খননকার্যেই শেষ,অবহেলার অন্ধকারে বৌদ্ধ স্তূপ

0
171

সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে উৎখনন করেছিল ইতিহাসপ্রসিদ্ধ ভরতপুর গ্রামের একটি বিশাল অংশ।এলাকাটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রাচীন স্মারক তথা প্রত্নতত্ত্ব স্থল হিসাবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য,এই স্থানটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে।ইতিহাস গবেষক শিক্ষক শুভজিৎ কর চৌধুরী ও রোহিত মাইতি বলেন, এই স্থানে খননকার্য করা হয়েছিল।তাতে দেখা গেছে স্থানটি তাম্রপ্রস্তর যুগের দ্বাদশ ত্রয়োদশ শতকের অধিবসতির সাক্ষ্য দিচ্ছে।বাংলায় তাম্রপ্রস্তর যুগে অর্থাৎ আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে ধাতুর ব্যবহার দেখা যায়। লোহার ব্যবহার অবশ্য ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ এর দিকে শুরু হয়ে যায়। ভরতপুর থেকে মিলেছে ব্রোঞ্জের একাধিক প্রত্নবস্তু।রোহিত মাইতি বলেন,মৃৎপাত্র শিল্প আনুমানিক ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব থেকে প্রচলন দেখা যায়।সেরকম কিছু নমুনাও পাওয়া গেছে।অর্থাৎ এই অঞ্চল থেকে নব্যপ্রস্তর, তাম্রপ্রস্তর ও লৌহযুগের সংস্কৃতির সন্ধান মিলছে। শুভজিত কর চৌধুরী বলেন,আদি মধ্যযুগের একটি বৌদ্ধ স্তূপের সন্ধান মিলেছে।এই স্তূপ কুষান রীতিতে গড়া। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, স্তূপগুলি উচুঁ হবে এবং ভিতরে বুদ্ধের মূর্তি সহ একাধিক দেবদেবী থাকবেন।এই দেবদেবী দের মধ্যে বুদ্ধ প্রধান হলেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বৌদ্ধ ধর্মে তন্ত্র শাখার কিছু মূর্তিও। তবে ভরতপুরের ক্ষেত্রে দেখা যায়,নির্মিত স্তূপের মাথাটি।

অবহেলায় রয়েছে বৌদ্ধ স্তূপ। নিজস্ব চিত্র

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,ঐতিহাসিক এই স্থানটি নষ্ট হচ্ছে অবহেলার কারনে। পুরাতত্ত্ব বিভাগ এলাকাটিকে সংরক্ষিত বলে ঘোষণা করলেও তাতে অবাধে প্রবেশ করে গবাদি পশু। স্থানটি গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বেড়াগুলি প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে।শুধু তাই নয় সংরক্ষিত এই এলাকায় রাতবিরেতে চলছে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ। স্তূপটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব না বুঝে অনেকেই বসবার জায়গা হিসাবে ব্যবহার করে।প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,১৯৭১ ও ১৯৭৪ সালে খননকার্য হয়েছিল তারপর আর হয়নি।এলাকাবাসীর দাবি,পুনর্বার খননকার্য করে উদ্ধার করা হোক ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী, যা ঐতিহাসিক অনুসন্ধানকে সমৃদ্ধ করবে এবং রনডিহার সাথে যুক্ত করে ভরতপুর ও সেলিমপুর বর্তমান সিলামপুরকে গড়ে তোলা হোক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। গলসী ১ বিডিও বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

আরও পড়ুনঃ কর্ণসুবর্ণে টারেন্টুলা

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here