মোহনা বিশ্বাস, বিনোদন ডেস্কঃ
‘মানো ইয়া না মানো’, ‘রোগ’, ‘হাসিল’ করেই চলে গেলেন বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। মৃত্যুকালে ৫৪ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। দীর্ঘদিন যাবৎ নিউরো এন্ডোক্রাইন ক্যানসারে ভুগছিলেন ইরফান। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া গোটা চলচ্চিত্র জগতে। ট্যুইট করে শোকপ্রকাশ করেছেন অমিতাভ বচ্চন।
১৯৬৬ সালের ৭ জানুয়ারি জয়পুরে জন্মগ্রহণ করেন বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি একধিক হলিউড সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলি হল ‘সালাম বোম্বে’, ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’, ‘বিল্লু’, ‘দ্য লাঞ্চ বক্স’, ‘পিকু’, ‘গুন্ডে’, ‘মকবুল’, ‘সাত খুন মাফ’, ‘লাইফ অফ পাই’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’, ‘দ্য ওয়ারিয়র’, ‘ইনফার্নো’, ‘দ্য আমেজিং স্পাইডার ম্যান’, ‘দ্য নেমসেক’ ও ‘হিন্দি মিডিয়াম’।
‘পান সিং তোমার’ সিনেমাটিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পান ইরফান খান। ২০১১সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারও পান তিনি। এছাড়াও গোটা অভিনয় জীবনে ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস, স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস সহ প্রায় ৩২টি পুরস্কার পেয়েছেন ইরফান। এখানেই থেমে থাকেনি তাঁর কীর্তি। ১৯৮৫ সাল থেকেই বিভিন্ন হিন্দি টেলিভিশন শো-তেও দেখা গিয়েছে ইরফান খানকে।
দর্শকের মনের মণিকোঠায় আজও বিরাজমান টেলিভিশন শো ‘মানো ইয়া না মানো’। মাত্র ১৪ বছর আগের কথা। এই জনপ্রিয় টিভি শো-টি হোস্ট করতেন ইরফান। ২০১৬ সালে জনপ্রিয় টিভি শো ‘টোকিও ট্রায়াল’-এ শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ইরফান এই বছরের শুরুতে ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ছবির প্রমোশন থেকেও নিজেকে সরিয়ে নেন৷ করোনা ভাইরাসের জন্য ছবিটির সিনেমাহলে মুক্তিতেও প্রভাব পড়ে৷ পরে প্রিমিয়ার হয় অনলাইনে। এটিই ইরফান খানের শেষ ছবি।
শুধুমাত্র হিন্দি এবং হলিউড সিনেমাতেই নয়। বাংলা সিনেমাতেও তাঁর অনবদ্য অভিনয় সাড়া ফেলে দিয়েছিল বাংলা চলচ্চিত্র জগতেও। ২০১৭ সালে মুস্তফা সারওয়ার ফারুক্কি পরিচালিত ‘ডুব’-এ মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন ইরফান। ছবিতে বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পার্ণো মিত্রকে নিতুর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। জাভেদ হাসান-এর চরিত্রটি দর্শকের মনে দাগ কেটে দিয়েছে। প্রায় ৪০ দিন ধরে বাংলাদেশে ইরফানের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করেছেন পার্ণো। আজ সেই প্রতিভাবান অভিনেতা ইরফানের খানের মৃত্যুতে শোকাহত সমগ্র চলচ্চিত্র জগত। ইরফান খানের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর শোকগ্রস্ত হয়ে বাক্য হারিয়েছেন অভিনেত্রী পার্ণো।
লাঞ্চ বক্সে ভালোবাসার গল্পটা চাপাই পড়ে রইল আজ। কিছু কিছু অভিনেতার অভিনয় দর্শককে ভাবায়। মনকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায় তাঁদের অভিনয়। এমনই একজন শিল্পী ছিলেন ইরফান খান। তাঁর মৃত্যুতে বিনোদন জগতের বড় ক্ষতি হল। আর তার সঙ্গে চলচ্চিত্র জগত হারালো একজন অসীম দক্ষতা সম্পন্ন অভিনেতাকে। তাঁর শূণ্য স্থান পূরণ হবেনা কোনওদিন। এরপরও তিনি একইভাবে বেঁচে থাকবেন সমগ্র বিশ্ববাসীর মনে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584