সংক্রমণ ঠেকাতে হাট বন্ধের ডাক ব্যবসায়ীদের

0
30

প্রীতম সরকার, উত্তর দিনাজপুরঃ

বিশ্বে এই মুহূর্তে সব থেকে বড় সংকটের নাম নোভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯। আমাদের দেশেও এই ভাইরাস দ্রুত গতিতে বাড়ছে। ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর মতে, আমাদের দেশে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ এখনও পর্যন্ত স্টেজ টু-এ আটকে আছে।

kamla bari hat | newsfront.co
ক্রেতা কম কমলাবাড়ি হাটে।নিজস্ব চিত্র

এখনই সতর্ক না হলে আগামী সপ্তাহে তৃতীয় পর্যায়ে, অর্থাৎ স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছে যাওয়ার যথেষ্ট আশংকা আছে। আর এই কারণেই সবাইকে বাড়ি থেকে না বেরনোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস মানুষের শরীর ছাড়া বাঁচতে পারে না। এই মুহূর্তে আক্রান্ত এবং সন্দেহজনক মানুষজন-সহ কেউ কারও সংস্পর্শে না এলে, এই ভাইরাস আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না।

meeting | newsfront.co
হাট মালিকদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

ভয়ানক মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন, অর্থাৎ বিদেশ থেকে অসুখ নিয়ে দেশে ফিরেছেন এমন কোনও মানুষের সংস্পর্শ ছাড়া অথবা কোনও আক্রান্ত মানুষের কাছাকাছি না এসেও যদি কারুর শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় তাকে বলে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন।

market | newsfront.co
সামগ্রী এলেও হাট ফাঁকা।নিজস্ব চিত্র

এই পর্যায়ে সংক্রমিতদের শরীরে কোথা থেকে এই ভাইরাস এসেছে তা শনাক্ত করা যায় না। এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে আক্রান্তের সংস্পর্শ থেকেই ড্রপলেট ইনফেকশনের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ করোনার জেরে মাস্ক ও স্যানিটাইজার নিয়ে রীতিমত কালোবাজারি, হতাশায় বাসিন্দারা

অর্থাৎ, আমরা স্টেজ টু-তে রয়েছি। বিদেশে যেখানে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, সেই দেশ থেকে লোকজনের আসা বন্ধ করা হয়েছে। তবে এখনও এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না যে, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সম্প্রদায়ের সংক্রমণ হবে না।

এ ছাড়া আক্রান্তদের আইসোলেশনে রেখে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করার সাথে সাথে গৃহবন্দি থাকতে হবে। সেই সঙ্গে হাত ধোয়া এবং মুখে চাপা দিয়ে হাঁচি, কাশি ও কোনওরকম সন্দেহ হলে গৃহবন্দি থাকলে ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত অনেকটাই কমানো যাবে বলে আশা করা যায়।

তবে এর থেকেও মারাত্মক হল স্টেজ ফোর। যখন কোভিড-১৯ ভাইরাস কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই মহামারীর আকার ধারণ করে। চিনে ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে। এরই জেরে সতর্ক থাকতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকের সমস্থ হাট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবার রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি হাটে লোক সমাগম এতটাই কমে গিয়েছে, যে, সেই হাট বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করছেন ব্যবসায়ীরা।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্ক প্রশাসন। আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ইটাহার বিধানসভা এলাকার বড় হাটগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করল ব্লক প্রশাসন।
ফলে চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত আর বসবে না চেকপোস্ট হাট, মধুবন হাট, পতিরাজপুর হাট, ইটাহার হাট ও দুর্গাপুর হাট।

ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির সভাকক্ষে ইটাহারের বিডিও আবুল আলা মাবুদ আনসার এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদের উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠকে এদিন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হাট কমিটির প্রতিনিধিদের পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা নজিবর রহমান, বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্যরা।

স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শে তাঁরা হাটগুলিকে বন্ধ রাখার বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে ইটাহারের বিডিও আবুল আলা মাবুদ আনসার বলেন, “কমিউনিটির মধ্যে কোনওভাবে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তার জন্যই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বড় পাঁচটি হাটকে স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা বলা হল”।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে বড় জমায়েত বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসন নির্দেশিকা জারি করলেও শুক্রবার খোলা ছিল কমলাবাড়ি হাট। প্রায় ১০০ বছর ধরে হেমতাবাদ লাগোয়া রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি এলাকায় হাট বসে। হাটে কেনা বেচা যথারীতি হয়েছে।

তবে হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতারা সংখ্যায় ছিল অনেক কম। সাধারন দিনে এই হাটে প্রায় ২০ হাজার লোকের সমাগম হয়। এদিন সেই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৭ হাজার। করোনা কারনে এমন বলে মনে করছেন হাটের ক্রেতা বিক্রেতারা।

এই বিষয়ে হাট মালিক সৈয়দ আবুল কাশেম জানিয়েছেন, “হাট বন্ধ রাখার কোন নির্দেশিকা তিনি পাননি। অন্যদিনের চাইতে হাটের জনসমাগম আজ অনেক কম ছিল। করোনার কারনেই হাটে কম লোক সমাগম হয়েছে”। হাটের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, “সকাল থেকে হাট বসেছে, হয়েছে কেনাকাটাও। সাধারন দিনে এই হাটে প্রায় ২০ হাজার লোকের সমাগম হয়। এদিন সেই সংখ্যাটা ছিল অনেক কম। লোক সমাগম কম থাকায় কেনাবেচা কম হয়েছে। সে কারনে আগামীতে এই হাটও বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন হাট ব্যবসায়ীরা”।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here