দিনহাটা আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের করা হয়।সেই সময় তার অনুগামীরা প্রশান্ত বর্মণকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।তখন পুলিশ বাদ্য হয়ে লাঠি চার্জ করে বলে জানা গেছে।
অপরদিকের প্রশান্ত বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজন থানার কাছাকাছি এলাকায় আসলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে হঠিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।এরপর প্রশান্তকে দিনহাটা আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লোকসভা ভোটের সময়কাল থেকে এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেভাবে লড়াই করে এসেছেন আদি বিজেপি কর্মী প্রশান্ত বর্মণ ও সদ্য বিজেপিতে আসা নুর মহম্মদ প্রামাণিকের তা প্রশংসার যোগ্য ছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটের পর থেকেই প্রশান্ত ও নুর মহম্মদ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলতে থাকে এলাকা দখলের লড়াই।এরই পরিনতিতে এখন পর্যন্ত সিতাই এলাকায় বেশ কয়েকটি গণ্ডগোল হয়।তাতে সাধারন মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।তাই আমরা এলাকাবাসী হিসেবে চাইব আমাদের কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের কাছে বিশেষ আবেদন সিতাই এলাকায় যাতে আর কোন গণ্ডগোল না হয় সেইদিকে নজর দিক।
ধৃত ওই বিজেপি কর্মী প্রশান্ত বর্মণের স্ত্রী সোমা সিং বলেন, “আমার স্বামী নির্দোষ। তাকে নুর মহম্মদ প্রামাণিকের লোকজন ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। গতকাল রাতে তার নির্দেশে পুলিশে এসে ঘুম থেকে ডেকে থানায় নিয়ে যায় আমার স্বামীকে।তারপর সেখানে আটক করে। তাকে পরিকল্পনা করে পুলিশ ও নুর মহম্মদ প্রামানিক আমার স্বামীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।আমি জেলা সভানেত্রীর কাছে বিষয়টি জানাব।এর প্রকৃত বিচার চাই।
এ বিষয়ে প্রশান্ত বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা নুর মহম্মদ প্রামাণিক বলেন,“ওই ঘটনার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।তবে আজ সকালে জানতে পারি যে প্রশান্তকে গ্রেপ্তার করেছে সিতাই থানার পুলিশ।”
এবিষয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির সভানেত্রী মালতি রাভা বলেন,“প্রশান্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছিলেন ঠিকই।তবে তার সাংগঠনিক কোন পদ নেই।আমি শুনতে পেরেছি পুরনো কোন একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।তবে প্রশান্তর এই মুহূর্তের অবস্থান নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।আমরা এলাকায় অশান্তি চাই না।এবিষয়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করুক।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে প্রশান্তকে পুরনো মামলার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়।আজ তাকে দিনহাটা মহকুমা আদালত তোলা হয়।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত পারুই,মল্লারপুর
এদিন আদালতে তোলার পর অভিযুক্ত প্রশান্ত বর্মণের আইনজীবী অভিজিৎ বর্মণ ও মুনমুন সরকার বলেন, “গত ১৯ জুন তারিখে প্রশান্ত বর্মণ সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। তার পরিপেক্ষিতে গতকাল রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিন তাকে দিনহাটা আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের জেল হেফাজতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় আগামী ৫ জুলাই।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584