বুমেরাং – নীল অভনী

0
119

                     নীল অভনী

ঘেমে নেয়ে একশা অরিন্দম।ঘরে ফিরেই আলমারি খুলে ফাইল বের করে কাগজপত্র নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দিয়েছে।সুপর্ণা বুঝতে পারে কিছু একটা ঘটেছে?
-কি হয়েছে?
-শোন সময় নেই দুর্নীতি দমন শাখা রাহুলকে তুলে নিয়ে গেছে…ইমিডিয়েট আমাদের ঘরের লিকুুুইড ক্যাশ,তোমার দামী গয়নাগাটি যা আছে সব তোমার দিদির বাড়িতে পাঠিয়ে দাও।আমি ক্যাশের গতি করছি।

-মানে?
সুপর্ণা ঘটনার অভিঘাত বুঝতে চেষ্টা করলো কিন্তু অরিন্দমের এখন বোঝানোর অবকাশ নেই।বিপদ যেন সামনেই দাঁড়িয়ে।টাকার বান্ডিলগুলি গুনতে গুনতে বলল,
-সব মানে পরে বুঝবে।আপাতত গয়নাগাঁটি গুলি প্যাকিং করো।সময় নেই।কখন কার বাড়ি হানা দেয় কে জানে?
– সুপর্ণা আলমারির লকার খুলে একটি কাঠের বাক্সে গয়না গুলো তস্ত্র হাতে সাজাতে সাজাতে বলতে লাগলো
-দিদির অবস্থা এখন ভালো না এত গয়না ওর বাড়িতে রাখা ঠিক হবে? আর গয়না রাখতে গেলে কি জবাব দেবো?
-আরে বলে দেবে দিন কতক বেড়াতে যাচ্ছো।ফাঁকা ফ্ল্যাটে গয়নাগাটি রেখে যাওয়া ঠিক হবে না
টাকা গুনতে গুনতে বলে উঠল অরিন্দম।
-কি যে ব্যাপার বাপু বুঝিও না
সুপর্ণা মন দিল প্যাকিং এ।অরিন্দম সুপর্ণার দিকে ফিরে বলল -আচ্ছা একলাখ টাকা ত্রিশটা বান্ডিল ছিল না?
-হ্যাঁ তো
-দুটো কম কেন?
-আমি কি করে বলবো।তুমিই রাখো বের করো?কোথাই উড়িয়েছো মনে করো….
এমনিতেই টেনশন তার উপর সুর্পণার চিবিয়ে চিবিয়ে খোঁচা মারা কথায় অরিন্দমের মেজাজ গেছে চড়ে।চিৎকার করে ওঠে
-ঢ্যামনামি করছো? বাড়িতে বসে বসে ঢলানি গিরি করা ছাড়া তো কোন কাজ নেই…কোথায় গয়নাগাটি কিনেছো মনে করো
সুর্পণা ততধিক চিৎকার করে ওঠে
– আমি বাড়ি বসে ঢলানি গিরি করি?তুমি আজ ট্যুর পামেলার সাথে কাল বিদিপ্তার সাথে….কোন প্রিয়াকে খুশি করেছো তুমি ভেবে দেখো
-শোন রক্ত ঘাম করে টাকাটা ইনকাম করতে হয় আমাকে তাই খরচটাও মেপে করি।তুমি তো  আর জানো না একটা টাকা ইনকাম করতে কতটা পরিশ্রম লাগে
-হ্যাঁ তাই তো….
থমকে যায় সুর্পণা ঘরের দরজার কাছে গুবলু দাঁড়িয়ে।পুত্রের দিকে তাকিয়ে ঝাঁঝিয়ে ওঠে সে
– এখানে কি করছিস?পড় গে যা
-এতো চিৎকার চ্যাঁচামেচি করলে পড়বো কি করে?

অরিন্দম টাকার বান্ডিল গুলো পুণরায় গুনতে গুনতে সন্তানের সামনে সৃষ্টি হওয়া অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে বলে উঠল

– তাড়াতাড়ি মনে করো সু টাকাটা কি হলো।অতোগুলো টাকা
গুবলু জিজ্ঞেস করে উঠে

-কিসের টাকা বাবা?
-এই আলমারিতে ছিলরে খুঁজে পাচ্ছি না
-ওঃ তোমাদের জানানো হয়নি টাকাটা আমি নিয়েছি
সুপর্ণা বিস্মিত হয়ে তাকায় গুবলুর দিকে
-অতো গুলো টাকা তুই কি করলি?
– স্যার বললো পরীক্ষার আগে কোশ্চেন পেপার পাওয়া যাবে যদি টাকাটা দেওয়া যায়।তোমরা ছিলে না কেউ আমি বের করে নিয়ে গিয়ে দিয়ে দিলাম…
অরিন্দম হাঁ হয়ে দেখছে ছেলেকে।ঝাঁঝিয়ে উঠে সুপর্ণা বললো তাহলে সারা বছর পড়ছিস কি করতে?
-পড়ে ফার্স্ট হওয়ার গ্যারান্টি নেই কিন্তু কোশ্চেন পেপার পেলে ফার্স্ট হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে.. তোমরাই তো সারাদিন বলো ফার্স্ট হতে হবে।তাই….আর এ নিয়ে বেশী চিৎকার চেঁচামেচি করো না তো টাকাগুলোতো বাবার উপরি ইনকাম…
বাকরুদ্ধ অরিন্দম সুপর্ণার দিকে তাকায় সুপর্ণা তাকায় গুবলুর দিকে….

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here